এক
ভাই প্রশ্ন করেছেন, ক্বুরানে আল্লাহ বলেছেন “তোমরা রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর।” [সুরা বাকারাহঃ ১৮৭]
এখন
আমরা ইফতার করি মাগরিবের সময়, সন্ধ্যা বা সন্ধ্যার আগেই, এখন আমাদের রোযাগুলো কি ঠিক
হচ্ছে? সন্ধ্যা আর রাত তো কোনভাবেই এক হতে পারে না, সন্ধ্যা শেষ হবার পরই রাত আসে…?
উত্তরঃ
এটা নিয়ে মুফাসসিরিন একরাম অনেক কথা বলেছেন, তবে পাঠকদের সুবিধার্থে আমি সংক্ষেপে সহজ
ভাষায় কিছু কথা বলছি। ক্বুরআনুল কারীমের আয়াত বুঝতে হয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর ‘সুন্নাহ’র আমল অনুসারে। কারণ, ক্বুরানুল কারীম নাযিল
হয়েছিলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপরে,
এজন্য কোন আয়াতের অর্থ কি, কোন আয়াত কিভাবে ‘আমল’ করতে হবে,
সেই ব্যপারে আমাদের মাঝে তিনিই সবচেয়ে বেশি জানতেন। আল্লাহ তাআ’লা ক্বুরানুল কারীম সরাসরি ‘বই’ আকারে না
পাঠিয়ে একজন মানুষকে ‘রাসুল’ হিসেবে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর উপর নাযিল করেছেন এর উদ্দেশ্য
হচ্ছে, যাতে করে কোন আয়াতের অর্থ কি এবং সেটা কিভাবে আমল করতে হবে, সেটা মানুষদের
মাঝে নির্বাচিত ও মনোনীত একজন ব্যক্তি (রাসুল) যদিনি নিজে মানুষকে আমল করে তা
দেখিয়ে দেবেন ও শিক্ষা দেবেন। আল্লাহ তাআ’লা যখন
বলেছেন, “তোমরা রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর” – এই আয়াতের আলোকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ইফতার করেছেন মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হলেই, এবং তাঁর
সাহাবাদেরকেও আদেশ করেছেন সূর্য ডোবার পরেই ইফতারি করার জন্য। ‘ইসলামী শরিয়াহ’ অনুযায়ী,
সূর্য ডোবার পর থেকেই অর্থাৎ মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই ‘রাত’ শুরু হয়,
যদিওবা তখনো সূর্যের আলো না মিলিয়ে পুরোপুরি অন্ধকার না হোক। এনিয়ে সহীহ হাদীসগুলো
জানার জন্য আপনার সুরা বাকারার ১৮৭ নাম্বার আয়াত ও সুরা বনী ইস্রাইলের ৭৯ নাম্বার
আয়াতের তাফসীরে দেখুন, ‘তাফসীর ইবনে
কাসীর’ থেকে। উল্লেখ্য, বিভ্রান্ত জাতি যারা নিজেদের ‘শিয়া’ ও ‘আহলে ক্বুরান’ নামে পরিচয়
দেয় এবং নিজেদের মুসলমান বলে দাবী করে, (আসলে তারা ক্বুরানের অমান্যকারী দুইটি
জাতি), তারা ‘ইয়াহুদী’দের দেখাদেখি আমাদেরকে রাতের অন্ধকার হলে ইফতারি করার জন্য
বলে। এরা দাবী করে তারা ক্বুরান মানে, কিন্তু হাদীস বা সুন্নাহ মানেনা। এই জাহেল
লোকেরা এটা বুঝেনা ক্বুরানেই আল্লাহ আদেশ করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদেশ ও নিষেধ মানার জন্য। এখন, নবীর কথা না মানলে সেটা
যে ক্বুরানের কথা না মানার সমান, এই সহজ কথাটা তাদের ব্রেইনে ঢুকেনা।