সোমবার, ৭ জুলাই, ২০১৪

প্রসংগঃ হিল্লা বিয়ে, বোকা লোকদের আল্লাহর সাথে প্রতারণার চেষ্টা!



প্রসংগঃ হিল্লা বিয়ে, বোকা লোকদের আল্লাহর সাথে প্রতারণার চেষ্টা!

হিল্লা বিয়ে কি?
তালাক দেওয়ার নিয়ম হলো – একবার তালাক দেওয়া হলো, এর মাঝে স্বামী-স্ত্রী যদি আবার ফিরে যেতে চায়, তাহলে ইদ্দত শেষ হওয়ার আগেই ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে, তারা ফিরে যেতে পারবে কিন্তু নতুন করে বিয়ে করে নিতে হবে। এইভাবে আবার যদি তালাক দেয়, পরে আবার ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু এর পরে তৃতীয় তালাক দেওয়া হয়ে গেলে আর ফিরে যাওয়ার সুযোগ নাই। কারণ এই ক্ষেত্রে যে এই কাজ করবে সে ছেলেখেলা হিসেবে নিয়েছে।

তাই ঐ নারী তার জন্য আর হালাল হবেনা যতদিন পর্যন্ত না ঐ নারীর স্বাভাবিকভাবে অন্য কোথাও বিয়ে হচ্ছে, তারপর স্বাভাবিক ভাবে যদি ঐ নারীর স্বামী মারা যায় অথবা তাকে ডিভোর্স দেয় তাহলে ঐ নারী তার প্রথম স্বামীর জন্য বিয়ে করা হালাল হবে। এখানে আসলে এইরকম নির্বোধ টাইপের পুরুষের জন্য শাস্তি স্বরূপ তার স্ত্রীকে ঘরে নেওয়ার একটা বাঁধা সৃষ্টি করা হয়েছে।

কিন্তু কিছু মূর্খ, কাটমোল্লা এটাকে পাশ কাটিয়ে নিয়ম বানিয়ে দিয়েছে।

এইরকম তিন তালাক দিয়ে দিলে কেউ যদি তার স্ত্রীকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায় তাহলে তার স্ত্রীকে এমন কারো কাছে বিয়ে দিবে, যে তার স্ত্রীর সাথে এক রাত মিলিত হয়ে তালাক দিয়ে দিবে। অর্থাত, একটা পুরুষকে ভাড়া করে নিয়ে আসবে, যে এক রাতের বিনিময়ে তার প্রাক্তন স্ত্রীকে তার জন্য হালাল করে দিবে (নাউযুবিল্লাহ)।

এইরকম এক রাতের জন্য কাউকে বিয়ে দিয়ে তাকে তার আগের স্বামীর জন্য হালাল করে দেওয়ার জন্য যে বিয়ে দেওয়া হয় তাকে - হিল্লা বিয়ে বলে।

এটা একটা শয়তানী জঘন্য কাজ! তাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, এই কাজ যে করায় যে করে তাদের প্রতি আল্লাহর লানত। আমাদের দেশের কাটমোল্লা – এদেরকে বলতে হয় “মূর্খ বন্ধুর চেয়ে বুদ্ধিমান শত্রুও ভালো।”. এরা ইসলাম চায় – কিন্তু নিজের মূর্খতার কারণে এরা ইসলামের ক্ষতি করে যাচ্ছে।

“অভিশপ্ত হিল্লা বিয়ে”
******************
ছোট বেলায় আমি খুব টিভি দেখতাম (বিটিভি) + পত্রিকাও পড়তাম (জনকন্ঠ)। দুইটি প্রচার মাধ্যমেই চরম মাত্রায় ইসলাম বিরোধী সংবাদ ও অনুষ্ঠান প্রচার করা হতো, এখনো হচ্ছে। অনেক সময় প্রচার মাধ্যমগুলোতে সঠিক ইসলামের চিত্র তুলে না ধরে, ধর্মের নামে ফাসেক মূর্খ মুসলিমদের কিছু কার্য-কলাপকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হতো যাতে করে আমার মনে একটা সংশয়ের জন্ম দিতো। মনে হতো ইসলাম ধর্ম কি আসলেই এইরকম? আর যদি আসলেই এমনই হয়, তবে এমন নিকৃষ্ট কাজ কিভাবে আমাদের জীবনে গ্রহনযোগ্য হতে পারে? এদের মধ্যে শীর্ষস্থানে ছিলো “হিল্লা বিয়ে”। এর প্রভাব এখনো আমার উপরে এমনভাবে বিদ্যমান যে, “হিল্লা বিয়ে” এই শব্দটা শুনলেই এখনো আমার গা ঘৃণায় রি রি করে উঠে।

আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, ইসলামকে আল্লাহ আমাদের জন্য অত্যন্ত পছন্দনীয় করে দিয়েছেন ও এর মধ্যে কোনো সংকীর্ণতা রাখেন নি। মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ

“তিনি (আল্লাহ) তোমাদেরকে বাছাই করেছেন (পূর্বের সকল উম্মতের উপরে, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও তাঁর উপর নাযিল করা শরিয়তের অনুসারী করার মাধ্যমে) এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি।”
সুরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৭৮।

আমাদের দেশে বিদাতপন্থী অনেক মুল্লা মৌলভী কোরান হাদীস না পড়ে, হানাফী মাযহাবের কিতাব কুদুরীর রেফারেন্স দিয়ে বলে, হিল্লা বিয়ে হারাম না, মাকরুহ।

অথচ, ইসলামে হিল্লা বিয়ে হলো লানত বা অভিশাপের কাজ, যা সম্পূর্ণভাবে হারাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“যারা হিল্লা বিয়ে করবে ও যার জন্য হিল্লা বিয়ে আয়োজন করা হবে, আল্লাহ তাদেরকে লানত বা অভিসম্পাত করেছেন”।
আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ।

হিল্লা বিয়ে ইসলামের শত্রুদের মিথ্যা প্রচার-প্রচারণার অন্যতম একটি মজবুত অস্ত্র। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই লেকচার ভিডিওটা দেখতে পারেন, ইনশাল্লাহ এক ঘন্টার মধ্যে আপনার সারা জীবনের সংশয় কেটে যাবে ও ইসলামের শত্রুদের ও বিদাতপন্থী আলেমদের উপযুক্ত জবাব দিতে পারবেন।


http://www.youtube.com/watch?v=5FnJ8lSfwKc