শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৫

বিতির সালাতের পরে দুই রাকাআ’ত নফল সালাতের বিবরণ

বিতির সালাতের পরে দুই রাকাআত নফল সালাতের বিবরণ
- আনসারুস সুন্নাহ
_________________________
রাতে ঘুমানোর পূর্বে কেউ যদি বিতির সালাত পড়ে নেয়, আর তাহাজ্জুদ পড়ার জন্যে মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠতে পারবে কিনা এনিয়ে নিশ্চিত না হয়তাহলে বিতির পড়ার পরে দুই রাকআত নফল সালাত পড়ে নিতে পারে। এর ফলে, সে যদি তাহাজ্জুদ পড়তে না পারে তাহলে এই দুই রাকাআত তার জন্যে যথেষ্ঠ হবে।
ইমাম মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্ম দ্বারা প্রমানিত হওয়ার কারণে বিতিরের পরে দুই রাকআত নফল সালাত আদায় করা যায়। (এ ব্যপারে শুধু তাঁর কর্মই নয়) বরং, উক্ত দুই রাকাআত সালাত আদায় করার জন্যে তিনি তাঁর উম্মতকে নির্দেশ করে বলেছেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই এই (সফরে) রাত্রি জাগরণ ভারী ও কষ্টসাধ্য। সুতরাং, তোমাদের কেউ যখন বিতির পড়বে তখন সে যেন দুই রাকাআত নফল সালাত পড়ে করে নেয়। অতঃপর সে যদি রাতে জাগতে পারে (তাহলে ভালো), আর নয়তো (তাহাজ্জুদ হিসেবে) এই দুই রাকাআত তার জন্যে যথেষ্ঠ হবে।  
সহীহ ইবনে খুজাইমাঃ ১১০৬; দারেমীঃ ১৫৫৫; হাদীসটি সহীহ; সিলসিলাহ সহীহাহঃ ১৯৯৩।
এছাড়াও এনিয়ে আরো দলিল রয়েছেঃ সহীহ মুসলিমঃ ৭৩৮; আবু দাউদঃ ১৩৪০; নাসাঈঃ ১৭১৮; ইবনে মাজাহঃ ১১৯১; হাদীসের সনদ সহীহ।
_________________________
একটি প্রশ্নের উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা বিতিরকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত হিসেবে নির্ধারণ করো।
সহীহ বুখারীঃ ৯৯৮; সহীহ মুসলিমঃ ৭৫১।
এখানে যেই আদেশ দেওয়া হয়েছে সেটা ঐচ্ছিক, আবশ্যিক নয়। সে হিসেবে কেউ যদি বিতিরকে রাতের শেষ সালাত বানায় এবং এর পরে কোন ধরণের নফল সালাত না পড়ে, এটা উত্তম। কিন্তু কেউ যদি চায় বিতিরের পরে অন্য নফল সালাত পড়তে, এটা জায়েজ আছে। হারাম (নিষিদ্ধ) বা মাকরুহ (অপছন্দনীয়) হবেনা। এই ফতোয়া দিয়েছেনঃ
১. ইমাম আন-নববী রাহিমাহুল্লাহ, দেখুন তাঁর ফতোয়ার গ্রন্থ মাজমুঃ ৩/৫১২।
২. ইমাম মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ), তাঁর তারাবীহ ও ইতিক্বাফ গ্রন্থের বিতির পরবর্তী দুই রাকাআত সালাত এর হাশিয়া।
_________________________
নিয়তঃ এই সালাতের আলাদা কোন নিয়ত বা দুয়া নেই। ক্বিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ বা রাতের ২ রাকাত নফল সালাত পড়ছি, মনে মনে এই নিয়ত করে অন্য স্বাভাবিক সালাতের মতো করেই দুই রাকআআত নফল সালাত পড়বেন।
ক্বিরাতঃ এই দুই সালাতের প্রথম রাকআআতে সুরা যিলযাল এবং দ্বিতীয় রাকআতে সুরা কাফিরুন পড়া সুন্নাত।
সহীহ ইবনে খুজাইমাঃ ১১০৪; মুসনাদে আহমাদঃ ২২৩০০। সিফাতু সালাতিন নাবীঃ পৃষ্ঠা ১২৪।
 _________________________

[সমাপ্ত]