রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৪

বিতর নামায নিয়ে হাদীসগুলোর রেফারেন্স

বিতর নামায নিয়ে হাদীসগুলোর রেফারেন্সঃ

=> এক ভাই আমাদের #বিতর নামাযের পোস্টকে বানোয়াট, মিথ্যা বলে আমাদেরকে #দাজ্জালের সাথে তুলনা করেছেন।

=> আরেকজন বলেছেন, #হাদীসের কথা বলে আমরা নাকি #ফেতনা সৃষ্টি করছি, নাউযুবিল্লাহ! বিতর নামায নিয়ে আমাদের পোস্ট এর লিংক –

https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/a.130928300273259.14132.125167817515974/878139928885422/?type=1&relevant_count=1

=> নিচে বিতর নামায সম্পর্কে কিছু হাদীসের রেফারেন্স দেওয়া হলো, আপনারা মূল #আরবীর সাথে অথবা #তাওহীদ পাবলিকেশানের বাংলা #অনুবাদের সাথে মিলিয়ে দেখবেন। ইন শা আল্লাহ, আল্লাহ তওফিক দিলে শীঘ্রই আমি ছবিসহ প্রমান করে দেব - #ইসলামী_ফাউন্ডেশানের হুজুর সাহেবরা নিজেদের মাযহাব টিকিয়ে রাখার জন্য কিভাবে বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য হাদীসের ভুল অর্থ করে, #ব্রাকেটে বা #টিকা লিখে মূল হাদীসের অপব্যাখ্যা করে, যা আরবীতে থাকেনা। এইভাবে আরবী না জানার কারণে #গোড়া_মাযহাবপন্থীরা হাদীস নিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেয়। আরো বিস্তারিত জানার জন্য এই বই দেখুনঃ

http://salafibd.wordpress.com/2011/05/20/bitir-namaz/

=> রাসূল সাঃ এক রাকআত বিতর পড়তেনঃ হাদীস ১ -

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ فَقُلْتُ أُطِيلُ فِي رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَقَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ وَكَانَ يُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ وَالأَذَانُ فِي أُذُنِهِ . يَعَنِي يُخَفِّفُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَجَابِرٍ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي أَيُّوبَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ رَأَوْا أَنْ يَفْصِلَ الرَّجُلُ بَيْنَ الرَّكْعَتَيْنِ وَالثَّالِثَةِ يُوتِرُ بِرَكْعَةٍ . وَبِهِ يَقُولُ مَالِكٌ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ

আনাস ইবন সীরীন (র) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন: আমি ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহ-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ফজরের দুই রাকআত (সুন্নাত) কি দীর্ঘ করব? তিনি বললেন : রাসূল সাঃ এর রাতের সালাত হতো দুই রাকআত করে। তিনি বিতর করতেন #এক_রাকআত। আর (ফজরের) দুই রাকআত (সুন্নাত) এমনভাবে আদায় করতেন যে, আযনের আওয়াজ তখনো তাঁর কানে বাজত।

 قَالَ وَفِي الْبَاب عَنْ عَائِشَةَ وَجَابِرٍ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي أَيُّوبَ وَابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالتَّابِعِينَ رَأَوْا أَنْ يَفْصِلَ الرَّجُلُ بَيْنَ الرَّكْعَتَيْنِ وَالثَّالِثَةِ يُوتِرُ بِرَكْعَةٍ وَبِهِ يَقُولُ مَالِكٌ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَقُ

এই বিষয়ে আয়েশা, জাবির, ফযল ইবন আববাস, আবূ আইয়ূব ও ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকেও আরো হাদীস বর্ণিত আছে।
ইমাম আবূ ঈসা #তিরমিযী রহ. বলেন: ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহ বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। কতক সাহাবী ও তাবিঈ এই হাদীস অনুসারে আমল করেছেন। তারা বলেন: দ্বিতীয় রাকআত ও তৃতীয় রাকআতের মাঝে ব্যবধান করবে (সালাম ফেরানোর মাধ্যমে) এবং এক রাকআত বিতর আদায় করবে। ইমাম #মালিক, #শাফঈ, #আহমদ ও #ইসহাক রাঃ এরও একই মত।
সহিহ আত্ তিরমিজি, বিতরের স্বলাত বা কিতাবুল বিতর অধ্যায় অধ্যায় ৩, হাদিস ৪৬১।

হাদীস ২ -
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ فَقَالَ بِأُصْبُعَيْهِ هَكَذَا مَثْنَى مَثْنَى وَالْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ

Ibn 'Umar said: A man who lived in the desert asked the Messenger of Allah (sallallahu 'alaihi wa sallam) about the prayer at night. He made a sing with his two fingers-in this way in pairs. The witr consists of one rak'ah towards the end in night.

সুনান আবু দাউদ, বিতর সম্পর্কীয় অধ্যায় ৮ হাদিস ১৪২১, Sahih (Al-Albani).

=> রাসূল সাঃ এর হাদীস অনুযায়ী বিতর ১/৩/৫ রাকআত এর যেকোন একভাবে পড়া যাবেঃ

حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْمُبَارَكِ، حَدَّثَنِي قُرَيْشُ بْنُ حَيَّانَ الْعِجْلِيُّ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ وَائِلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْوِتْرُ حَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِخَمْسٍ فَلْيَفْعَلْ وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِثَلاَثٍ فَلْيَفْعَلْ وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِوَاحِدَةٍ فَلْيَفْعَلْ "

Narrated AbuAyyub al-Ansari: The Prophet (sallallahu 'alaihi wa sallam) said: The witr is a duty for every Muslim so if anyone wishes to observe it with five rak'ahs, he may do so; if anyone wishes to observe it with three, he may do so, and if anyone wishes to observe it with one, he may do so.
সুনান আবু দাউদ, বিতর সম্পর্কীয় অধ্যায় ৮ হাদিস ১৪২২, Sahih (Al-Albani).

=> বিতর ওয়াজিব নয়, #সুন্নতঃ

আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ

الْوِتْرُ لَيْسَ بِحَتْمٍ كَصَلاتِكُمُ الْمَكْتُوبَةِ وَلَكِنْ سَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ إِنَّ اللَّهَ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ فَأَوْتِرُوا يَا أَهْلَ الْقُرْآنِ

বিতর নামায ফরজ নামাযের মত লাযেম ও আবশ্যক নয়; বরং সে নামায রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুন্নত করেছেন। তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বেজোড় বা একক, তাঁর কোন শরীক নেই, তিনি বিতর তথা বেজোড় নামায পছন্দ করেন এবং তাতে প্রচুর ছওয়াব দিয়ে থাকেন। সুতরাং হে কুরআনের অনুসারীগণ তোমরা বিতরের নামায পড়। 
قَالَ وَفِي الْبَاب عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ
এই বিষয়ে ইবন উমর, ইবন মাসঊদ ও ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।
ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী রহ. (র) বলেন: আলী রাদিয়াল্লাহু আনহ বর্ণিত হাদীসটি হাসান।সহিহ আত্ তিরমিজি, বিতরের স্বলাত বা কিতাবুল বিতর অধ্যায় অধ্যায় ৩, হাদিস ৪৫৩, ইবনে মাজাহ, হাদীস সহীহ, শায়খ আলবানী।

এই হাদীছটি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বিতর নামায সুন্নাত। কারণ সেই সময় আলী (রাঃ)এর উল্লেখিত কথার কোন প্রতিবাদ কোন ছাহাবী থেকে পাওয়া যায় না। আর তিনি কথাটি তাঁদের উপস্থিতিতেই বলেছেন। সুতরাং বলা যায়, ইহা ছাহাবায়ে কেরামের ‘এজমা সুকূতী’ বা নীরব ঐকমত্য।  হাদীছ শাস্ত্রে একথা সকলের জানা যে, কোন ছাহাবী যদি বলেন, সুন্নাত হচ্ছে এই রকম ... তবে উহা মারফূ  হাদীছ হিসেবে গণ্য।

দলীলঃ ২ –
কেনানা গোত্রের মুখদাজী নামক এক ব্যক্তি শামে বসবাসকারী আবু মুহাম্মাদ নামে পরিচিত জনৈক ব্যক্তির নিকট থেকে শুনলেন, তিনি বলছেন যে, বিতর নামায ওয়াজিব। মুখদাজী বলেন, কথাটি শুনে আমি ছাহাবী উবাদা বিন ছামেতের (রাঃ) নিকট গেলাম। তিনি তখন মসজিদে যাচ্ছিলেন। আমি তাঁকে আবু মুহাম্মাদের কথাটি বললাম। তিনি বললেন, আবু মুহাম্মাদ ভুল কথা বলেছে। কেননা আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামায বান্দাদের উপর লিখে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এই নামাযগুলোকে হালকা মনে করে তার অধিকার ক্ষুন্ন করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে রয়েছে অঙ্গিকার। তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে ব্যক্তি এই নামাযগুলো আদায় করবে না তার জন্যে আল্লাহর কাছে কোন অঙ্গিকার নাই। আল্লাহ চাইলে তাকে শাস্তি দিবেন, চাইলে তাকে ক্ষমা করবেন।
আবু দাউদঃ ১২১০, আহমাদঃ ২১৬৩৫, হাদীস সহীহ, শায়খ আলবানী।

=> কোন বৈঠক ছাড়া ১ সালামে বিতির নামায পড়ার দলীলঃ

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ الْكَوْسَجُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَتْ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً يُوتِرُ مِنْ ذَلِكَ بِخَمْسٍ لاَ يَجْلِسُ فِي شَيْءٍ مِنْهُنَّ إِلاَّ فِي آخِرِهِنَّ فَإِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ الْوِتْرَ بِخَمْسٍ وَقَالُوا لاَ يَجْلِسُ فِي شَيْءٍ مِنْهُنَّ إِلاَّ فِي آخِرِهِنَّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَأَلْتُ أَبَا مُصْعَبٍ الْمَدِينِيَّ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُوتِرُ بِالتِّسْعِ وَالسَّبْعِ قُلْتُ كَيْفَ يُوتِرُ بِالتِّسْعِ وَالسَّبْعِ قَالَ يُصَلِّي مَثْنَى مَثْنَى وَيُسَلِّمُ وَيُوتِرُ بِوَاحِدَةٍ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন: রাসূল সাঃ এর রাতের সালাত ছিল তের রাকআত। এর মধ্যে পাঁচ রাকআত বিতর আদায় করতেন। এই পাঁচ রাকআতের #শেষ_রাকআত_ছাড়া আর কোথাও বসতেন না। পরে মুআয্যিন (ফজরের) আযান দিলে তিনি উঠে দাঁড়াতেন এবং দু’রাকআত সংক্ষেপ্ত সালাত (সুন্নাত) আদায় করতেন।

قَالَ وَفِي الْبَاب عَنْ أَبِي أَيُّوبَ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَغَيْرِهِمْ الْوِتْرَ بِخَمْسٍ وَقَالُوا لَا يَجْلِسُ فِي شَيْءٍ مِنْهُنَّ إِلَّا فِي آخِرِهِنَّ

এই বিষয়ে আব আইয়ূব রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী রহ. বলেন; আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহ বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ।
সহিহ আত্ তিরমিজি :: বিতরের স্বলাত বা কিতাবুল বিতর অধ্যায় অধ্যায় ৩ :: হাদিস ৪৫৯।

=> রাতে ঘুমিয়ে গেলে বা বিতির পড়তে ভুলে গেলে সকালে বা যখন মনে হবে তখন বিতর পড়া যাবে তার দলীলঃ

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ نَامَ عَنِ الْوِتْرِ أَوْ نَسِيَهُ فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَ وَإِذَا اسْتَيْقَظَ "

আবূ সাঈদ আল-সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন: কেউ যদি বিতর আদায় না করে শুয়ে পড়ে বা তা আদায় করতে ভূলে যায়, তবে যখনই স্মরণ হবে বা সে নিদ্রা থেকে উঠবে, তখনই তা আদায় করে নিবে।
সহিহ আত্ তিরমিজি :: বিতরের স্বলাত বা কিতাবুল বিতর অধ্যায় অধ্যায় ৩ :: হাদিস ৪৬৫, আর বুলুগুল মারামঃ রাতের সালাত অধ্যায়।

=> বিতির ২ রাকাতে বৈঠক করা যাবেনা, হয় ২ রাকাতে সালাম ফেরাতে হবে অথবা বৈঠক না করে ৩ রাকাতে বৈঠক করতে হবঃ

ইবনে উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)  থেকে আরো বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বিতর নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, দু’রাকাত এবং এক রাকাতের মাঝে সালাম ফিরে পার্থক্য করে নিবে। 
আসরাম সহীহ সনদে, আল-মুগনীঃ ২/৫৮৯।

আয়েশা (রাঃ) আরো বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এক রাকাত বিতর পড়তেন। তিনি দু’রাকাত এবং এক রাকাতের মাঝে কথা বলতেন। 
মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, সহীহ সনদে ইরওয়া গালীলঃ হা/৪২০।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ দু’রাকাত পড়ে তাশাহুদের জন্য না বসে সালাম না ফিরিয়ে একাধারে তিন রাকাত পড়ে সালাম ফেরানো। এ কথার দলীল, হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি রাকাত বিতর নামায পড়তেন। এর মধ্যে তাশাহুদের জন্যে বসতেন না, একাধারে তিন রাকাত পড়ে শেষ রাকাতে বসতেন ও তাশাহুদ পড়তেন। এভাবেই বিতর পড়তেন আমীরুল মু’মেনীন হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ)। 
সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন ইমাম হাকেম।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা বিতিরকে মাগরিবের মতো করে দিওনা”।
তাহাবী হা/১৭৩৮, দারা কুতনী হা/১৬৬৯, ইবনে হিব্বান হা/২৪২৯।

হানাফীরা দাবী করে কুনুত পড়লে বিতিরকে মাগরিব থেকে আলাদা করা হয়, একথা ঠিক নয় কারণ সহীহ হাদীস দিয়ে প্রমানিত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মাগরিব ও ফযর উভয় নামাযে কুনুত পড়েছেন। তাই শুধু কুনুত পড়লে বিতিরকে মাগরিব থেকে আলাদা করা হয় না।

=> দুহাত তুলে দুআ ক্বনূত পড়াঃ
এ সময় দু’হাত তুলে দুআ ক্বনূত পড়তে পারবে। কেননা সাধারণ ভাবে দুআ করার সময় দু’হাত উত্তোলন করা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

সালমান ফারেসী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
إِنَّ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالَى حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرًا
নিশ্চয় তোমাদের পালনকর্তা লজ্জাশীল সম্মানিত। কোন বান্দা তাঁর কাছে দু’হাত তুলে প্রার্থনা করলে তিনি উহা খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। আবু দাউদঃ ১২৭৩।

ক্বনূত একটি দুআ, তাই এ অবস্থায় হাত তুলা উচিত। তাছাড়া হাত তুলে দুআ ক্বনূত পড়ার ব্যপারে সাহাবায়ে কেরাম থেকেও প্রমাণ পাওয়া যায়। ইবনে মাসউদ, উমর বিন খাত্তাব, ইবনে আব্বাস, আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রমূখ সাহাবী দুআ ক্বনূত পড়ার সময় বুক বরাবর দু’হাত তুলতেন। ইমাম আহমাদ, ইমাম ইসহাকও এরূপ করতেন। 
আল-মুগনীঃ ২/৫৮৪, তুফতাতুল আওযায়ীঃ হা/৪৬৪।

আবু রাফে থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমি উমার বিন খাত্তাব (রাঃ)এর পিছনে নামায পড়েছি। তিনি রুকূর পর ক্বনূত পড়েছেন। তখন হাত উঠিয়েছেন এবং দুআ জোরে জোরে পড়েছেন।  সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন ইমাম বায়হাকীঃ ২/২১২।