‘ইশক’ বা প্রেম হচ্ছে একটি মানসিক ব্যাধি
- আনসারুস সুন্নাহ
___________________________
শায়খুল ইসলাম, ইমাম
ইবনে তাইমিয়াহ (রহঃ) বলেন,
“ইশক বা
প্রেম হচ্ছে একটি মানসিক ব্যাধি। আর যখন তা প্রকট আকার ধারণ করে তখন তা শরীরকেও
প্রভাবিত করে। সে হিসেবে ইশক শরীরের জন্যও একটা ব্যাধি। মস্তিষ্কের জন্যও তা
ব্যাধি। এজন্যই বলা হয়েছে যে, ইশক একটা হৃদয়জাত ব্যাধি। শরীরের
ক্ষেত্রে এ ব্যাধির প্রকাশ ঘটে দুর্বলতা ও শরীর শুকিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে।”
তিনি আরও বলেন, “পরনারীর
প্রেমে এমন সব ফাসাদ রয়েছে যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেও গুনে শেষ করতে পারবে না। এটা
এমন ব্যাধিগুলোর একটি, যা মানুষের দ্বীনকে নষ্ট করে দেয়। মানুষের
বুদ্ধি-বিবেচনাকে নষ্ট করে দেয়, অতঃপর তা শরীরকেও নষ্ট করে।” [মাজমুউল
ফাতওয়াঃ ১০/১২৯-১৩২]
___________________________
‘পরনারীর
প্রতি লোভ’ এবং ‘অবৈধ
প্রেম-ভালবাসার’ ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় সম্পর্কে শায়খুল ইসলাম ইমাম
ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.) বলেন,
“নারী কিংবা
ছোট বাচ্চাদের প্রতি আসক্তি কোন ব্যক্তিকে এমন বিপর্যয়ে নিপতিত করতে পারে, যার
থেকে উদ্ধার করার ক্ষমতা কারো নেই। এর পরিণতি খুবই ভয়াবহ, তার
পুণ্যের ভাণ্ডার একেবারে শূন্য হয়ে যায়। প্রথম পর্যায়ে কারো অন্তরে কারো
চেহারার প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হয়, দ্বিতীয় পর্যায়ে সে তার
ভালবাসায় মগ্ন হয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে সে আস্তে আস্তে নানা অপকর্ম ও অপরাধে
জড়িত হয়ে পড়ে, যা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তবে
সবচেয়ে বড় মসিবত হচ্ছে, আল্লাহর রহমত থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত
হওয়া। কারণ, বান্দা যখন আল্লাহর ইবাদত ও তার প্রতি নিবিষ্ট
চিত্ত থাকে, তখন তার কাছে আল্লাহর মহব্বতের চেয়ে মধুর ও
সুখকর কোন জিনিস হতে পারে না।” (পরনারীর
প্রতি লোভ এবং অবৈধ ভালোবাসার কারণে যে কামনা বাসনার সৃষ্টি হয় তার কারণে বান্দা
তার রব্বের প্রতি ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়)। [মাজমুউল ফাতওয়াঃ খন্ড- ১০, পৃষ্ঠা- ১৮৭]
___________________________
প্রেম-ভালোবাসা
সংক্রান্ত পোস্টগুলির লিংক-
১. প্রশ্নঃ বিয়ে
ছাড়া প্রেম-ভালোবাস/রিলেশান/এফেয়ার করা কি হারাম?
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/708309445868472:0
___________________________
২. প্রেম-ভালোবাসা
আসলে শয়তানের উপহারঃ
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/797759110256838
___________________________
৩. যিনা-ব্যভিচার, প্রেম-ভালোবাসা,
পরকীয়াঃ
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/963858546980226
___________________________
৪. প্রেম-ভালোবাসা
ও অবৈধ সম্পর্কের ফলে জীবনে নেমে আসা কিছু বিপর্যয়ঃ
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/1388309667868443?fref=nf
___________________________
৫. পরকীয়ার প্রধান
কয়েকটি কারণ এবং পরকালীন শাস্তিঃ
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/a.130928300273259.14132.125167817515974/894225517276863/
___________________________
৬. জিনা-ব্যভিচার
সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/1428025973896812:0
___________________________
৭. কোন নারী তার
পিতা বা পিতা জীবিত না থাকলে বৈধ ওয়ালী (দাদা, ভাই বা চাচা, এমন কোন পুরুষ গার্জিয়ানের) অনুমতি ছাড়া পালিয়ে গিয়ে একা একা বিয়ে করতে
পারবেনা। নারী যেমন ওয়ালী অর্থাৎ তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করতে পারবেনা,
আবার কোনো নারীর পছন্দ ছাড়া তার গার্জিয়ান জোর করে কারো সাথে বিয়ে
দিতে পারবেনা।
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/a.130928300273259.14132.125167817515974/1424216514277758/
___________________________
৮. বিবাহের অভিভাবক
ও শর্তাবলী, অভিভাবকের বাধা ও করণীয়ঃ
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/947311705301577
___________________________
৯. যারা
প্রেম-ভালোবাসা নামক অবৈধ সম্পর্কে আছে, তাদের কি করণীয়ঃ
উত্তরঃ প্রথম কথা
হচ্ছেঃ বিয়ে বহিঃর্ভূত যেকোন সম্পর্ক বা যোগাযোগ করা হারাম এবং ফাহেশা কাজের
অন্তর্ভুক্ত। তাদের এই পাপের জন্যে আন্তরিকভাবে লজ্জিত হয়ে তোওবা করতে হবে এবং
তাদের মাঝে যে কোন ধরণের যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। পাপ থেকে মুক্ত হয়ে
নেকীর কাজে অধিক পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হবে, যাতে করে অতীতের পাপের
কাফফারা হয়ে যায়। বিশেষ করে দ্বীন শিখতে হবে এবং আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হতে
হবে।
প্রশ্নঃ তোওবা
কিভাবে করতে হবে?
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/posts/1133930333306379:0
___________________________
দ্বিতীয়তঃ ছেলে
মেয়ে যদি একজন আরেকজনের জন্যে উপযুক্ত হয়, এবং উভয় পক্ষের ‘কুফু’ বা সমতা রক্ষা হয়,
তাহলে ছেলে মেয়ের বাবাকে বিয়ের জন্যে প্রস্তাব দেবে। আর মেয়ে যদি অনুকূল মনে করে, তাহলে
বাবার কাছে ঐ ছেলের জন্যে সুপারিশ করতে পারে। মেয়ের বাবা যদি রাজি থাকে তাহলে
আলহামদুলিল্লাহ। মোহর ধার্য করে শীঘ্রই বিয়ের তারিখ ঠিক করে নিবে, যাতে করে এই শয়তানি দুষ্ট চক্র থেকে তারা বেড়িয়ে আসতে পারে। আর যদি মেয়ের
বাবা আপত্তি করে এবং মেনে না নেয়, তাহলে এনিয়ে বাড়াবাড়ি করা
মোটেও ঠিক হবেনা। একটা কথা মনে রাখতে হবে, এই ছেলে বা মেয়ের
প্রতি আবেগটা সাময়িক, বিয়ে হোক বা নাহোক একসময়ে সেটা এমনিতেই
নষ্ট হয়ে যাবে বা ভাটা পড়বে। কিন্তু এর সূত্র ধরে বাবা-মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে কিছু
করতে চাইলে দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনে পস্তাতে হবে। যাইহোক, বাবা
যদি মেনে না নেয়, তাহলে তাদের মাঝে কোন কিছু নেই - এই তাক্বদীর
মেনে নিয়ে ছেলে অন্য কাউকে বিয়ে করবে এবং মেয়েও তার বাবার সম্মতি অনুযায়ী অন্য
কোথাও বিয়ে করার জন্যে প্রস্তুতি নেবে। আল্লাহ আমাদের প্রবৃত্তিকে তাক্বওয়া দিয়ে
নিয়ন্ত্রন করার তোওফিক দান করুন, আমিন।
___________________________