শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০১৪

২৭ শের রাত্রি শবে ক্বদর এই ধারণা ঠিকনা



২৭ শের রাত্রি শবে ক্বদর এই ধারণা ঠিকনা, বরং শেষ দশকের যেকোন বেজোড় রাত্রিতেই হতে পারেঃ

আমাদের দেশের মানুষ মনে করে, শবে ক্বদর হলো রমযানের ২৭ তারিখ রাতে এটা একটা ভুল ধারণ বিভিন্ন হাদীস একত্রে করে যে মতটা সবচাইতে শক্তিশালী সেটা হলো, রমযানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাত্রির যেকোনো একদিন (২১/২৩/২৫/২৭/২৯) শবে ক্বদর।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
তোমরা রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান কর।
সহীহ বুখারী, অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সোয়াবের আশায় রোযা রাখে।

তবে শেষ সাত দিনের বেজোড় রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যেমন, নিম্নোক্ত হাদীসটিঃ
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, কয়েকজন সাহাবী রামাযানের শেষ সাত রাত্রিতে স্বপ্ন মারফত শবে কদর হতে দেখেছেন। সাহাবীদের এ স্বপ্নের কথা জানতে পেরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমি দেখছি তোমাদের স্বপ্নগুলো মিলে যাচ্ছে শেষ সাত রাত্রিতে। অতঃএব কেউ চাইলে শেষ সাত রাত্রিতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করতে পারে।
সহীহ বুখারী ও মুসলিম। এ মর্মে আরও হাদীস রয়েছে।

কোন কোন সালাফে-সালেহীন সাতাইশ রাত শবে কদর হওয়ার অধিক সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করেছেন। সাহাবীগণের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রাঃ), মুআবিয়া, উবাই ইবনে কাব (রাঃ) এর মতামত থেকে এটাই বুঝা যায়।

কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এভাবে নির্দিষ্ট করে লাইলাতুল কদর হওয়ার কোন হাদীস নাই। তাই উপরোক্ত সাহবীদের কথার উপর ভিত্তি করে বড় জোর সাতাইশে রাতে শবে কদর হওয়াকে অধিক সম্ভাবনাময় বলা যেতে পারে। নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।

সঠিক কথা হলঃ শবে কদর কখনো ২১, কখনো ২৩, কখনো ২৫, কখনো ২৭ আবার কখনো ২৯ রাতে হতে পারে।

সুতরাং শুধু সাতাইশ তারিখ নয়, বরং কোন ব্যক্তি যদি রামাযানের শেষ দশকের উপরোক্ত পাঁচটি রাত জাগ্রত হয়ে ইবাদত-বন্দেগী করে তবে নিশ্চিতভাবে শবে কদর পাবে।

কিন্তু শুধু সাতাইশ রাত জাগলে শবে কদর পাবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই। বরং অন্যান্য রাত বাদ দিয়ে শুধু সাতাইশ রাত উদযাপন করা বিদআতের অন্তর্ভূক্ত। বিশেষ করে আমাদের দেশে যেভাবে শুধু সাতাইশ তারিখ নির্দিষ্ট করে নেয়া হয়েছে সেটা বিদআত ছাড়া অন্য কিছু নয়। তাই বিদআত বর্জন করে সুন্নতী পন্থায় আমল করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।

শবে কদরের বিশেষ দুয়াঃ
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর তাহলে তখন কোন দুয়াটি পাঠ করব? তিনি বললেন, তুমি বলঃ

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى

হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করা পছন্দ করেন। অতঃএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। তিরমিযী, অনুচ্ছেদ, কোন দুয়াটি শ্রেষ্ঠ। তিনি বলেন হাদীসটি হাসান, সহীহ।

যেই আমলগুলো করতে হবেঃ-
. নামায ২ রাকাত ২ রাকাত করে নফল নামায পড়বেন, যতটুকু সম্ভব সুরা ক্বদর বা সুরা ইখলাস এতোবার পড়তে হবে এমন কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই, অন্য যেকোনো নফল নামাযের মতোই ২ রাকাত নফল নামায পড়তে হয়

নিচের আমলগুলো ঋতুবতী নারীসহ সকলেই করতে পারবেনঃ
. কুরআন তেলাওয়াত স্পর্শ না করে ঋতুবতী নারীরাও কুরআন পড়তে পড়তে পারবে, আলেমদের এই মতটাই সঠিক ইন শা আল্লাহ এটা নিয়ে পরে পোস্ট দেওয়া হবে তবে সন্দেহের কারণে কেউ ক্বুরান তেলাওয়াত করতে না করতে চাইলে যেই সমস্ত আলেম হারাম মনে করেন সেটার সাথে একমত হলে, এডমিনের সাথে ঝগড়া করার কিছু নেই কারণ এই বিষয় নিয়ে আলেমদের মাঝে দ্বিমত আছে

. তোওবা করা সারা জীবনের সমস্ত গুনাহর জন্য কান্নাকাটি করে তোওবা করা ও মাফ চাওয়া বাংলা বা আরবী যেকোনো ভাষায়, অতীতের ভুলের জন্য লজ্জিত হয়ে আন্তরিকভাবে ভবিষ্যতে আর না করার সংকল্প নিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে আরবীতে করতে চাইলে - আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি ও তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করছি, এতোটুকু পড়ে বা ক্বুরান হাদীসে বর্ণিতে অন্য দুয়া দিয়ে তোওবা করা যাবে

. দুনিয়া ও আখেরাতের সমস্ত কল্যানের জন্য দুয়া করা নিজের জন্য, মাতা পিতা বা ভাই বোন, অন্য যেকোন জীবিত ও মৃত মুসলমানদের জন্য দুয়া করতে হবে

. জান্নাতুল ফিরদাউস পাওয়ার জন্য দুয়া করতে হবে

. যিকির আযকার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ১০০বার, ৩৩ বার সুবাহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহাদাহু লা শারীকালাহু...... ১০ বার ১০০ বার করে সহ, লা হাউলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ আরো দুয়া পড়ার জন্য হিসনুল মুসলিম দেখুন মুখস্থ না পারলে বই খুলে পড়তে পারবেন আরবী দুয়াগুলো না পারলে বাংলাতেই পড়ুন


. দুরুদ পড়া দুরুদের ইব্রাহীম বা নামাযে যে দুরুদ পড়া হয় সেটা পড়াই সবচাইতে বেশি সওয়াব আর দুরুদের হাজারী, লাখী, জামিল, মাহী, দুরুদে আকবর এইরকম যত্তগুলো দুরুদ দেওয়া আছে ওযীফার বেদাতী কিতাবে এইসবগুলো দুরুদ হচ্ছে বানোয়াট বেদাতী দুরুর, এর ফযীলত যা দেওয়া আছে সমস্তটাই হচ্ছে ধোঁকা। এইগুলো পড়া বেদাত ও হারাম।