বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব – ৩ )

জিহাদ, কিতাল ও খিলাফাহ ( পর্ব ৩ )

প্রথম পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/pb.125167817515974.-2207520000.1409140925./888197884546293/?type=1

দ্বিতীয় পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/a.130928300273259.14132.125167817515974/889014301131318/?type=1

ময়দানের জিহাদ ছাড়া অন্য জিহাদ জিহাদ নয় এমন মনে করা আদৌ ঠিক নয়। বরং সে গুলো জিহাদ আকবার বা মূখ্য জিহাদ। কেননা সে জিহাদের ক্ষেত্র প্রশস্থ এবং সময়কালের কোন সীমা নেই। সে জিহাদে জীবনের সর্বক্ষণ ইমানদারকে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় লড়াই করে যেতে হয়। যে এর কোনটিই করবেনা, করার মানসিকতা রাখবেনা সে জাহেলিয়াতের মরণ মরবে; কারণ আল্লাহর রাসুল সঃ সাধারণ ভাবেই এমন উক্তি করে গেছেন।

مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَغْزُ وَلَمْ يُحَدِّثْ بِهِ نَفْسَهُ مَاتَ عَلَى شُعْبَةٍ مِنْ نِفَاقٍ- مسلم/ صحيح

যে মরে গেল অথচ লড়াই করলো না, এবং লড়াই নিয়ে মনের সাথে কথা বলল না, সে নেফাকের অংশ সাথে নিয়ে মারা গেল।
সহীহ মুসলিম।

রাসুল (সঃ) এর এই উক্তির উপরে উল্লেখিত সকল প্রকার জিহাদকেই বুঝায় তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ উক্তি দিয়ে যদি শুধু সশস্ত্র যুদ্ধ মনে করা হয়, তা হবে জিহাদের এক মনগড়া সংকীর্ণ ব্যখ্যা, ইসলামের স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে মুর্খতাপূর্ণ নির্মম হস্তক্ষেপ। জিহাদের নাম করে ব্লাড বাথ, বা মরণ ফাঁদ তৈরি করার এক ঘৃণ্য অপপ্রয়াস।

এর অর্থ যদি শুধু সশস্ত্র যুদ্ধই হবে তাহলে শত শত বছরের মধ্যে, সাহাবা, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ ও তাঁদের পরে যারা এমন যুদ্ধে অংশ না নিয়েই মারা গেছেন ও আগামীতে যারা মরে যাবেন তাঁরা কি সবাই মুনাফেক বলে গণ্য হবেন? তাঁরা কি জান্নাত থেকে নিরাশ হয়ে যাবেন?

না, বরং এমন ভাবা অবশ্যই অনৈসলামিক এবং অযৌক্তিকও বটে!

খ) কিতাল বা সশস্ত্র জিহাদঃ
এই জিহাদের সংজ্ঞা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদ সঃ এইভাবেঃ

مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَةُ اللَّهِ هِيَ الْعُلْيَا فَهُوَ شَهِيدٌ- البخاري/841

আল্লাহর রাসুল সঃ বলেন, যে যুদ্ধ করেছে যাতে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী হয়, সে (মারা গেলে) শহীদ হয়েছে।
সহীহ বুখারীঃ ৮৪১।

مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَة اللَّه هِيَ الْعُلْيَا فَهُوَ فِي سَبِيل اللَّه عَزَّ وَجَلَّ (البخاري من شفيق بن سلمة)

যে ব্যক্তি আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জিহাদ করবে সে-ই আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী বলে গণ্য হবে।
শফিক ইবনু সালামা থেকে/ বুখারী।

এ থেকে বুঝা যায়, প্রকৃত আলাহর রাস্তায় জিহাদ/ সশস্ত্র জিহাদ হল সেই জিহাদ যা একমাত্র আল্লহার সন্তুষ্টির জন্যে করা হয়

উক্ত হাদিস দুইটি থেকে আরও বুঝে নেওয়া যায় যে, সশস্ত্র জিহাদের প্রধান উদ্দেশ্য হবে, আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য যুদ্ধ। অন্য কোন উদেশ্যে মনে স্থান পেতে পারবেনা; না রাজনৈতিক, না ভৌগলিক, না অর্থনৈতিক, না দলীয়, না ক্ষমতা লাভ, না শহীদ হওয়া অথবা বীর বিক্রম খেতাব পাওয়ার উদ্দেশ্যে।

সুরা বাক্কারার ১৭৮ নং আয়াত এই জিহাদের মুখবন্ধ বা ভূমিকা বলে বিবেচিত হয়। যেখানে আল্লাহ বলেছেনঃ

وَقَاتِلُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ الّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلاَ تَعْتَدُوَاْإِنّ اللّهَ لاَ يُحِبّ الْمُعْتَدِينَ- البقرة/178

তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো (যে যুদ্ধে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়), তাদের সাথে যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ শুরু করছে। জেনে রা! তোমরা কখনো যেন সেই যুদ্ধে সীমা অতিক্রম না করো। কেননা আল্লাহ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে ভালবাসেন না
সুরা আল-বাক্কারাহঃ ১৭৮।

এখানে سَبِيلِ اللّهِ আল্লাহর রাস্তায়, الّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ যারা তোমাদের সাথে ইসলামের কারনে যুদ্ধ শুরু করে, وَلاَ تَعْتَدُوَاْ এবং সীমা লঙ্ঘন করবেনা- এই বাক্যগুলির অর্থ সঠিকভাবে অবশ্যই বুঝতে হবে। তৎসঙ্গে বুঝতে হবে, অন্যান্য আয়াত ও তার প্রেক্ষাপট। আরও বুঝতে হবে এই যে, প্রকাশ্য শত্রুদের শীর্ষ শত্রু আব্দুল্লাহ ইবনু উবাইকে হত্যা করার সমূহ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন রাসুল সঃ তাকে হত্যা করেন নাই, এমন সব ঐতিহাসিক ঘটনা।

মদীনাবাসী মিথ্যা অপবাদ বিশ্বাস করে ক্ষেপে গিয়ে ধেয়ে এসেছিলেন ইয়াজিদের বিরুদ্ধে। আব্দুল্লাহ ইবনু জুবায়েরের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই কাফেলার। ইয়াজিদ এর পদস্খলন চাইলে এক মহা ফেতনার সূত্রপাত হয়। দুই ব্যক্তি আব্দুল্লাহ ইবনু উমর রাঃ কে তাদের আন্দোলনে শরীক হতে অনুরোধ জানালে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিলেনঃ

يَمْنَعُنِي أَنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيَّ دَمَ أَخِي الْمُسْلِمِ، قَالَ: أَوَ لَمْ يَقُلِ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: {وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ} [الأنفال: 39]؟ قَالَ: فَقَدْ قَاتَلْنَا حَتَّى لَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ وَكَانَ الدِّينُ لِلَّهِ، وَأَنْتُمْ تُرِيدُونَ أَنْ نُقَاتِلَ حَتَّى تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِغَيْرِ اللهِ البخاري في الصحيح والبيهقي

আমাকে তোমাদের সাথে শরীক হতে বারণ করে একথা যে, আল্লাহ আমার উপর মুসলমান ভাইয়ের রক্ত হারাম করেছেন। আল্লাহ কি বলেন নাই
‘’তোমরা কেতাল করো যদি না সে কেতাল ফেতনাহ সৃষ্টি করে? যদি তা আল্লাহর দীনকেই শুধু সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করার পথ সুগম করে?
ইবনু উমার আরও বললেন, আমরা কিতাল (অস্ত্রের দিয়ে যুদ্ধ) করেছি; আমাদের কিতাল সকল ফেতনাহ নিপাত করেছে আর দ্বীনের পথ সুগম করেছে। অথচ তোমরা যে কিতালের জন্যে আহ্বান করছো তা ফেতনাহকে আরো উস্কে দেবে এবং দ্বীন আর আল্লাহর থাকতে পারবেনা (মানে শয়তানের অনুসারীদের হাতে খেলনায় পরিণত হবে)।
সহীহ বুখারী ও বায়হাকী।

বিচক্ষণ উলামায়ে কেরাম উক্ত হাদিস ও আয়াত সমূহের আলোকে সশস্ত্র জিহাদের জন্যে যে সব শর্ত আরোপ করেছেন তা নিম্ন রূপঃ

১. শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য হতে হবে, দলীল

وَقَاتِلُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ الّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلاَ تَعْتَدُوَاْإِنّ اللّهَ لاَ يُحِبّ الْمُعْتَدِينَ- البقرة/178

তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো (যে যুদ্ধে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়), তাদের সাথে যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ শুরু করছে। জেনে রা! তোমরা কখনো যেন সেই যুদ্ধে সীমা অতিক্রম না করো। কেননা আল্লাহ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে ভালবাসেন না
সুরা আল-বাক্কারাহঃ ১৭৮।

এখানে سَبِيلِ اللّهِ আল্লাহর রাস্তায়,
২. কাফেররা আগে শুরু করতে হবে, দলীল (الّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ - البقرة/178 )।
সুরা আল-বাক্কারাহঃ ১৭৮।
এখানে الّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ  অর্থ যারা (প্রথমে) তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে

৩. আল্লাহর দ্বীনকে মিটিয়ে দেওয়াই কাফেরদের উদ্দেশ্য হতে হবে, দলীল (الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ- الممتحنة/9 )।

আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম।
সুরা মুমতাহানাঃ ৯।

৪. যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে কোন সীমা লঙ্ঘন করা যাবেনা, দলীল (وَلاَ تَعْتَدُوَاْإِنّ اللّهَ لاَ يُحِبّ الْمُعْتَدِينَ- البقرة/178)।
সুরা আল-বাক্কারাহঃ ১৭৮।

৫. দ্বীনের বিজয় নিশ্চিত মনে হতে হবে, দলীল ( حَسْبُكَ اللّهُ وَمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ-الأنفال/ 64 )।
হে নবী! আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ঠ।
সুরা আল-আনফালঃ ৬৪।

৬. সকল ফেতনাহ বিদমিত হতে হবে এবং আর কোন ভাবে মাথা জাগানোর সুযোগ অবশিষ্ট থাকতে পারবেনা, দলীল ( حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ- الأنفال/39 )।
আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
সুরা আল-আনফালঃ ৩৯।

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَسْبُكَ اللَّهُ وَمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ - يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ ۚ إِن يَكُن مِّنكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ ... الْآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًا ۚ فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ... وَاللَّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ- الأنفال/64-66

হে নবী! তোমার জন্যে এখন আল্লাহ ও তোমার অনুসারীরা যথেষ্ট (বিজয় অর্জনের জন্যে)।
হে নবী, মুমেনদেরকে কিতালের জন্যে অনুপ্রাণিত করো! যদি তোমাদের মধ্যেকার ধৈর্যশীল ২০জন হয় তাহলে ২০০ জনের উপর বিজয়ী হবে...। তবে এখন তোমাদের উপর আরও হালকা করে দেওয়া হল, আল্লাহ তোমাদের দুর্বলতার বিষয়ে অভিহিত আছেন। তাই, যদি তোমরা ১০০ জন সবরকারী হও তাহলে ২০০ জনের উপর বিজয়ী হতে পারবে...। আল্লাহ সবরকারীদের সঙ্গে আছেন।
আল-আনফালঃ ৬৪-৬৬।

উক্ত আয়াত তিনটি থেকে আরও যে শর্তগুলো আরোপিত হয় তা হলঃ

৭. সমর বিশেষজ্ঞদের মতে যুদ্ধে বিজয় হবে বলে নিশ্চিত মনে হতে হবে (حَسْبُكَ اللَّهُ وَمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ )।

৮. শত্রুর তুলনায় শক্তির সামঞ্জস্য নিশ্চিত করতে হবে ( فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ)।

৯. নিজ বাহিনী সমর কৌশল ও ঈমাণী যোগ্যতায় ভরপুর হতে হবে (الْآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًا )।

১০. কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনায়/ পরিচালনায়/ পৃষ্টপোষকতায় হতে হবে, দলীল (يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ )।
কেননা, আল্লাহ এককভাবে মুসলমানদের শীর্ষ নেতা মুহাম্মাদুর রাসুলূল্লাহকেই এই দায়িত্ব অর্পণ করেন।

১১. কোন দল বা গোষ্ঠীর হঠকারিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন সুযোগ থাকতে পারবেনা, দলীলঃ
ولا تَكُونُوا كَالَّذِينَ تَفَرَّقُوا وَاخْتَلَفُوا ٌ- آل عمران/105

তোমরা তাদের মত হইওনা যারা দলে-দলে বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।
সুরা আলে-ইমরানঃ ১০৫।

১২. জিহাদ বিজয়ের জন্যে হতে হবে, কল্লা কাঁটা দিয়ে শহীদ হওয়ার জন্যে নয়। حَسْبُكَ শব্দটিই এমন শর্তের দিকে ইংগিত প্রদান করে।
হাসবুকা এর অর্থ যথেষ্ট। আর যথেষ্ট মানে বিজয়ী হওয়ার জন্যে যথেষ্ট, জীবন বিসর্জন দেওয়ার জন্যে নয়। কেননা জীবন বিসর্জন দিতে কোন সংখ্যার প্রয়োজন হয়না। বরং, বিজয় আনতে শক্তি ও সংখ্যার দরকার হয়।

১৩. উপরে উল্লেখিত সকল দিক বিবেচনায় নেওয়ার পর জিহাদে অবতীর্ণ হওয়া বৈধ মনে হলেও আল্লাহ পাক সে অবস্থায় সবর ধারণ করে ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে বলেছেনঃ

وإن عاقبتم فعاقبوا بمثل ما عوقبتم به ولئن صبرتم لهو خير للصابرين- النحل/126

যদি তোমরা প্রতিশোধ নেও তাহলে ততটুকই নেবে যতটুকু তাঁরা তোমাদের ক্ষতি করেছে। তবে হ্যাঁ, যদি ধৈর্য ধরতে পারো তাহলে ধৈর্যধারণ কারীদের জন্যে তা হবে উত্তম কাজ।
সুরা নাহলঃ ১২৬।

উলামায়ে কেরামগন এসব সকল দিক বিবেচনায় নিয়েই জিহাদ ও কিতালের ব্যাখ্যা করেছেন। ইলমের দৈন্যদশা নিয়ে উলামাগণকে উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থেকে জিহাদ করার প্রমাণ ইসলামের ইতিহাসে কোথাও নেই। আদার বেপারী হয়ে জাহাজের খবর নিয়ে ব্যস্ত হওয়াটা অযৌক্তিক ও দুঃখজনক! জিহাদের মর্মার্থ না বুঝেই, স্থান, কাল ও পাত্রের ভেদাভেদ না জেনেই, উলামা ও ক্ষমতার আসনে অধিষ্ঠিত মুসলমান নেতাদেরকে বাইপাস করে কেউ বা কোন দল হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবে আর সে কারনে মুসলমানগণ জান মাল অকাতরে বিলিয়ে দেবে এবং ইসলামের অপূরণীয় ক্ষতি হবে তা কোন ভাবেই গ্রহণ যোগ্য হতে পারেনা।

খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবাগণের যুদ্ধ আল্লাহর দ্বীনকে পূর্ণতা দান করেছিল। সকল ফেতনা নিপাত করেছিল। আর এখনকার সকল যুদ্ধই ফেতনাহ সৃষ্টির কুরুক্ষেত্র তৈরি করছে আর দ্বীনের অবর্ণনীয় ক্ষতি সাধন করছে। এমন যুদ্ধ যে হারাম, তা বোঝার জন্য ইসলামের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পড়েনা।
চলবে (ইন শা আল্লাহ).......


Collected from শায়খ মুজাম্মেল আল-হাক্ক।