তাকদীর
সম্পর্কিত আয়াতঃ
“পৃথিবীতে
এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না, কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই
কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। এটা, (তাকদীর লিখে রাখা হয়েছে)
এজন্যে যাতে তোমরা যা হারাও তার জন্যে দুঃখিত না হও, এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তার জন্যে উল্লসিত না হও।”
সুরা
হাদীদঃ ২২-২৩।
প্রাসংগিক
কিছু কথাঃ
তাকদীর
লিখে রাখা হয়েছে, তারপরেও সহীহ হাদীসে তাকদীরের কিছু বিষয়ের পরিবর্তনের কথা পাওয়া
যায়...
১.
সবচাইতে আশ্চর্যজনক একটা বিষয় হচ্ছে স্বপ্ন ও তার ব্যখ্যা করা। অনেক সময় স্বপ্নের
ব্যখ্যা যেই ভাবে করা হয় ঠিক সেইভাবেই হতে পারে, সেটা ভালো বা খারাপ দুটোই হতে
পারে। যেমন কেউ স্বপ্নে দেখল হাতি এটার অর্থ ধ্বংস বা মৃত্যু হতে পারে (কারণ সুরা
ফীল বা হাতির কাহিনীর সাথে এই দুইটি বিষয় জড়িত) এখন কেউ যদি হাতি স্বপ্ন দেখার পরে
কারো কাছে এর অর্থ জানতে চাইলো আর সে বললো তোমার মৃত্যু বা ধ্বংস হবে, এমন হতে
পারে তার এই কথার কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। এইজন্য নেককার, বুদ্ধিমান ও
কল্যানকামী ছাড়া অন্যকারো কাছে স্বপ্নের কথা বলা নিষেধ। আর খারাপ অর্থের দিকে
ইঙ্গিত করে এমন স্বপ্নের অর্থ খারাপ করা যাবেনা, সেটাকেও ভালো ব্যখ্যা দিতে হবে
অথবা চুপ থাকতে হবে।
এর
ব্যখ্যা হলো – এটাও আল্লাহ আগেই লিখে রেখেছেন, তাকে আল্লাহ এই স্বপ্ন দেখাবেন, সে
অমুকের কাছে যাবে – সে এই ব্যখ্যা করবে এবং সেটা সত্যি হবে।
২.
আত্মীয়দের সাথে ভালো ব্যবহারে রিযিক ও আয়ু বৃদ্ধি পায় – এটা সত্যি। আল্লাহ আগেই
জানতেন এই লোক তার আত্মীয়দের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখবে, তাই পুরষ্কার স্বরূপ আগেই
অতিরিক্ত আয়ু রিযিক লিখে রাখা হয়েছে।
বিঃদ্রঃ
১+২ সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত।
তাকদীর সম্পর্কে গুরুত্ত্বপূর্ণ একটি হাদীসঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “সবকিছুই তাকদীরের অংশ (অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে
নির্ধারিত), এমনকি কারো অলস হওয়া অথবা কর্মঠ হওয়া”।
সহীহ আল-জামি’ ৪৫৩১।
বিঃদ্রঃ তাই বলে অলসতা বা গাফিলতি কোনো অজুহাত হতে পারেনা,
বিশেষ করে আল্লাহর বেঁধে দেওয়া হুকুমের বিষয়গুলোতে। কারণ, আল্লাহ যাকে যেভাবেই
সৃষ্টি করে থাকেন না কেনো, তিনি সকলকেই আদেশ করে বলেছেন, “হে আদম সন্তানেরা! তোমরা
তোমাদের রব্বের কাছে সাক্ষাত করার পূর্ব পর্যন্ত তার পথে কঠোর পরিশ্রম ও মেহনত করে
যাবে”।
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের উপরে বোঝা চাপিয়ে দেন না। সুতরাং,
আল্লাহ যাকে যেভাবেই সৃষ্টি করে থাকেন না কেনো – বান্দা হিসেবে তার সাধ্যের বাইরে
কোনো কিছুই তার উপরে চাপিয়ে দেন নাই। হয়তো কেউ কোনো কাজ অতি সহজেই করে ফেলবে, হয়তো
কারো জন্য একটু কঠিন করে দিবেন – তাকে পরীক্ষা করার জন্য।
আল্লাহ আমাদের সকলকে তার সন্তুষ্টি মোতাবেক জীবন যাপন করার
তোওফিক দান করুন, আমীন।
তাকদীর সম্পর্কে শায়খ আলবানী (রহঃ) এর গুরুত্বপূর্ণ একটি ফতোয়া
-