বুধবার, ৯ জুলাই, ২০১৪

রোযা যারা রাখতে পারছেন না তাদের মাসয়ালা

রোযা যারা রাখতে পারছেন না তাদের মাসয়ালাঃ

১. অতি বৃদ্ধ, স্থায়ীভাবে অসুস্থ (ক্যান্সার রোগী), বা শারীরিক সামর্থ্য নেই, যাদের ভবিষ্যতে সুস্থতা বা রোযা রাখার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার আশা করা যায়না তারা রোযা না রেখে ‘ফিদিয়া’ দেবেন – ফিদিয়া হচ্ছে মিসকীনকে খাদ্য দেওয়া। একটা রোযার জন্য একজন মিসকীনকে একবেলা খাবার দিতে হবে। সবগুলো রোযা শেষে একবারে বা প্রতিদিনেরটা প্রতিদিন ফিদিয়া দিলেও হবে। কেউ যদি রান্না করে খাওয়াতে না চায় তাহলে, কাচা খাবার দিবে (চাল অথবা গম) আধা সা’ যার ওজন হচ্ছে ‘প্রায়’ দেড় কেজি। সুতরাং একটা রোযার জন্য দেড় কেজি চাল কোন মিসকিনকে দিলে ফিদিয়া আদায় হয়ে যাবে। ইচ্ছা করলে আলাদা আলাদা মিসকীনকে বা একটা মিসকীন পরিবারকে সব ফিদিয়া দেওয়া যাবে।

২. গর্ভবতী নারী ও যেই নারী সন্তানকে দুধ খাওয়ানঃ
যে দুগ্ধবতী কিংবা গর্ভবতী নারী সাওম পালনের কারণে নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এমতাবস্থায় তিনি সিয়াম পালন করবেন না; সাওম ভঙ্গ করবেন। কারণ, আনাস ইবন মালেক আল-কা’বী রাদিয়াল্লাহু আ’নহুর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
“আল্লাহ তাআ’লা মুসাফিরদের সালাত অর্ধেক করেছেন। আর গর্ভবতী, স্তন্যদানকারিনী ও মুসাফির থেকে সিয়াম শিথিল করেছেন।”
আবূ দাঊদঃ ২৪০৮; নাসাঈঃ ২২৭৫; তিরমিযীঃ ৭১৫; ইবন মাজাহঃ ১৬৬৭।
যে কদিন তারা সিয়াম ত্যাগ করেছেন শুধুমাত্র ওই সিয়ামগুলো কাযা করা আবশ্যক। যখন তাদের জন্য কাযা করা সহজ হয় এবং শঙ্কা দূর হয়ে যায় তখনই তা কাযা করবে। যেমন অসুস্থ ব্যক্তি যখন সুস্থ হবে তখনই কেবল তার কাযা করবে।

৩. ঋতুবতী নারী ও সন্তান জন্মদানের পরে নিফাসওয়ালী নারীর জন্য রোযা রাখা হারাম এবং তার জন্য ওয়াজিব হচ্ছে – পরবর্তীতে মিস হওয়া ঐ দিনগুলোর জন্য কাযা আদায় করে নেওয়া। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, প্রতি বছরই কিছু বোন রোযা কাযা রেখে পরের রোযায় পৌঁছে যান, যারা সারা বছরেও ৫-৬টা রোযা রাখতে পারেন না। নিঃসন্দেহে এরা উদাসীন ও নিজের প্রতিই যুলুমকারী। পড়াশোনা, চাকুরী, পরীক্ষা – কাযা আদায় করতে না পারার জন্য এইগুলো কোন গ্রহনযোগ্য ওযর নইয়, আর তার উপরে যদি হয় – হারাম কাজের ক্ষেত্র – তাহলেতো আরো বড় অপরাধ!