রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৪

ফযরের ২ রাকাত সুন্নত



ফযরের নামাযের সময় মসজিদে অনেককে দেখা যায়, আযানের জন্য ইকামত দেওয়া হয়ে গেছে অথবা জামাতে নামায পড়ানো হচ্ছে, আর তারা সুন্নত নামায পড়ছেন। অনেকের স্পর্ধা এতো বেশি যে, মসজিদে এসে দেখে ইমাম সাহেব ফরয নামায পড়াচ্ছেন, আর তারা জামাতে শরীক না হয়ে আলাদা সুন্নত পড়া শুরু করে?

নামায কি নিজের ইচ্ছামতো পড়লে কবুল হবে নাকি, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর তরীকা মোতাবেক পড়লে কবুল হবে??

ফরয নামাযের জন্য ইকামত দেওয়া হয়ে গেলে অন্য কোনো নফল বা সুন্নত নামায সম্পূর্ণ হারাম, সুন্নত বিরোধী!!

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যখন ইকামত দেওয়া হয়, তখন ফরয ছাড়া অন্য কোন নামায নেই 
সহিহ মুসলিম, হাদীস নং- ১৫৩১ 

এখন যদি কেউ বলেআমি হানাফী মাযহাবের আর আমার মাযহাবে আছে ফযরের সুন্নত পড়া যাবে

আমি বলবো, আপনি আসল হানাফী মাযহাব অনুসরণ করছেন না, আপনি আসলেহানাফী মাযহাবনাম দিয়ে অন্য কারো মাযহাব অনুসরণ করছেন!!

কারণ ইমাম আবু হানীফা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, “ইযা সাহহাল হাদীস, ফাহুয়া মাযহাবি” – জেনে রাখো যখন কোনো সহীহ হাদীস পাবে সেইটাই আমার মাযহাব

এখন, সহীহ হাদীস মোতাবেক ফরয নামাযের জন্য ইকামত দেওয়া হয়ে গেলে আর কোনো সুন্নত নামায চলবেনাসুতরাং ইমাম আবু হানীফার মাযহাবও সেটাই হবে আর আপনি উলটা কাজ করেহানাফী মাযহাবহওয়ার দাবী করবেন, আপনি নিজেই বিবেচনা করুন আপনি কতটুকু সত্যিকারে হানাফী মাযহাব অনুসরণ করছেন? 

কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তার জন্য দুঃখিত আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে সুন্নত জানানো

বিঃদ্রঃ অনেকে মনে করেন, ফযরের সুন্নত নামায আগে না পড়লে, ফরয বাদে আর পড়া যাবেনা

এধারণাটা ঠিকনা!!

যদি ফযরের ফরয নামাযের পর ওয়াক্ত থাকে তাহলে সুন্নত পড়া যাবে 

আর ওয়াক্ত না থাকলে সূর্য ওঠার পর পড়া যাবে 

কায়েস বিন মর (রাঃ) বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) (ফযরের নামাযের জন্য) বের হয়ে আসলেন আর ইকামত দেয়া হলো আমি তাঁর (সাঃ) সাথে ফযরের নামায পড়লাম রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নামায শেষ করে দেখলেন আমি নামায পড়ছি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বললেন, ধীরে কায়েস! দুই রাকাত এক সাথেই? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমি ফযরের আগে দুই রাকাত পড়িনাই তখন রাসুলুল্লাহনা, তাহলে পরে ঠিক আছে
আবু দাউদের বর্ণনায় আছে, “অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নীরব থাকলেন
সুনানে আত-তিরমিযী ৪২২, আবু দাউদ ১২৬৭

এই হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে, ফযরের নামাযের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামায পড়তে না পারলে, ফরয নামাযের পরেও পড়া যাবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) চুপ থাকা মানে তিনি নীরব থেকে কায়েস (রাঃ) কে মৌন সম্মতি দিলেন আর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মৌন সম্মতি মানে হলোসুন্নাহ 

আল্লাহ আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কুরআন সুন্নাহ মেনে জীবন পরিচালনা করার তোওফিক দান করুন, আমীন ইয়া রাব্বুল লামীন


***মসজিদে যেকোনো নামাযের আগে লক্ষ্য করবেন কতটুকু সময় বাকি আছে, ২-১ মিনিট সময় যাতে করে অন্তত ২ রাকাত পড়া যাবেনা, তাহলে সুন্নত নামায শুরু করবেন না। সুন্নত পড়া শুরু করবেন যদি এতটুকু সময় হাতে থাকে যে ২ রাকাত শেষ করতে পারবেন। আর কখনো যদি এমন হয় সুন্নত পড়া অবস্থায় ইকামত দেওয়া শুরু করলো, তাহলে যদি এমন হয় ২য় রাকাতে রুকুর পরে সেজদাতে বা বৈঠকে আছেন, একটু সময় নিলেই নামায পূর্ণ করে ফেলতে পারবেন তাহলে দ্রুত নামায পূর্ণ করে সালাম ফেরাবেন। আর যদি হয় ১ম রাকাতে বা মাত্র ১ম রাকাত শেষ হলো তাহলে নামায ছেড়ে দিয়ে জামাতে শরীক হবেন।