রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

Valentine Day ২০১৬ উপলক্ষ্যে কিছু কথা

হে মুসলমান যুবক -যুবতী ভাই ও বোনেরা!  
পরনারী বা পরপুরুষের প্রতি প্রেম ভালোবাসা ও আকর্ষণ, একটু খানি অবৈধভাবে স্পর্শ করা এবং যৌন সম্পর্কের লোভ থেকে বাঁচতে পারছেন না. . .এর চাইতে ১০০গুণ বেশি মারাত্মক, দাজ্জালের ধোঁকা থেকে নিজেদের ঈমানকে কিভাবে রক্ষা করবেন?
____________________________
শায়খ আব্দুল হামীদ মাদানী হাফিজুল্লাহর বই থেকে সংগৃহীত,
বলা হয়ে থাকে যে একদা রোমান সম্রাট (ক্লাউডিউস) রোমের সকল পুরুষদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে আদেশ করলে, কিন্তু অনেক পুরুষ তাতে আগ্রহ দেখালো না। কারণ বিশ্লেষণ করে জানতে পারেন যে, সে সকল পুরুষরা হল বিবাহিত এবং তারা তাদের স্ত্রী -সন্তান ছেড়ে যুদ্ধে যেতে রাজী নয়। তাই তিনি বিবাহ নিষিদ্ধ করে দিলেন। কিন্তু যাজক Valentine গোপনে গীর্জার মধ্যে লোকদের বিবাহের কাজ সম্পন্ন করতে থাকেন। এই খবর পেয়ে সম্রাট তাকে ২৬৯ খ্রীস্টাব্দের ১৪-ই ফেব্রুয়ারি প্রাণদন্ড দেয়। তারপর থেকে, সেই খ্রীস্টান পাদ্রীর স্মরণে এই দিনটিকে প্রেমের দিন হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। অতঃপর, গীর্জার তরফ থেকে ১৯৬৯ সালে ইটালীতে Valentine Day পালন সরকারিভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। যেহেতু তাদের মতে তা ছিল দ্বীন ও চরিত্র বিরোধী অবাস্তব উপকথাভিত্তিক। কিন্তু সাধারণ লোকেরা তা আজও পালন করে থাকে।
____________________________
কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে একের পর এক নিত্য-নতুন ফেতনা মুসলমানদেরকে গ্রাস করবে। তখনকার যুগে মানুষের ঈমানের অবস্থা কেমন হবে, সে সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
আঁধার রাতের অবিরাম খন্ডের মত কৃষ্ণ-কালো ফেতনা আবর্তিত হওয়ার পূর্বেই তোমরা দ্রুত নেক কাজে মনোনিবেশ কর। (এমন একটা সময় আসবে যখন) মানুষ সকাল বেলা মুমিন কিন্তু বিকেল বেলা সে হবে কাফের। আবার কেউ সন্ধ্যা বেলা মুমিন হবে তো সকাল বেলা হবে কাফের। দুনিয়াবি সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে সে দ্বীনকে বিক্রি করে ফেলবে। [সহীহ মুসলীম]
____________________________
আজকে যারা Happy Valentine Day লিখে বা বলে পাঠিয়েছেন, বিভিন্ন অশ্লীল ও হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে এই দিনটি উদযাপন করেছেন, তারা আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়ে তোওবা করুন এবং অবৈধ সম্পর্ক থেকে ফিরে আসুন।
____________________________
পুরুষদের মাঝে যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য আছে, তাদের প্রেমিকা যদি বিয়ে করার মতো উপযুক্ত হয়, তাহলে মেয়ের বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। মেয়ের বাবা রাজি থাকলে আলহামদুলিল্লাহ! দেরী না করে শীঘ্রই আক্বদ করে হালাল করে নিন। আর মেয়ের বাবা যদি একান্তই রাজি না হয়, তাহলে এই মেয়ের সাথে যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিন্ন করে ধার্মিক দেখে পছন্দমতো অন্য মেয়েকে বিয়ে করে আল্লাহর পথে চলার চেষ্টা করুন।
____________________________
নারীদের মাঝে যারা এই ফিতনায় পড়েছেন, তাদের প্রেমিক যদি বিয়ে করার উপযুক্ত হয়, তাহলে আপনাকে পেতে চাইলে কালকেই আপনার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে বলুন। যদি আপনার বাবা রাজী থাকে, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ! শীঘ্রই বিয়ে সম্পন্ন করে হালাল করে নিন। ঐ পুরুষ যদি বিয়ে করতে রাজি না হয়, বা হেনতেন বলে বিয়ে করতে দেরী বা অস্বীকার করে, কিন্তু সম্পর্কে রেখে ঠিকই আপনাকে ভোগ করতে দাবী জানায়. . .তাহলে এমন লোককে সাক্ষাৎ ইবলিস মনে করে তার থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছে, সেটা আর কোনদিন ফেরত আসবেনা। ইন্তু ভবিষ্যতে যাতে আল্লাহর নাফরমানি করে আপনার পরকাল নষ্ট না হয়, তার জন্যে প্রাণপন চেষ্টা করুন।
____________________________
আর যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, বা যাদের বাবা বিয়ে দিচ্ছেনা, তারা পরপুরুষ বা পরনারীর সংশ্রব ও যোগাযোগ থেকে বেঁচে থাকুন, কারণ তা ক্রমেই জিনার সম্পর্কের দিকে নিয়ে যাবে। ধৈর্য ধরতে না পারলে রোযা রাখুন, যা আল্লাহকে স্বরণ রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনার যৌন কামনা ও আবেগকে নিয়ন্ত্রন করবে।
____________________________
এ ব্যপারে কারো কোন পরামর্শ বা সাজেশান দরকার মনে করলে, আমাদেরকে ইনবক্স করতে পারেন। ইংশা-আল্লাহ, আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান ও সাধ্য অনুযায়ী আমরা আপনাদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করবো। আমি দুয়া করি, আল্লাহ আমাদেরকে অশ্লীলতার ফিতনাহ, যা বর্তমান যুগে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, তা থেকে আমাদের ও আমদেরকে পুরিবারকে হিফাজত করুন।

- আনসারুস সুন্নাহ।