বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আমরা কি ক্বুরানকে ‘মাহজুরা’ (পরিত্যক্ত) সাব্যস্ত করেছি?

আমরা কি ক্বুরানকে মাহজুরা (পরিত্যক্ত) সাব্যস্ত করেছি? (মা যাআলাহ)
- দাঁড়ি রাখলে কেমন দেখা যাবে? মেয়েরা বিয়ে করতে রাজি হয়না!
- হিজাব পড়লে মানুষ জংগি বলে, পর্দানশীল নারীদেরকে নিয়ে লোকেরা কটুক্তি করে। বাবা-মা অথবা স্বামী হিজাব-পর্দা করতে বাঁধা দেয়!
- ইসলামি আইনের কথা বললে সাপ্রদায়িক, মধ্যযুগীয় বর্বরতা, দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে, আফগানিস্থান হয়ে যাচ্ছেএতো ইসলাম মানতে চাইলে পাকিস্থান চলে যাও।
- সুদ, ঘুষ, হারাম উপার্জন নিয়ে কথা বলা যাবেনা, এতো হালাল-হারাম দেখতে গেলে দুনিয়া চলবেনা
- আজকালকার যুগে পড়তে গেলে নারী-পুরুষ এক সাথে মিশতেই হবে
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَذَا الْقُرْآنَ مَهْجُورًا
অর্থঃ আর রাসুল বললেন, হে আমার পালনকর্তা! আমার সম্প্রদায় এই ক্বুরআনকে পরিত্যক্ত (প্রলাপ) সাব্যস্ত করেছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে কিছু কাফের ক্বুরানকে مَهْجُورًا মাহজুরা বা পরিত্যক্ত জিনিস মনে করে তাকে বর্জন করেছিলো। আজকের যুগেও কোটি কোটি মুসলমানেরা এই ক্বুরানকে বর্জন করেছে।
আল-হাফিজ, ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাউজিয়া রাহিমাহুল্লাহ তাঁর অনন্য গ্রন্থ আল-ফাওয়ায়েদ এ ক্বুরানকে বর্জন করার কয়েকটি দিক উল্লেখ করেছেনঃ
১. ক্বুরান তেলাওয়াত করা বর্জন করা।
২. ক্বুরান শ্রবণ করা বর্জন করা।
৩. ক্বুরান এর উপর আমল করা, এর হালাল-হারাম বিধি-বিধান মেনে চলা বর্জন করা।
৪. ক্বুরান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা এবং সে অনুযায়ী আদালতে বিচার-ফয়সালা না করা।
৫. রুকইয়া বা ক্বুরান দিয়ে ঝাড়ফুঁক করা বর্জন করা।
আল্লাহ আমাদেরকে এমন জাহেলিয়াতের ধ্বংস হওয়া থেকে হিফাজত করুন, এবং আমাদেরকে আহলুল ক্বুরান এর অন্তর্ভুক্ত করুন।

বিঃদ্রঃ আহলুল ক্বুরান কথাটির অর্থ ভালো, স্বয়ং রাসুল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহীহ হাদীসে তাদের কথা বলেছেন। এর অর্থ হচ্ছে ক্বুরানওয়ালা বা ক্বুরানের পরিবারের লোকজন। কিন্তু বর্তমানে একটা পথভ্রষ্ট ও মারাত্মক বিদাতী দল নিজেদেরকে আহলে কুরান বা কুরানিস্ট বলে দাবী করে। তাদের দাবী হচ্ছে, তারা সুন্নাহ বা হাদীস মানেনা, শুধু কুরান মানে। অথচ এটা ক্বুরান, হাদিস এবং বাস্তবতা বর্জিত মিথ্যা দাবী ছাড়া আর কিছুইনা। এরা আহলে কুরান নয়, এরা আসলে গোস্তাখ-এ-ক্বুরান। আমাদের কাছে তারা আহলে কুরান নয়, তাদের আসলে নাম হচ্ছে মুনকারিনে হাদীস বা হাদীস অস্বীকারকারী। এরা লন্ডন-আমেরিকার মতো কাফের দেশগুলোতে যেখানে অনেক মুসলমানেরা হারাম ও পাপচারে ডুবে থাকে ও দ্বীন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেনা, তাদেরকে ধোঁকা দিয়ে তাদের ঈমান নষ্ট করছে। আর এর পাশাপাশি মুসলমান দেশগুলোতে তাদের অনুগত লোকদেরকে ক্বুরান গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ ইত্যাদি সুন্দর সুন্দর নামে মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠিত করে তাদের গোমরাহীর বিষবাষ্প মুসলমানদের মাঝে ছড়ানোর ষড়যন্ত্র করছে। আপনারা শয়তানের নেক সুরতে ধোঁকা অর্থাৎ দ্বীন শিক্ষা দানের আড়ালে গোমরাহী ও পথভ্রষ্টতা থেকে সতর্ক থাকবেন ইন শাআল্লাহ।