বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০১৫

সবার প্রথম ‘তাওহীদ’ এর জ্ঞান অর্জন করুনঃ

সবার প্রথম তাওহীদ এর জ্ঞান অর্জন করুনঃ
-     আনসারুস সুন্নাহ  
__________________________
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ ও নারীর উপরে ফরয।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীসটি হাসান।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকাল অধিকাংশ মুসলমান নারী ও পুরুষেরা দ্বীন শিক্ষা করার ফরয দায়িত্বকে অবহেলা করেছে, ফলে সমাজে নিজেকে মুসলমান দাবী করে কিন্তু ফাসিক্ব, জালিম, বেনামাযীর সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বীন শিক্ষা করার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে তাওহীদ সম্পর্কে জানতে হবে। এ প্রসংগে ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর কিছু মূল্যবান কথা।
__________________________
বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ (কোন আমল) কিভাবে করেছো, এটির উপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু সেই আমল কেন করতে হবে এ বিষয়টির প্রতি তেমন কোন গুরুত্বই দেয়না। তারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুসরণের ব্যাপারে খুঁটিনাটি বিষয় জানতে চায়। কিন্তু আকীদাহ (ধর্মীয় বিশ্বাসের) উপরে কোন গুরুত্ব দেয়না। দুনিয়াবি বিষয়ে মানুষ খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। অথচ তার অন্তর আল্লাহ (আক্বীদাহ, ইখলাছ ও তাওহীদের বিষয়) সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাফেল। মূলতঃ দেখা যায় কতিপয় মানুষ বর্তমানে দুনিয়া পূজারী হয়ে গেছে। অথচ সে টেরও পাচ্ছে না। অনেক মানুষ আল্লাহর সাথে শিরকে লিপ্ত হয়েছে। অথচ সে সেটা অনুভবও করতে পারে না। আকীদার বিষয়টি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আলেম সমাজ পর্যন্ত অনেকেই গুরুত্ব প্রদান করে না। এ বিষয়টি খুবই ভয়াবহ। অবশ্য বিনা আমলে শুধু মাত্র আকীদার উপরে গুরুত্ব দেয়াও ভুল। কারণ আমল হল আকীদা সংরক্ষণের জন্য প্রাচীর স্বরূপ। আমরা রেডিও-টিভি এবং পত্র-পত্রিকায় শুনতে পাই যে, পরিচ্ছন্ন আকীদাই হল দ্বীন। আমল না করে এভাবে শুধুমাত্র আকীদার উপরে গুরুত্ব দেয়াতে দ্বীনের কিছু কিছু হারাম বিষয়কে হালাল করে নেয়ার আশংকা রয়েছে। এই যুক্তিতে যে, আকীদা ঠিক আছে।
মোট কথা এই যে, মানুষের উপর আকীদার বিষয়গুলো শিক্ষা করা ওয়াজিব (আবশ্যক)। যাতে করে তারা আল্লাহর নাম, তাঁর গুণাবলী এবং কর্মক্ষমতা ও তাঁর বিধানাবলী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে পারে। সে যেন নিজে বিভ্রান্ত না হয় এবং অপরকেও বিভ্রান্ত না করে। তাওহীদ এর জ্ঞান হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান। এ জন্য বিদ্বানগণ ইলমে তাওহীদকে ফিকহে আকবার বা সর্বশ্রেষ্ঠ ফিকহ বলে নাম রেখেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন।
দ্বীনের জ্ঞানের মধ্যে তাওহীদের জ্ঞানের গুরুত্ব সর্বপ্রথম। তাই মানুষের উপর আবশ্যক হল, এ বিষয়টির উপর গুরুত্ব প্রদান করবে যে, কিভাবে সে তাওহীদের জ্ঞান অন্বেষণ করবে এবং কোন উৎস থেকে তা অর্জন করবে। প্রথমে সন্দেহ মুক্ত ও সুস্পষ্ট বিষয়গুলোর জ্ঞান অর্জন করবে। অতঃপর বিদ্‌আত ও সন্দেহ পূর্ণ বিষয়গুলোর শিক্ষা অর্জন করার পর সঠিক আকীদার আলোকে তার উত্তর দিবে। আকীদার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোর জ্ঞান অবশ্যই কুরআন, সুন্নাহ এবং সাহাবীগণের বক্তব্য অতঃপর তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ীনে কেরাম এবং পরবর্তী যুগের নির্ভরযোগ্য আলেমগনের লেখনী ও বক্তব্য থেকে গ্রহণ করতে হবে। তাদের মধ্যে থেকে শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া এবং তাঁর সুযোগ্য ছাত্র ইবনুল কাইয়্যিমের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ফতোয়া আরকানুল ইসলামঃ ঈমান অধ্যায়, প্রশ্ন নং ৬০।

__________________________