রবিবার, ৬ জুলাই, ২০১৪

বিশ্বকাপ খেলা দেখা হারাম

আরব দেশের লোকেরা কিছু করলেই সেইটা সহীহ হয়ে যায়না!?

প্রশ্নঃ টাকা দিয়ে যেই ফুটবল খেলা হয় (যেমন-বিশ্বকাপ ফুটবল), এইটা যদি “জুয়া” ও হারাম হয়, এইটা দেখা যদি হারাম হয় তাহলে সৌদি আরব ফুটবল খেলে কেনো? সৌদি আরবে ফুটবল খেলা দেখানো হয় কেনো?

উত্তরঃ ভাই মহান আল্লাহ বলছেনঃ

“তোমার উপর যা নাযিল করা হয়েছে সেইটার অনুসরণ করো”।

কুরান হাদীসে এমন কোন কথা নাই, সৌদি আরবের লোকেরা যা করে সেইটার অনুসরণ করো। সৌদি আরবে দুনিয়ার সবচাইতে ভালো মানুষ, খাটি মুসলমান আছে, আবার দুনিয়ার সবচাইতে খারাপ নিকৃষ্ট মানুষেরাও আছে। সৌদি আরবে বহু মানুষ আছে দাড়ি রাখেনা, বেপর্দা চলাফেরা করে, সিগারেট খায় – এতো এতো সৌদিরা এইগুলো করে বলে এইগুলো কি জায়েজ হয়ে যাবে নাকি?

তবে, হ্যা – কুরান হাদীসে এমন কথা আছে, আলেমদের আনুগত্য করো।

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, আনুগত্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা ক্ষমতাসীন, তাদের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি কখনো তোমরা কোন বিষয়ে মতবিরোধ কর, তাহলে সেই বিষয়টা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর, যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর সত্যিকারের বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।”
সুরা আন-নিসাঃ ৫৯।

আর সৌদি আরবে দুনিয়ার সবচাইতে বড় আলেম ওলামা ও মাশায়েখরা আছেন, যদি মানতেই হয় – তাহলে সত্যিকারের ওলামায়ে রব্বানীদের আনুগত্য করতে হবে।

নিচে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় ফতোয়া বোর্ড থেকে শ্রেষ্ঠ আলেমদের ফতোয়া দেখুন। এর পরে সিদ্ধান্ত নেন, সৌদি আরবের মূর্খ লোকদের হারাম কাজকর্ম করবেন নাকি, আলেমদের ফতোয়া মেনে নিবেন?
___________________________

বিষয়ঃ বিশ্বকাপ ফুটবল/ক্রিকেট খেলা দেখা “হারাম”।

প্রশ্নঃ খেলাধূলা দেখার হুকুম কি, যেমন বিশ্বকাপ ও অন্যান্য খেলাধূলা?

উত্তরঃ ‘ফুটবল ম্যাচ’ যেইগুলো টাকা অথবা এমন পুরষ্কারের জন্য খেলা হয় - এইগুলো হারাম, কারণ এটা হচ্ছে জুয়া।
(টাকার বিনিময়ে ফুটবল/ক্রিকেট খেলা, এইগুলো ‘জুয়া’) কারণ হচ্ছে, ইসলাম অনুমতি দেয়নি এমন খেলা ছাড়া অন্য কোন খেলার জন্যে পুরষ্কার নেওয়া জায়েজ নয়। আর ইসলাম অনুমতি দিয়েছে পুরষ্কার নেওয়ার এমন খেলা হচ্ছে
- ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা
-- উটের দৌড় প্রতিযোগিতা
--- তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা

(এই ৩টা খেলাধূলা ছাড়া অন্য যেকোন খেলার জন্য পুরষ্কার নেওয়া হারাম, এবং কেউ পুরষ্কার নিলে সেটা জুয়া বলে গণ্য হবে)।

এই নীতির উপরে ভিত্তি করে, এই খেলাতে অংশগ্রহণ করা হারাম, এবং যে কেউ জানে যে, এইগুলো পুরষ্কারের জন্য খেলা হয় তার জন্য জায়েজ নয় – এই খেলা দেখা। কারণ, এই খেলাতে অংশগ্রহণ করা মানে এইগুলোকে সমর্থন করা।

কিন্তু, এই খেলা যদি পুরুষ্কারের জন্য খেলা না হয়, এবং কাউকে আল্লাহর হুকুম যেমন সালাত ও অন্য ইবাদত থেকে অমনোযোগী না করে, এবং এইগুলোর সাথে কোন প্রকার হারাম কাজ যেমন-
- আওড়াহ প্রকাশ করা,
-- নারী-পুরুষ ফ্রী মিক্সিং,
--- গান-বাজনা
ইত্যাদি জড়িত না থাকে, তাহলে এমন খেলায় অংশগ্রহণ করতে বা এই খেলাগুলো দেখতে কোন সমস্যা নেই।

নিশ্চয়ই একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সমস্ত ক্ষমতার উতস।
আল্লাহ নবী মুহা’ম্মাদ, তার পরিবার ও তার সাহাবীদের প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষণ করুন।

ফাতওয়া আল-লাজনাহ আদ-দাই’য়িমাহঃ ১৫/২৩৮।
স্থায়ী ফাতওয়া কমিটির ফাতওয়া নং– ১৮৯৫১

স্থায়ী ফাতওয়া কমিটির সদস্যবৃন্দঃ-
১. সদস্যঃ আল্লামাহ, শায়খ বাকর আবু জায়েদ রাহিমাহুল্লাহ
২. সদস্যঃ আল্লামাহ, শায়খ সালেহ আল-ফওজান হাফিজাহুল্লাহ
৩. ডেপুটি চেয়ারম্যানঃ আল্লামাহ, শায়খ আব্দুল আজিইবনে আবদুল্লাহ আলে-শায়খ হাফিজাহুল্লাহ
৪. চেয়ারম্যানঃ ইমাম” আব্দুল আজি ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে বাজ রাহি'মাহুল্লাহ

মূল ফতোয়ার লিংকঃ-