শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫

এমন কোন ব্যক্তির তাফসীর শোনা যাবে? নোমান আলী খান

এমন কোন ব্যক্তির তাফসীর শোনা যাবে?
_________________________
আমি সাধারণত আমাদের পোস্টের কমেন্টে স্বাধীন মতামত প্রদান করা একসেপ্ট করিনা, কারণ অনেকের বিভ্রান্তিকর বা ভুল কথার দ্বারা অন্যরা ফিতনায় পড়তে পারেন। এছাড়া অনেক তর্কবাজ লোক যারা নিজের মনগড়া যুক্তি দিয়ে তর্ক জুড়ে দিতে চান, তাদেরকে কথা বলার সুযোগ দিয়ে আমাদের সময় নষ্ট করতে যেন না পারে, সেইদিকেও খেয়াল রাখতে হয়। তবে আজকে আমি এই একটিমাত্র পোস্টে আপনাদের স্বাধীন মতামত দেওয়ার জন্যে অনুরোধ করছি। আপনারা পোস্ট ভালো করে পড়ে বিষয়বস্তু বোঝার চেষ্টা করুন, বিষয়বস্তু বুঝে আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিন। কেউ কোন বাজে মন্তব্য করবেন না। আর বিষয়বস্তু স্পষ্ট না হলে, বা পোস্টটি বুঝতে না পারলে, প্রশ্ন করবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে উপকারী ইলম দান করুন, আমিন। 
_________________________
প্রখ্যাত তাবেয়ী বিদ্বান, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
নিশ্চয়ই এই ইলম, এটাই হচ্ছে তোমার দ্বীন। সুতরাং, তোমরা কার নিকট থেকে ইলম হাসিল করছো, তার সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিও।
[সহীহ মুসলিম, মুকাদ্দিমা অধ্যায়]
_________________________
বর্তমান যুগের মুসলমানদের মাঝে আক্বীদাহগত বিভ্রান্তি এবং ভ্রষ্ট আকীদাহ নিয়ে মুসলমানদের বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হওয়ার জন্যে সবচাইতে বড় একটা কারণ হচ্ছেঃ মানুষ কার কাছ থেকে দ্বীন শিক্ষা করছে বা কোন উৎস থেকে দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করছে, সে ব্যপারে যাচাই-বাছাই করছেনা। যার যাকে ভালো লাগে, যার কথা সুন্দর, যাকে দেখতে ভালো লাগে, যার লেখা পড়তে ভালো লাগে ব্যস, মানুষ তাকেই বড় আলেম মনে করছে আর অন্ধ ভক্তিতে তাদেরকে অনুসরণ করছে। এইভাবে মানুষ ক্বুরান ও সুন্নাহর জ্ঞানে গুণান্বিত প্রকৃত ওলামাদেরকে অবহেলা করে একশ্রেণীর ইসলামিক হিরো সেলেব্রিটি বা মিডিয়া ব্যক্তিত্বদেরকে নিজেদের রাহবার বা পথপ্রদর্শক নিচ্ছে, যারা মায়াবী কথার দ্বারা পাঠকদের মুগ্ধ করে তাদের আকীদাহ এবং আমল নষ্ট করছে। এমন বক্তা, যারা শ্রোতাদেরকে সম্মোহিত করে তাদের ব্যপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সতর্ক করে বলেছেন, কিছু চমকপ্রদ বক্তৃতা যাদুর মতোই সম্মোহনকারী। (অর্থাৎ, এমন বক্তাদের থেকে তোমরা সতর্ক থাকো)।
[সহীহ আল-বুখারী, কিতাবুল তিব্ব]
_________________________
যাই হোক, এমনই একজন সেলেব্রিটি ইসলামিক বক্তা, যাকে মানুষ ক্বুরান এক্সপার্ট হিসেবে মাথায় তুলে রেখেছেন, তার কিছু বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এবার আপনারাই মন্তব্য করুন, কথিত এই ক্বুরান এক্সপার্ট ক্বুরানের তাফসীর করার জন্য কতটুকু যোগ্য?
- যার হাদীস শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান নেই। (অথচ হাদীসের সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ছাড়া ক্বুরানের অর্থ বুঝা বা তাফসীর করা অসম্ভব, অসম্ভব, একেবারেই অসম্ভব)।
- আক্বীদাহ কি, সঠিক আক্বীদাহ কি ও ভ্রান্ত আক্বীদাহ কি, সে সম্পর্কে যার সঠিক ধারণা নেই। (অথচ, কোন একজন আলেম বা তালিবুল ইলম তো পরের কথা, একজন সাধারণ একজন মুসলমানের জন্যেও নাজাতপ্রাপ্ত দল বা আহলে সুন্নত ওয়াল জামআত এর আক্বিদাহ সম্পর্কে জানা তার উপর সবচাইতে বড় ফরয। এমনকি নামায-রোযার চাইতেও বড় ফরয হচ্ছে সঠিক আক্বিদাহ শিক্ষা করা)।
- যিনি বিদাতী ব্যক্তির ভ্রষ্টতাপূর্ণ তাফসীর পড়েন, এবং অন্যদেরকেও পড়তে উৎসাহিত করেন।
- যিনি স্পষ্ট পথভ্রষ্ট বিদাতী ব্যক্তি, সূফীদের উচ্চ প্রশংসা করেন, তাদেরকে নিজের শিক্ষক এবং পথপ্রদর্শক হিসেবে বেছে নেন, এবং তাদের ভ্রষ্টতাপূর্ণ কথাগুলো তোতাপাখির মতো নকল করেন।
- টাখনুর নিচে কাপড় পড়তে অভ্যস্ত। ( টাখনুর নিচে কাপড় করা কবীরাহ গুনাহ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন শ্রেণীর মানুষের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করবেন না, এমনকি তাদের প্রতি তাকাবেন না। তারা হচ্ছে,
ক. টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী [সহীহ মুসলিম]
যে ব্যক্তি প্রকাশ্য কবীরাহ গুনাহ করতে অভ্যস্ত সে একজন ফাসিক্ব)।
- যে ব্যক্তি কথার সময় প্রায়শই হাহা হিহি করে বা অপ্রয়োজনীয় হাসি-ঠাট্টা করে মূল্যবান সময় নষ্ট করতে অভ্যস্ত।
- লুতুপুতু কথা এবং লুলামি মার্কা আচরণ দিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করতে ব্যস্ত যিনি।
_________________________
এমন কোন ব্যক্তির তাফসীর শোনা যাবে বা তার কাছ থেক ইলম নেওয়া যাবে?