সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

দ্বীনি জ্ঞানের পরীক্ষা (পর্ব-১)

দ্বীনি জ্ঞানের পরীক্ষা (পর্ব-১)
পূর্ণ নম্বরঃ ৩০, সময় ৩০ মিনিট। আপনারা প্রথমে উত্তর না দেখে নিজেরা একটা খাতায় উত্তর লিখার চেষ্টা করুন। এরপরে প্রদত্ত উত্তরের সাথে মিলিয়ে আপনাদের প্রাপ্ত নম্বর বের করুন।
এক কথায় উত্তর দিনঃ
প্রতিটি প্রশ্নের জন্যে এক নম্বর করে, মোট ১৫*১=১৫ নম্বর 
(১) কুআনের কোন সুরাটিকে উম্মুল কিতাব বলা হয়?
(২) হাদীসে কুদসী কি?
(৩) কোন আয়াতে সুদকে হারাম করা হয়েছে?
(৪) হুদাইবিয়ার সন্ধি কত হিজরীতে সংঘটিত হয়েছিলো?
(৫) মুসলিমদের প্রথম লিখিত সংবিধান কোনটি?
(৬) কোন সুরাতে বিসমিল্লাহ-হির রাহমানির রাহীম দুইবার রয়েছে?
(৭) ইয়াসরিব কি?
(৮) মুজাদ্দিদ কে? ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মুজাদ্দিদ কাকে বলা হয়?
(৯) কাকে যিন-নুরাইন বলা হয়?
(১০) বনী ঈসরাইলীদের প্রতি আল্লাহর প্রেরিত খাবারের নাম কি ছিলো?
(১১) তাজবীদ কি?
(১২) রুহুল্লাহ বলা হয় কোন নবীকে?
(১৩) সিহাহ সিত্তাহ এবং সহীহাইন কি?
(১৪) রিদ্দা বা মুর্তাদদের যুদ্ধ কোন খলিফার সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো?
(১৫) কুনে মোট কতটি সুরা এবং কতগুলো আয়াত রয়েছে?
রচনামূলক অংশঃ
(১৬) আল্লাহর গুণবাচক নাম সমূহের অর্থ কি? ৫*০.৫ = ২.৫
(ক) আর-রাহীম, (খ) আল-ওয়াদুদ, (গ), (৪) আস-সামী (৫) আল-বাসীর
নিচের প্রশ্নগুলোর উপর সংক্ষিপ্ত নোট লিখুনঃ প্রতিটি প্রশ্নের জন্যে ২.৫ করে, মোট ৫*২.৫= ১২.৫
(১৭) তায়াম্মুম কখন, কিভাবে করতে হয়?
(১৮) ঈমানে মুফাসসাল এর বিষয়গুলো কি কি?
(১৯) ঈমান ও ইসলাম বলতে কি বোঝায় এবং তাদের পার্থক্য কি?
(২০) শরিয়তের মূল উৎস কয়টি ও কি কি?
(২১) ফিরকায়ে নাজিয়াহ কি? ফিরকায়ে নাজিয়াহ এর নাম কি?
____________________________
প্রশ্নগুলোর উত্তরঃ
() সুরা ফাতিহামর্যাদা এবং গুরুত্বের দিক থেকে সবচাইতে বড় ও মহান সুরা হচ্ছে সুরা ফাতিহা। একারণে এই সুরাটিকে উম্মুল কিতাব বলা হয় 
() আল্লাহর যেই ওয়াহী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিজ জবানে হাদীস হিসেবে বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোকে হাদীসে ক্বুদসী বলা হয়হাদীসে ক্বুদসীর কথাগুলো আল্লাহর, কিন্তু তা কুরআনের অংশ নয়।
() কয়েকটি আয়াতে সুদকে হারাম করা হয়েছে, যার মাঝে সুরা বাক্বারার ২৭৮ নাম্বার আয়াত উল্লেখযোগ্য
() ষষ্ঠ হিজরীতে
() মদীনা সনদ
() সুরা নমল-এ। এই সুরার প্রথমে ও মাঝখানে বিসমিল্লাহ-হির রাহমানির রাহীম দুইবার রয়েছে।  
() মদীনাতুর-রাসুল বা সংক্ষেপে মদীনাহ শহরের পূর্ববর্তী নাম ছিলো ইয়াসরিব 
() মুজাদ্দিদ অর্থ সংস্কারক বা পুনঃপ্রবর্তনকারী যখন সমাজে ইসলামের বিধি-বিধান ব্যপকভাবে লংঘন করা হয় তখন কোন খলিফা, আমীর বা আলেম রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মাধ্যমে কিংবা দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যমে ব্যপকভাবে সমাজ সংস্কার ও লোকদের ইসলাহ বা সংশোধনের কাজ করলে তাকে মুজাদ্দিদ বলা ইসলামের ইতিহাসে তাবেয়ীদের যুগে খলিফা উমার ইবনে আব্দুল আজীজ রাহিমাহুল্লাকে প্রথম মুজাদ্দিদ ধরা হয় (খুলাফায়ে রাশেদীনের উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু নয়)
() খুলাফায়ে রাশেদীনে তৃতীয় খলিফাহ, উসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুকেরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দুই কন্যাকে উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুসাথে বিয়ে দিয়েছিলেন, একারণে তাঁকে যিন-নুরাইন বলা হত, অর্থ দুইটি নূর বা আলোর অধিকারী 
(১০) মান্না ও সালওয়া
(১১) কুরআন শুদ্ধ করে পাঠ করার পদ্ধতিকে তাজবীদ বলা হয়
(১২) ঈসা আলাইহিস সালামকে
(১৩) সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, আবু দাদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ এই ছয়টি হাদীসের কিতাবকে একত্রে সিহাহ সিত্তাহ বলা হয়সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম এই দুইটি সহীহ হাদীসের গ্রন্থকে একত্রে সহীহাইন বলা হয় 
(১৪) খুলাফায়ের রাশেদীনের প্রথম খলিফাহ আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতের সময়রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর কিছু মানুষ ঈমান, নামায, রোযাকে মেনে নেয়, কিন্তু তারা যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিলো। যাকাত দিতে অস্বীকার করার কারণে আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু তাদেরকে মুর্তাদ ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন একে রিদ্দার যুদ্ধ বলা হয় 
(১৫) ১১৪-টি সুরা, ৬২৩৬-টি আয়াত। যারা বিশ্বাস করবেন না, তারা নিজেরা বাসায় কুরআনুল কারীম খুলে সবগুলো সুরার আয়াত সংখ্যা যোগ করে দেখুন।  
(১৬) (ক) আর-রাহীম = অসীম দয়ালু, (খ) আল-ওয়াদুদ = যিনি স্নেহ বা ভালোবাসাময়, (গ) আল-হাইয়্যু = চিরঞ্জীব, (ঘ) আস-সামী = যিনি সবকিছু শুনেন/সর্বশ্রোতা, (ঙ) আল-বাসীর = যিনি সবকিছু দেখেন/সর্বদ্রষ্টা 
(১৭) তায়ম্মুম কখন করতে হয়ঃ পানি না পাওয়া গেলে কিংবা, পানি ব্যবহার করলে অসুস্থতা বৃদ্ধি পাবে, এমন আশংকা থাকলে পানি দিয়ে ওযু বা গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম বা মাটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যায়
তায়ম্মুম কিভাবে করতে হয়ঃ (ক) তায়ামুম বা মাটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জনের জন্য নিয়ত করতে হবে (খ) প্রথমে দুই হাত মাটিতে স্পর্শ করতে হবে, ফুঁ দিয়ে ধূলা-বালি ফেলে দিতে হবে (গ) দুই হাত দ্বারা মুখমন্ডল মাসাহ করতে হবে (ঘ) এক হাত দিয়ে অন্য হাতের কবজি পর্যন্ত মাসাহ করতে হবে, প্রথমে ডান হাত পরে বাম হাত 
(১৮) আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস, নবী-রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস, তাক্বদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস, মৃত্যুর পরের জীবন বা আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস, কিয়ামত বা বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস 
(১৯) এটার বিস্তারিত পরে লিখবো ইন শা আল্লাহ
(২০) সঠিক হচ্ছে শরিয়তের মূল উৎস দুইটিঃ কুন ও হাদীস তবে আমাদের দেশে পড়ানো হয় চারটি কু, হাদীস, ইজমা ও কিয়াস। প্রকৃতপক্ষে ইজমা ও কিয়াস শরীয়তের মূল উৎস হয়, কারণ ইজমা ও কিয়াসের উৎস হচ্ছে কুন ও সুন্নাহ এছাড়া ইজমা ও কিয়াস এদুটি কুন ও সুন্নাহর উপর নির্ভরশীল 

(২১) মুসলিমদের মাঝে মোট ৭৩-টি দলের মাঝে একটিমাত্র নাজাতপ্রাপ্ত দলকে ফিরকায়ে নাজিয়া বা মুক্তিপ্রাপ্ত দল বলা হয় প্রাচীনকাল থেকে মুসলিমদের মাঝে নাজাতপ্রাপ্ত দলটি আহলুস-সুন্নাহ, কখনোবা আহলুল-হাদীস নামে পরিচিত হয়ে আসছে।