শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫

দাওয়াত নাকি ফাসাদ? (পর্ব-১)

দাওয়াত নাকি ফাসাদ? (পর্ব-১)
হাদীস শাস্ত্রে মুমিনদের নেতা, মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ওরফে ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর সহীহ জামি গ্রন্থের শুরুতে কিতাবুল ইলম অধ্যায়ে কথা ও কাজের পূর্বে জ্ঞান আবশ্যক নামক একটা পরিচ্ছেদ নিয়ে এসেছেন। যেখানে তিনি দ্বীন সম্পর্কিত যেকোন কথা বলা কিংবা আমল করার পূর্বে জ্ঞান অর্জন করার গুরুত্ব নিয়ে আল্লাহ তাআলার বাণী ও কিছু আসার নিয়ে এসেছেন। আজকাল ফেইসবুক ইন্টারনেটের যুগে সালাফী, আহলুল হাদীস, সহীহ আক্বীদাহ, অনলি ক্বুরান ও সুন্নাহর অনুসারী, মুজাহিদ...এমন অনেক চমকপ্রদ নাম নিয়ে দ্বাইয়ী বা মুবাল্লিগ বের হয়েছে, যারা অর্ধেক জেনেই সেই ব্যপার মানুষের মাঝে প্রচার করা শুরু করেছে। অতি উৎসাহী দ্বাইয়ীদের অনেকেই ইসলামের অনেক জটিল বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা ছাড়াই বিষয়টাকে নিজেদের মতো করে বা নিজেদের বুঝ অনুযায়ী প্রচার করছে। স্বাভাবিকভাবেই, তাদের অলংকারমন্ডিত আধা-ইসলামিক কথা-বার্তার দ্বারা অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছে, অন্যদেরকেও বিভ্রান্ত করছে। এমন লোকদের ব্যপারে শায়খ মুহাম্মাদ নাসির উদ্দীন আলবানী (রহঃ) এর এই কথাটা পুরোপুরি প্রযোজ্য,
এখনকার তরুণদের সমস্যা হচ্ছে, যখনই তারা নতুন কিছু শিখছে তখনই তারা মনে করে তারা সব জেনে ফেলেছে।
সিলসিলাতুল হুদ ওয়ান-নূরঃ পৃষ্ঠা ৮৬১।
নিচে আমি কিছু উদাহরণ তুলে ধরছি, যা থেকে সালাফী/আহলে হাদীস নাম নিয়ে কিভাবে দাওয়াতের ক্ষতি করছে তার নমুনা স্পষ্ট হবে।
১. বাংলাদেশে আহলে হাদীস নাম নিয়ে কিছু আধা-শিক্ষিত বা কম বয়ষ্ক লোক ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) কে পথভ্রষ্ট, হাদীস ও সুন্নাহ বিরোধী প্রমান করার জন্যে কলম ধরেছে, এমনকি তাদের কেউ কেউ ইমামকে তাকফীর করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে! (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)!!
একথা প্রমানিত যে, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর ২-১টা ব্যপারে ভুল ছিলো, আর তার নামে প্রচারিত কিছু সত্য-মিথ্যা অভিযোগের উপরে ভিত্তি করে প্রাচীন আলেমদের কেউ কেউ ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু, পরবর্তী যুগের ইমামরা দেখিয়েছেন, ইমাম আবু হানীফার নামে যেই অভিযোগগুলো করা হয়, তার বেশিরভাগই ভুল। আর যে ২-১টা রয়েছে সেইগুলো তাকে আহলে সুন্নাহর বাইরে নিয়ে যায়না।
এব্যপারে আমিরুল মুমিনিন ফিল হাদীস, ইমাম ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন,
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) সম্পর্কে কতিপয় লোক বিদ্বেষের আশ্রয় লইয়াছে, আর কতকগুলো লোক মূর্খতার পথ অবলম্বন করিয়াছে।
তাহযীবুত তাহযীব।
ইমাম আবু হানীফার উপরে আরোপিত অভিযোগগুলো খন্ডন করে আহলে সুন্নতের কাছে এটা এখন সুপ্রতিষ্ঠিত বিষয় যে, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর ২-১টা ভুল থাকা সত্ত্বেও, ফিকহের ব্যপারে তিনি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের একজন অবিস্বরণীয় ইমাম, অত্যন্ত দানশীল ও মুত্তাক্বী একজন ব্যক্তি।
ইমাম আয-যাহাবী (রহঃ) বলেন, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) মুসলিম জাতির জন্যে একজন উস্তাদ (মহান শিক্ষক), অত্যন্ত মুত্তাক্বী (পরহেজগার ব্যক্তি), আল্লামাহ (মহাবিদ্বান), যাহিদ (দুনিয়া বিমুখ ও পরকালমুখী), রিফ (আল্লাহর জন্যে নিজেকে একনিষ্ঠভাবে উৎসর্গীকৃত বান্দা) ছিলেন। তিনি জীবনে কোনদিন সরকারী ভাতা বা পুরষ্কার গ্রহণ করেন নাই, ব্যবসা দ্বারা স্বীয় জীবিকা নির্বাহ করতেন।
তাযকিরাতুল হুফফাজঃ ১ম খন্ড, ১৫১পৃষ্ঠা
এতো গেলো পূর্ববর্তী আলেমদের মূল্যায়ন। আধুনিক যুগের সৌদি আরবের সমস্ত সালাফী আলেমরা তাদের কিতাব কিংবা দারসে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর নাম অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে উচ্চারণ করেন।
শায়খ মুহাম্মাদ বিন যামিল যাইনু (রহঃ) বলেন,
সমস্ত মুজতাহিদগণ-ই ফিকহ এর ব্যপারে ইমাম আবু হানীফার কাছে ঋণী।
আরকানুল ইসলাম ওয়াল ঈমান।
আল্লামাহ সালেহ আল-ফাউজান (হাফিঃ) কে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, ইমাম আবু হানীফার ভুল থাকা সত্ত্বেও অকপটে তিনি তাকে আহলে সুন্নাহর একজন ইমাম হিসেবে উল্লেখ করেন। 
আমাদের দেশের সমস্ত আহলুল হাদীস দ্বাইয়ী ও আলেম সমাজও ইমাম আবু হানীফার মর্যাদার কথা স্বীকার করেন। ভারতীয় উপমহাদেশে আহলে হাদীসদের একজন দিকপাল, আল্লামাহ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল-কাফী আল-ক্বুরাইশী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন,
আমাদের কাছে নুমানের কথা আবার বল, কারণ তাঁহার আলোচনা মৃগনাভী সদৃশ, যতবার ঘর্ষণ করিবে সুগন্ধি ততই বিস্তৃতি লাভ করিবে।
ফিরকাবন্দী বনাম অনুসরণীয় ইমামগণের নীতি, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা-৪৬।
এতদ্বসত্ত্বেও একশ্রেণীর অল্প বয়ষ্ক লোক আহলে হাদীস, সহীহ আক্বীদাহ, ক্বুরান সুন্নাহর অনুসারী, অনলি মুসলিম ইত্যাদি সুন্দর সুন্দর নাম নিয়ে ইমাম আবু হানীফাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও অপমান করছে। এইভাবে তারা নিজেদের আমল নামায় যেমন পাপ সঞ্চয় করছে, পাশাপাশি হানাফীদের মাঝে সঠিক দাওয়াত সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, তাদের সমালোচনার জন্যে সহজ টার্গেট তুলে দিচ্ছে।
আফসোসের কথা হচ্ছে, জারহ ওয়া তাদীলের মতো জটিল বিষয় সম্পর্কে অনেকের ধারণা না থাকায়, পূর্ববর্তী আলেমদের ২-১টা বিক্ষিপ্ত উদ্ধৃতি তুলে ধরে তারা অনেককেই বিভ্রান্তিতে ফেলে দিচ্ছে। আল্লাহ আমাদেরকে ও তাদেরকে হেদায়েত করুন।

(চলবে, ইন শা আল্লাহ)

রুকুর পরেও বুকে হাত বাঁধা সুন্নাহ হাদীস

রুকুর পরেও বুকে হাত বাঁধা সুন্নাহ, কেউ কেউ বলেন এর পক্ষে কোন হাদিস নেই। এর পক্ষে একটি হাসান হাদিস রয়েছে। ইমাম আহমেদ (রহঃ) এর পুত্র আব্দুল্লাহ বলেন,
আমার পিতা আমাকে বর্ণনা করেছেন। আব্দুল্লাহর পিতা আহমেদ ইবন হাম্বল বলেন, আমাকে বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবন ওয়ালিদ। আব্দুল্লাহ ইবন ওয়ালিদ বলেন, আমাকে বর্ণনা করেছেন সুফিয়ান। সুফিয়ান, আসেম ইবন কুলাইব হতে আর আসেম তার পিতা কুলাইব হতে আর কুলাইব ওয়াইল ইবন হুজর (রাঃ, তিনি একজন সাহাবী) হতে বর্ণনা করেছেন,
"আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিজের চোখে দেখেছি, যখন তিনি তাকবির বলতেন, দুইহাত দুইকান পর্যন্ত উঠাতেন, তারপর যখন রুকু করতেন, তখনও দুইহাত উঠাতেন। তারপর যখন বলতেন সামিয়াল্লাহুলিমান হামীদাহ (বলে দাঁড়াতেন) তখনও দুই হাত উঠাতেন। এবং আমি স্বচক্ষে দেখেছি তিনি স্বলাতে তার বাম হাতের উপর ডান হাত বাঁধতেন। অতঃপর.........."

মুসনাদ আহমাদ ৪র্থ খন্ড, পৃ. ৩১৮; সকল রাবী গ্রহনযোগ্য ও সত্যবাদী ও হাদিসটি হাসান, রাবীদের গ্রহনযোগ্যতার দলিল-তাকরিব ২৩৮পৃ, ২৭পৃ, তাহজিবুত তাহজিবঃ ৬ষ্ঠ খন্ড, ৭০পৃ ও ৫ম খন্ড ৫৫-৫৬পৃ, তাকরিবুত তাহজিবঃ ১৮৪পৃ।

রিয়াদুস সালেহীনের ভূমিকাতে ইমাম নববী (রহঃ) এর মূল্যবান উপদেশ

রিয়াদুস সালেহীনের ভূমিকাতে ইমাম নববী (রহঃ) এর মূল্যবান উপদেশ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি একক, প্রতাপশালী, পরাক্রমশালী, মহা ক্ষমাশীল। যিনি রাত্রিকে আচ্ছাদিত করেন দিন দ্বারা, যা হৃদয়বান জ্ঞানবান ব্যক্তিদের জন্য উপদেশস্বরূপ, বিচক্ষণ ও উপদেশগ্রহণকারীদের জর‍্য জ্ঞানালোক স্বরূপ। যিনি সৃষ্টিকুলের মধ্য হতে যাদেরকে মনোনীত করেছেন তাদেরকে সচেতন করেছেন, সুতরাং তাদেরকে এ পার্থিব সংসারের মোহমুক্ত করেছেন, তাদেরকে তার নিজের ব্যাপারে সতর্কতা ও সতত চিন্তা-গবেষণায় ব্যাপৃত রেখেছেন, তাদেরকে প্রতিনিয়ত উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহণে রত রেখেছেন। তিনি তাদেরকে নিরবধি নিজ আনুগত্য করার, আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার, যে বিষয় তাকে অসন্তুষ্ট করে এবং ধ্বংস অনিবার্য করে সে বিষয় হতে সতর্ক থাকার এবং অবস্থা ও পরিস্থিতির পরিবর্তন সত্ত্বেও তাতে যত্নবান থাকার তাওফীক দিয়েছেন।
আমি তার প্রশংসা করি, অতিশয় ও পবিত্রতম প্রশংসা, ব্যাপকতম ও অধিকতম বর্ধনশীল প্রশংসা। আর সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, যিনি কৃপানিধি ও দানশীল, চরম দয়াশীল, পরম করুনাময়। সাক্ষ্য দেই যে, আমাদের নেতা মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, তাঁর প্রিয়পাত্র ও বন্ধু, যিনি সরল পথ-প্রদর্শক ও সঠিক দ্বীনের প্রতি আহ্বানকারী। আল্লাহর অসংখ্য দরুদ ও সালাম তাঁর উপর বর্ষিত হোক এবং সকল নবী, সকলের বংশধর এবং সকল নেক বান্দাদের উপরও।
অতঃপর মহান আল্লাহ বলেছেন,
﴿ وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ مَآ أُرِيدُ مِنۡهُم مِّن رِّزۡقٖ وَمَآ أُرِيدُ أَن يُطۡعِمُونِ ٥٧ ﴾ [الذاريات: ٥٦،  ٥٧
আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে। আমি তাদের নিকট হতে জীবিকা চাই না এবং এও চাই না যে তারা আমার আহার্য যোগাবে। (সূরা আয-যারিয়াত: ৫৬-৫৭)
এটি স্পষ্ট ঘোষণা যে, জ্বিন-ইনসান ইবাদতের জন্য সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং তাদের উচিত, সেই কর্মের প্রতি যত্ন নেওয়া, যার জন্য তারা সৃষ্ট হয়েছে এবং বিষয়-বিতৃষ্ণার সাথে ভোগ-বিলাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। যেহেতু পার্থিব জীবন হল ক্ষণস্থায়ী, চিরস্থায়ী নয়। তা হল পারের নাও মাত্র, আনন্দের বসত-বাড়ী নয়। অস্থায়ী পানি পানের ঘাট, চিরস্থায়ী বাসস্থান নয়। এই জন্য তার সচেতন বাসিন্দা তারাই, যারা আল্লাহর ইবাদত-গুযার এবং সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ তারাই, যারা তার প্রতি আসক্তিহীন। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿ إِنَّمَا مَثَلُ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا كَمَآءٍ أَنزَلۡنَٰهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ فَٱخۡتَلَطَ بِهِۦ نَبَاتُ ٱلۡأَرۡضِ مِمَّا يَأۡكُلُ ٱلنَّاسُ وَٱلۡأَنۡعَٰمُ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَخَذَتِ ٱلۡأَرۡضُ زُخۡرُفَهَا وَٱزَّيَّنَتۡ وَظَنَّ أَهۡلُهَآ أَنَّهُمۡ قَٰدِرُونَ عَلَيۡهَآ أَتَىٰهَآ أَمۡرُنَا لَيۡلًا أَوۡ نَهَارٗا فَجَعَلۡنَٰهَا حَصِيدٗا كَأَن لَّمۡ تَغۡنَ بِٱلۡأَمۡسِۚ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ لِقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ٢٤ ﴾ [يونس: ٢٤
দুনিয়ার জীবনের দৃষ্টান্ত তো এরূপঃ যেমন আমরা আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি যা দ্বারা ভূমিজ উদ্ভিদ ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদ্গত হয়, যা থেকে মানুষ ও জীব-জন্তু খেয়ে থাকে। তারপর যখন ভূমি তার শোভা ধারণ করে ও নয়নাভিরাম হয় এবং তার অধিকারিগণ মনে করে সেটা তাদের আয়ত্তাধীন, তখন দিনে বা রাতে আমাদের নির্দেশ এসে পড়ে তারপর আমরা তা এমনভাবে নির্মূল করে দেই, যেন গতকালও সেটার অস্তিত্ব ছিল না। এভাবে আমরা আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করি এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্তা করে। (সূরা ইউনুস: ২৪ আয়াত)
আর এ মর্মে আরও অনেক আয়াত রয়েছে। কবি কত সুন্দরই না বলেছেন,
নিশ্চয় আল্লাহর অনেক বিচক্ষণ বান্দা আছেন,
যাঁরা দুনিয়াকে স্থায়ীভাবে বর্জন করেছেন এবং ভয় করেছেন ফিতনাকে।
দুনিয়া নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে জেনেছেন যে,
তা কোনো জীবের জন্য (চির) বাসস্থান নয়।
তাকে তাঁরা সমুদ্র গণ্য করেছেন
এবং তা পারাপারের জন্য কিশতী বানিয়েছেন নেক আমলকে।
সুতরাং এই যদি তার অবস্থা হয়, যা বর্ণনা করলাম এবং এই যদি আমাদের ও যে জন্য আমরা সৃষ্ট হয়েছি তার অবস্থা হয়, যা পূর্বে উল্লেখ করলাম, তাহলে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তির উচিত যে, সে নিজেকে সৎলোকদের দলভুক্ত করবে, জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ব্যক্তিবর্গের পথ অবলম্বন করবে, ইতোপূর্বে যার দিকে ইঙ্গিত করেছি, তার জন্য প্রস্তুত হবে এবং যার প্রতি সতর্ক করেছি, তাতে যত্নবান হবে। আর এর জন্য সবচেয়ে সঠিক পথ ও নির্ভুল পন্থা হল, আমাদের নবীর সহীহ হাদীসের সাথে আদব প্রদর্শন করা (তার আদর্শ গ্রহণ করা), যিনি পূর্বাপর সকল মানুষের নেতা এবং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক সম্মানীয়। তাঁর উপর এবং সকল নবীগণের উপর আল্লাহর অসংখ্য দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক।
আর আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ﴾ [المائ‍دة: ٢
তোমরা সৎ ও সংযমশীলতার কাজে পরস্পর সহযোগিতা কর। (সূরা আল-মায়িদাহ: ২)
তাছাড়া সহীহসূত্রে প্রমাণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দাহ নিজ ভাইয়ের সাহায্যে থাকে। (মুসলিম, ২৬৯৯)
যে ব্যক্তি কল্যাণের প্রতি পথনির্দেশ করে তার জন্য ঐ কল্যাণ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ হয়। (ইবন হিব্বান)
যে ব্যক্তি সৎপথের দিক আহ্বান করে (দাওয়াত দেয়) সে ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমান সওয়াব লাভ হবে। এতে তাদের সওয়াব থেকে কিছুমাত্র কম হবে না। আর যে ব্যক্তি অসৎ পথের দিকে আহ্বান করে সেই ব্যক্তি ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ গোনাহের ভাগী হবে। এতে তাদের গোনাহ থেকে কিছুমাত্র কম হবে না। (মুসলিম ২৬৭৪)
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছিলেন, আল্লাহর কসম! তোমার মাধ্যমে আল্লাহ যদি একটি লোককেও হিদায়াত করেন, তাহলে তা তোমার জন্য লাল উটনী (আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ) অপেক্ষা উত্তম। (বুখারী ৩৭০১, মুসলিম ২৪০৬ নং)
সুতরাং আমি মনস্থ করলাম যে, সহীহ হাদীস সম্বলিত একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ সঞ্চয়ন করি, যাতে এমনসব বিষয়ের সমাবেশ ঘটবে, যা পাঠকের জন্য আখেরাতের পাথেয় হবে, বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিক আদব ও শিষ্টাচারিতা অর্জন হবে, যাতে উৎসাহপ্রদান, ভীতিপ্রদর্শন এবং পরহেযগার মানুষদের নানা আদবসম্বলিত বিষয়, বিরাগমূলক, আত্মা-অনুশীলন ও চরিত্রগঠনমূলক, অন্তরশুদ্ধি ও হৃদরোগের চিকিৎসামূলক, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সংশুদ্ধি ও তার বক্রতা দূরীকরণমূলক ইত্যাদি আল্লাহ ভক্তদের উদ্দেশ্যমূলক আরও অন্যান্য হাদীস পরিবেশিত হবে।
আর এতে আমি বাধ্যবাধকতার সাথে স্পষ্ট সহীহ হাদীস ছাড়া অন্য হাদীস উল্লেখ করব না এবং যা উল্লেখ করব, তাতে প্রসিদ্ধ ও বিশুদ্ধ হাদীসগ্রন্থের হাওয়ালা দেব। কুরআনে আযীযের আয়াতে কারীমা দিয়ে এর পরিচ্ছেদগুলোর সূচনা করব। শব্দের সঠিক উচ্চারণ এবং নিগুঢ় অর্থ-সম্বলিত ব্যাখ্যার প্রয়োজনবোধে মূল্যবান টীকা-টিপ্পনী ব্যবহার করব। যখন বলব, متفق عليه তখন তার মানে হবে, হাদীসটিকে বুখারী ও মুসলিম (সহীহাইনে) বর্ণনা করেছেন।
আমি আশা করি যে, এ গ্রন্থ যদি পূর্ণাঙ্গরূপ লাভ করে, তাহলে তা যত্নবান পাঠকের জন্য কল্যাণের পথ-প্রদর্শক হবে এবং সকল প্রকার মন্দ ও সর্বনাশী কর্ম থেকে বিরত রাখবে।

আমি সেই ভাইয়ের কাছে আবেদন রাখব, যিনি এ গ্রন্থের কিছু অংশ দ্বারাও উপকৃত হবেন, তিনি যেন আমার জন্য, আমার পিতা-মাতার জন্য, আমার উস্তাদ, সকল বন্ধু-বান্ধব ও সমস্ত মুসলিমের জন্য দোআ করেন। আর আমি মহানুভব আল্লাহর উপর ভরসা করি, তাঁকেই আমার সবকিছু সমর্পন করি, তাঁরই উপর আমি নির্ভর করি, তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক। পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর প্রেরণাদান ছাড়া পাপ থেকে ফেরার এবং সৎকাজ করার (নড়া-চড়ার) কোনো শক্তি নেই।  

শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৫

আমাদের সন্তানেরা মুসলমান থাকবেতো? IUBAT

আমাদের সন্তানেরা মুসলমান থাকবেতো?
বর্তমান যুগে ইসলাম এবং মুসলিদের সাথে সবচাইতে বেশি শত্রুতা পোষণকারী দুইটি দেশ হচ্ছে ইংল্যান্ড এবং আমেরিকা। গণতন্ত্রবাদী এবং ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীদের দ্বারা পরিচালিত ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের এই দুইটি দেশ অনেক মুসলমান দেশ সরাসরি আক্রমন করে হাজার হাজার নিরপরাধ মুসলিমদেরকে হত্যা করেছে। গত সপ্তাহেই ইংল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ২০০৩ সালে মিথ্যা অভিযোগে ইরাক আক্রমন করে তেল সমৃদ্ধ ধনী দেশটিকে ধ্বংস করে হাজার হাজার মুসলিম হত্যা করার জন্যে ক্ষমা চেয়েছে। এছাড়াও, ইংল্যান্ড এবং আমেরিকা অনেক আগে থেকেই সরাসরি বা গোপন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম এবং মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্যে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। যাই হোক, খোলাখুলি শত্রুতার পরেও ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার মতো ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের দেশগুলোতে বসবাসরত মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীরা দাঁড়ি-টুপি এবং বোরখা পড়ে কলেজ ইউনিভার্সিটিগুলোতে পড়াশোনা করতে পারছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারছে। ফ্রান্স, ইতালি এমন ২-১টা নরাধম দেশ ছাড়া, ইসলামের প্রকাশ্য শত্রুরা তাদের নিজেদের দেশে  মুসলিমদের পোশাক নিষিদ্ধ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছেনা। অথচ শতকরা ৮০ভাগ মুসলিম(!) দাবীদার বাংলাদেশে এখন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীরা বোরাখা পড়ে ক্লাস করতে পারছেনা, ছাত্রদের পাঞ্জাবী-টুপি পড়ে ক্লাস করা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পোশাকের কারণে অপমান অপদস্থ ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হচ্ছে, অনৈতিকভাবে পরীক্ষায় নাম্বার কম দেওয়া হচ্ছে এমনকি ফেইল করানো হচ্ছে। অথচ, বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীদের দ্বারা প্রণীত সংবিধানে সকল ধর্মের অনুসারীদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীনতা রয়েছে। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টা, মুসলিম অধ্যুষিত দেশে মুসলিমরাই এখন বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায়, সম্প্রতি IUBAT নামে ঢাকার একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের পাঞ্জাবী-টুপি এবং ছাত্রীদের বোরখা পড়ে ক্লাস করা অফিসিয়ালি(!) নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি তাদের প্রশাসন এই পোশাক পরহিত অবস্থায় কাউকে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে।
কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে ইউনিফর্ম পোশাক পড়া বাধ্যতামূলক করে, তারা নির্দিষ্ট তাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে একটা নির্দিষ্ট পোশাক পড়তে বাধ্য করতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেখানে সাধারণত ড্রেসআপ গেটআপ যার যার ব্যক্তিগত রুচির উপরে ছেড়ে দেওয়া হয়, সেখানে একটা নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের পোশাক যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে নিষিদ্ধ করা আইনত সম্পূর্ণ বেআইনী এবং একটি উস্কানীমূলক ধৃষ্টতা। বর্তমানে কলেজ ইউনিভার্সিটিগুলোতে অনেক ছেলে হাফ প্যান্ট পড়ে, গিটার নিয়ে গান-বাজনা করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে, প্রাকাশ্যে বিড়ি-সিগারেট ও নেশা করছে, মারামারি ও খুনাখুনি করছে, অনেক মেয়েরা বিজাতীয়দের অনুকরণে অর্ধনগ্ন ও যৌন উত্তেজক পোশাক পড়ে পতিতাদের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে, অবৈধ প্রেম-ভালোবাসায় লিপ্ত ছাত্র-ছাত্রীরা নোংরামিতে লিপ্ত হয়ে ক্যাম্পাসগুলোকে কলুষিত করে ফেলছে এইগুলো নিয়ে কোন বাঁধা-নিষেধ নেই, আর নিষিদ্ধ করা হচ্ছে যারা এইগুলো থেকে পবিত্র থাকতে চায় তাদেরকে? আমরা IUBAT ভিসির এমন ধর্মবিদ্বেষী আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং গার্জিয়ানকে এ ব্যপারে এক হয়ে এর বিরোধীতা করার জন্যে আহবান জানাচ্ছি। আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাই, মুসলিম অধ্যুষিত দেশে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যে।
সতর্কতাঃ
১/ বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীদের দ্বারা প্রণীত সংবিধানে অনেক শিরক, কুফর এবং ইসলাম বিরোধী কথা লিখা আছে। যেহেতু, সেখানে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া আছে যা, বর্তমান লংঘন করা হচ্ছে, সেইজন্যে এই প্রসংগটা নিয়ে আসা হয়েছে।

২/ ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী নারী ও পুরুষ মিশ্র শিক্ষা ব্যবস্থায় নারীদের পড়াশোনা করা হারাম। জীবিকা প্রয়োজনের জন্যে পুরুষেরা যদি এমন মিশ্র শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়তে বাধ্য হয় তাহলে, নিজের চরিত্র এবং দ্বীনকে হেফাজত করে চলতে পারলে সেখানে পড়া পুরুষদের জন্যে জায়েজ হবে। এই সমস্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে পড়ে কেউ যদি নাস্তিকতা, বিজাতীয় মতবাদে বিশ্বাসী হয়, বা ইসলাম বিমুখ বেদ্বীন হয়ে উঠে, কিংবা জিনা-ব্যভিচার ও অন্যান্য হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সেটা কোন পুরুষের জন্যেও জায়েজ হবেনা।  

আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি থেকে যারা বঞ্চিত থাকবে

সংযুক্ত আরব-আমীরাত (UAE) এর প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা দেশের খবর প্রকাশ করল শায়খ আব্দুর রাক্বীব মাদানীর এই অনুদিত এই প্রবন্ধটি।
আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি থেকে যারা বঞ্চিত থাকবে
এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা কিয়ামতের দিন দয়াময় আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত থাকবে, তিনি তাদের দিকে তাকাবেন না, আর না তাদের প্রতি সুনজর দেবেন। তাদের সংখ্যা অনেক। [আল্লাহর কাছে দুয়া করি, তিনি যেন আমাদের এই বঞ্চিতের অনিষ্ট থেকে হেফাজতে রাখেন, এর কারণ থেকে দূরে রাখেন এবং সেই বঞ্চিত সম্প্রদায় থেকেও দূরে রাখেন।]
১. যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার ও শপথকে সামান্য বিনিময়ে বিক্রয় করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, তারা আখেরাতের কোনো অংশই পাবে না এবং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না, বস্তুত তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। [আলে ইমরানঃ ৭৭]
এই আয়াতে মিথ্যা কসম করা হারাম এর প্রমাণ রয়েছে, যা মানুষ সামান্য পার্থিব লাভের জন্য করে থাকে। উলামারা এই কসমকে আল্ ইয়ামীন আল্ গামূস বা ডুবানোর কসম আখ্যা দিয়েছেন কারণ; তা এই কসমকারীকে পাপে ডুবায় অতঃপর জাহান্নামে ফেলে। [আল্লাহই আশ্রয়দাতা]
২. পায়ের গিঁট বা টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী ব্যক্তি।
৩. মিথ্যা কসম দিয়ে পণ্য বিক্রয়কারী।
৪. কারো উপকার করে তাকে উপকারের খোঁটাদাতা।
আবু হুরাইরা (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন প্রকার লোক এমন লোক রয়েছে, যাদের সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না, আর না কেয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকাবেন, আর না তাদের পবিত্র করবেন বরং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
আমি (আবু হুরাইরা) বললাম, আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? ওরা তো ক্ষতিগ্রস্ত! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, গিঁটের বা টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী, ব্যবসার সামগ্রী মিথ্যা কসম দিয়ে বিক্রয়কারী এবং কাউকে কিছু দান করার পর তার খোটাদাতা। [মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, নং ২৯৪]
গিঁটের নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরিধানকারী হচ্ছে, সেই ব্যক্তি যে তার লুঙ্গি ও কাপড় এত ঝুলিয়ে পরে যে তার দুই গিঁটের নিচে চলে যায়। যদি সে অহঙ্কার স্বরূপ এমন করে, তাহলে তার জন্য উপরোক্ত শাস্তির ঘোষণা কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না যে, তার লুঙ্গি অহঙ্কার স্বরূপ ঝুলিয়ে পরে। [বুখারি, নং ৫৭৮৩/ মুসলিম] আর যে অহঙ্কার স্বরূপ নয় বরং এমনি ঝুলিয়ে পরে, তাহলে তার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই বাণী প্রযোজ্য : লুঙ্গির যতটা গিঁটের নিচে থাকবে, ততটা জাহান্নামে যাবে। [বুখারিঃ ৫৭৮৭ ] এভাবে হাদিসগুলোর মাঝে সমন্বয় সাধন হবে। আল্লাহই বেশি জানেন। পর্দার উদ্দেশ্যে মহিলাদের এক গজ ঝুলিয়ে পরা বৈধ কিন্তু এর বেশি করবে না।
আর মিথ্যা শপথ করে সামগ্রী বিক্রয়কারী হচ্ছে, এমন ব্যক্তি যে মহান আল্লাহকে তুচ্ছকারী। তাই সে (আল্লাহর কসম দিয়ে) মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে লোকদের নিকট পণ্য বিক্রি করে। আর খোটাদাতা হচ্ছে, যে দান করার পর খোটা দেয়।
৫. যে মুসাফিরকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি থেকে বাধা দেয়।
৬. যে পার্থিব লাভের আশায় কোনো মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে বায়াত (অঙ্গীকার) করে।
আবু হুরাইরা (রাজি.) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন প্রকারের লোকের সাথে মহান আল্লাহ কিয়ামত দিবসে কথা বলবেন না, না তাদের দিকে তাকাবেন আর না তাদের পবিত্র করবেন; বরং তাদের জন্য রয়েছে শক্ত আজাব। ওই ব্যক্তি যার নিকট নির্জন প্রান্তরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি থাকা সত্তেও মুসাফিরকে তা ব্যবহার করা থেকে নিষেধ করে। আল্লাহ তাকে বলবেন, আজ আমি তোমাকে আমার অতিরিক্ত (রহমত) থেকে বঞ্চিত করব, যেমন তুমি তোমার বিনা পরিশ্রমে অর্জিত অতিরিক্ত পানি থেকে বঞ্ছিত করেছ এবং সেই ব্যক্তি যে আসরের পর কোনো ব্যক্তিকে তার সামগ্রী বিক্রয় করে। আল্লাহর কসম খেয়ে বলে আমি এটা এই দামে ক্রয় করেছি। ক্রেতা তার কথা সত্য মনে করে তার কাছ থেকে পণ্য খরিদ করে অথচ সে সত্য নয়। আর সেই ব্যক্তি যে কোনো মুসলিম ইমামের (রাষ্ট্রপরিচালকের) হাতে কেবল পার্থিব উদ্দেশ্যেই বায়াত (অঙ্গীকার) করল; সে যা চায় যদি তাকে তা দেওয়া হয় তো অঙ্গীকার পূরণ করে, আর না দিলে ভঙ্গ করে। [বুখারি, নং ৭২১২/ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, নং২৯৭]
মরুভূমিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি থেকে মুসাফিরকে বাধাদানকারীকে আল্লাহ তার কৃত কর্ম অনুযায়ী বদলা দিবেন। তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যা আছে তার তুলনায় আল্লাহর রহমত ও ফযলের প্রয়োজন অনেক বেশি। আর যে দুনিয়া পাওয়ার আশায় ইমামের হাতে বায়াত করে, সে যেন এই অঙ্গীকারকে পার্থিব উদ্দেশ্যের সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়। আর ইসলামের মূল বিধান শাসকের আনুগত করা, তাকে সদুপদেশ দেওয়া, সাহায্য করা এবং ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা, এসবের অবজ্ঞা করে। সে মুসলিম শাসক ও ইমামদের প্রতারণাকারী স্পষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত।
৭. বৃদ্ধ ব্যভিচারী।
৮. মিথ্যুক বাদশাহ।
৯. অহংকারী দরিদ্র।
আবু হুরাইরা (রাজি.) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা কেয়ামত দিবসে তিন শ্রেণীর লোকের সাথে কথা বলবেন না, আর না তাদের পবিত্র করবেন, না তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টি দিবেন, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি : বৃদ্ধ জেনাকারী, মিথ্যুক রাজা এবং অহংকারী দরিদ্র। [মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, নং২৯৬]
বিশেষ করে তাদের সম্পর্কে উক্ত শাস্তির কারণ বর্ণনায় কাযী ইয়ায বলেন, তাদের প্রত্যেকে উক্ত পাপ থেকে দূরে থাকার পরেও তা করে। যদিও কোনো পাপীর পাপের অজুহাত গ্রহণীয় নয়, কিন্তু একথা বলা যেতে পারে যে, উক্ত পাপ করার ক্ষেত্রে তাদের অতীব প্রয়োজন ছিল না আর না তাদের সচরাচর স্বাভাবিক কোনো অন্য কারণ ছিল। তা সত্তে¡ও তাদের ওই পাপে লিপ্ত হওয়াটা যেন আল্লাহর অধিকারকে তুচ্ছ মনে করা, বিরোধিতা এবং অন্য কোনো কারণ নয় বরং স্রেফ পাপ করার উদ্দেশ্যেই তা করা।
১০. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান।
১১. নারী হয়ে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী।
১২. দাইয়ুস।
আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাজিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলঅইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তিন প্রকার লোকের দিকে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিনে দৃষ্টিপাত করবেন না : পিতা-মাতার অবাধ্য, পুরুষের সদৃশ অবলম্বনকারিনী মহিলা এবং দাইয়ুস। আর তিন প্রকার লোক জান্নাতে যাবে না : পিতা-মাতার অবাধ্য, মদপানে আসক্ত এবং অনুদানের পর খোটাদাতা [মুসনাদ আহমদ, নং ৬১১/নাসাঈ]
পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তানের বিষয়টি স্পষ্ট, কারণ আল্লাহ তায়ালা পিতা-মাতার অধিকারকে মর্যাদা দিয়েছেন, তিনি নিজ অধিকারকে তাদের অধিকারের সাথে সংযুক্ত করেন এবং তাদের উভয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করার আদেশ করেছেন; যদিও তারা কাফের হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং তাদের অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। [তিরমিযী, নং ১৯৬২, আলবানী সহীহ বলেছেন]
পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী বলতে সেই মহিলাকে বোঝায় যে, পোশাক-পরিধানে, চাল-চলনে, কাজে-কর্মে এবং কথার সুরে পুরুষের অনুকরণ করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষ এবং পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী মহিলাদের প্রতি অভিশাপ করেছেন। [বুখারি]
আর দাইয়ুস হচ্ছে, যে নিজ পরিবারে অশ্লীলতা প্রশ্রয় দেয়, তাদের সম্ভ্রম রক্ষায় আত্মসম্মানী নয়, সে মানবিকতাহীন, অপুরুষত্ব, অসুস্থ মস্তিষ্ক এবং দুর্বল ঈমানের অধিকারী। তার তুলনা অনেকটা শূকরের মতো, যে নিজ সম্ভ্রম রক্ষা করে না। তাই ওই সব লোককে সতর্ক থাকা উচিত যারা নিজ পরিবারে এবং তার দায়িত্বে থাকা লোকদের মাঝে অশ্লীলতা বা অশ্লীলতার উপকরণ প্রশ্রয় দেয়। যেমন বাড়িতে এমন টিভি চ্যানেল রাখা যা যৌনতা উস্কে দেয় এবং অশ্লীলতা বৃদ্ধি করে।
১৩. যে তার স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করে : ইবনে আব্বাস (রাজি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা সেই ব্যক্তির দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না যে, পুরুষের সাথে সঙ্গম করে কিংবা স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করে। [তিরিমিযী, নং১১৭৬ আলবানী সহীহ বলেছেন]

আবু হুরাইরা (রাজি.) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,  সে অভিশপ্ত যে স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করে। [আহমদ, আবু দাউদ, নং ২১৬২/ আলবানী সহীহ বলেছেন]

বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫

নারী শিক্ষার আসর (পর্ব-১)

নারী শিক্ষার আসর (পর্ব-১)
- আনসারুস সুন্নাহ
__________________________
একবার মহিলা সাহাবীরা এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বললেন, পুরুষ সাহাবীরা সবসময় আপনার সাথে থাকে, সেইজন্যে তারা বেশি বেশি দ্বীন শিখতে পারছে, (কিন্তু আমরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি)। সুতরাং, আপনি আমাদের জন্য একটা বিশেষ দিন নির্ধারণ করে দিন, যেদিন শুধুমাত্র আমাদের নারীদেরকে আলাদা করে শিক্ষা দিবেন। প্রিয়নবী বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে তোমরা অমুক দিন অমুকের ঘরে সবাই একত্রতি হবে। সুতরাং, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের জন্যে আলাদা একটা দিন নির্ধারণ করে দিলেন, যেইদিন শুধু নারীরা আসবে এবং তিনি তাদেরকে সেইদিন দ্বীনের বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দিতেন।
সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১০১; সহীহ মুসলিমঃ ৪৫; ফাতহুল বারীঃ ১/১৯৫।
বর্তমান যুগের অধিকাংশ নারী ও পুরুষেরা, বিশেষ করে সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থার কলেজ ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা দ্বীন শেখার ব্যপারে মারাত্মক রকমের পিছিয়ে আছে। দ্বীন শিক্ষার ব্যপারে তাদের ত্রুটি এতো প্রকট যে, সর্বগ্রাসী এই ফিতনার যুগে তাদের কতজন ঈমান ইসলাম ধরে রাখতে পারছেন, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। আর যারাও ইসলাম চর্চা করছেন, তাদের অনেকেই তাওহীদ-শিরক, সুন্নত-বিদআত, ফরজ-ওয়াজিবের মতো অত্যাবশ্যকীয় জ্ঞান থেকে বঞ্চিত। যাই হোক, প্রথমোক্ত হাদীসের আলোকে আজকে এই পোস্টে শুধুমাত্র নারী সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা-মাসয়েল তুলে ধরা হোলো।
__________________________
১. একজন পুরুষের যেমন নিজের পছন্দ অনুযায়ী জীবন সংগীনি বেছে নেওয়ার অধিকার আছে, ঠিক তেমনি একজন নারীর অধিকার রয়েছে পছন্দ অনুযায়ী নিজের জীবন সংগী বেছে নেওয়ার। সেইজন্যে পিতা-মাতা জন্যে এটা জরুরী যে, কন্যাকে বিয়ে দেওয়ার পূর্বে পাত্রের ব্যপারে কন্য রাজী আছে কিনা সেটা অবশ্যই জিজ্ঞেস করে জেনে নেওয়া। এবং পাত্রীর অমতে তাকে জোর করে বিয়ে না দেওয়া।
এ ব্যপারে আধুনিক যুগের প্রখ্যাত মুফাসসির ও আলেমে দ্বীন, ইমাম আব্দুর রহমান নাসির ইবন আস-সাদী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
মেয়ের বাবা-মা কোন ছেলেকে বিয়ে করার জন্যে মেয়ের প্রতি জোর করতে পারবে না, এমনকি যদিওবা তারা (ঐ মেয়ের বাবা-মা) ছেলের দ্বীনদ্বারীর ব্যপারে সন্তুষ্ট হয়ে থাকুন।
আল-মাজমুয়াহ আস-সাদীয়াহঃ ৭/৩৪৯।
তবে, নারীদের জন্যে কখনোই উচিৎ হবেনা এই হুকুমকে নিজের গোপন প্রেমিকের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্যে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা। অনেক সময় নারীরা অযোগ্য, ফালতু ছেলের সাথে অবৈধ প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে তার সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্যে গার্জিয়ানের সাথে পীড়াপীড়ি শুরু করে। এই সমস্ত নারীদের আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ, এবং পিতা-মাতাকে সম্মান করা উচিৎ। পিতা-মাতাকে কষ্ট দিয়ে কে কবে সুখী হতে পেরেছে?
__________________________
২. জেনেই হোক বা না জেনে, অনেক নারীকে অত্যাচারী, বেদ্বীন কিংবা লম্পট লোকদের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরে এমন বদমাশ লোকদের কুৎসিত চেহারা প্রকাশ হওয়ার পরেও অনেক বাবা-মা মেয়েকে মুখ বুজে স্বামীর অত্যাচার-নির্যাতন, লাম্পট্য সহ্য করতে বলে, এবং সামাজিক মান-মর্যাদার কথা চিন্তা করে স্বামী থেকে তালাক নিতে বা আলাদা হতে বাঁধা দেয়। এইভাবে অনেক নারী স্বামীর হাতে নির্মমভাবে খুন হয়, ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, বা সহ্যের সীমা অতিক্রম করলে আত্মহত্যা করে বসে কিংবা একসময় নিজেই খারাপ পথে পা বাড়ায়। এমন বাবা-মায়ের আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ এবং সমাজের বোকা লোকদের মান-সম্মানের থেকে নিজের কন্যাকে বেশি ভালোবাসা উচিৎ। ইসলামে তালাক্ব নেওয়া বা খুলা করাকে উৎসাহিত করা হয়নি, কিন্তু মনে রাখা উচিৎ প্রয়োজনে জায়েজ। বাবা-মায়ের উচিৎ স্ত্রীর হক্ক আদায় করেনা এমন অত্যাচারী, লম্পট, বদমাশ লোকদের হাত থেকে কন্যাকে রক্ষা করা এবং ভালো দ্বীনদার ছেলের সাথে বিয়ের ব্যবস্থা করা। 
__________________________
৩. নারীদের জীবনে বড় একটা দুঃখ হচ্ছে প্রাণপ্রিয় সন্তানের মৃত্যু, সেটা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্বে হোক, কিংবা পরে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় একটা পরীক্ষা। এজন্যে আজকে আমি প্রথমে যেই হাদীসটা উল্লেখ করেছিলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের জন্যে আলাদা একটা দিন নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, সেইদিন তিনি তাদের যা যা বলেছিলেন, তার মধ্যে একথাও ছিল যে, তোমাদের মধ্যে যে স্ত্রীলোক তিনটি সন্তান পূর্বেই পাঠাবে (অর্থাৎ, যাদের জীবিত অবস্থায় তাদের তিনটি সন্তান মারা যাবে), সেই সন্তানগুলো (কেয়ামতের দিন) তার জন্য জাহান্নামে যাওয়ার জন্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। তখন জনৈক স্ত্রীলোক বলল, আর কারো যদি দুটি সন্তান মারা যায়? নবীজী বললেন, দুটি দুটি সন্তান মারা গেলেও।
সুতরাং, মা-বোনদের কারো সন্তান মারা গেলে ধৈর্য ধরতে হবে এবং এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলার কাছে সওয়াবের আশা রাখতে হবে।
__________________________

***আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লেখার ইচ্ছা ছিলো, পোস্ট দীর্ঘ হয়ে যাওয়ার কারণে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ আমাদের সকলকে সফলতা দান করুন, আমিন।