আহলে সুন্নত, শিয়া-সুন্নী, আহলে বায়ত কি?
বিসমিল্লাহ, ওয়ালহা'মদুলিল্লাহ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ'লা রাসূলিল্লাহ। আম্মা বা'দ।
আহলে সুন্নাহ কি?
“আহলে
সুন্নাহ” – অর্থ হচ্ছে সুন্নাহর অনুসরণকারী। যারা শিরক-বিদআত মুক্ত থেকে পরিপূর্ণভাবে সত্যিকার অর্থে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহর অনুসরণ করে, ঠিক সেইভাবে যেইভাবে সাহাবারা করেছিলেন তারাই হচ্ছে প্রকৃত আহলে সুন্নাহ, যাদেরকে সংক্ষেপে অনেক সময় “সুন্নী” বলা হয়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন - এই উম্মত ৭৩টা দলে ভাগ হবে - যার মধ্যে ৭২টা দলি জাহান্নামে যাবে। আর একটা মাত্র দল জান্নাতে যাবে। নাজাত প্রাপ্ত সেই দলটা হলো - যারা মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবারা যে তরীকার উপরে ছিলেন সেটাকে অনুসরণ করবে – শুধু মাত্র তারাই নাজাত পাবে। তাবেয়ীদের যুগ থেকে বিভিন্ন ভ্রান্ত মতবাদের দল বের হয়, যেমন খারেজী, শিয়া, মুহতাজিলা ইত্যাদি। সেই ভ্রান্ত দলগুলো থেকে সত্যিকারের নাজাতপ্রাপ্ত দলকে পরিচয় দেওয়ার জন্যে তাবেয়ীদের যুগ থেকেই “আহলে সুন্নাহ” বলে পরিচয় দেওয়া শুরু হয়। যেমন - তাবে'ঈ ইমাম ইবনু সীরীন র'হিমাহুল্লাহ বলেনঃ
"মানুষেরা আগে হাদীসের সনদের ব্যাপারে জিগ্যেস করতোনা। কিন্তু যখন ফিতনাহ এসে পড়ল, তখন তারা বলা শুরু করলেন, তোমাদের হাদীসের রাবী বা বর্ণনাকারীর নাম বল। এরপর কেবল "আহলুস সুন্নাহ"
ব্যক্তিদের হাদীস গ্রহণ করা হত আর "আহলুল বিদ'আ হলে গ্রহণ করা হতনা।"
সহীহ মুসলিম, মুক্বাদ্দিমাহ অধ্যায়।
উল্লেখ্য, কেউ নিজেকে আহলে সুন্নাহ দাবী করলেই সেসুন্নী হয়ে যায়না। ভারত বাংলাদেশে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বা সুন্নী পরিচয় দেয় এমন কিছু মানুষ আছে (আসলে তারা রিজভী/ব্রেলভী) – এরা হচ্ছে খালেস কবরপূজারী, পীরপূজারী। আজমীর, শাহজালাল, বায়েজীদ বোস্তামী ওয়ালা, মাইজভান্ডারী, দেওয়ানবাগী,কুতুববাগী - এরাই হলো সেই এই দলের নেতা। এদের ঈমান আছে কিনা সেটাই আলোচনার বিষয়।
আরো কিছু
দল আছে যারা নিজেদেরকে আহলে সুন্নাহ বলে পরিচয় দেয় – কিন্তু তাদের মাঝেও সুন্নাহ থেকে দূরত্ব দেখা যায়। বহুল প্রচলিত এমন দুটি দল হলো – তাবলিগ জামাত ও জামাতে ইসলামী। এরা মুসলিম কিন্তু এদের মাঝে অনেক ভুল-ভ্রান্তি আছে যা সংশোধন করে নেওয়া তাদের জন্য "ওয়াজিব"।
তাই শুধু
আহলে সুন্নাহ নাম দাবী করলেই হবেনা। ঈমান ও আমলে কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবীদের মতো হলেই প্রকৃত আহলে সুন্নাহ হওয়া যাবে।
আহলে বায়ত
কি?
“আহলে
বায়ত” অর্থ হলো ঘরের বাসিন্দা বা যারা ঘরে থাকে, আহল বা পরিবারের লোকজন। এখানে আহলে বায়ত বলতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পরিবারের লোকজন, তাঁর সেই আত্মীয়দেরকে বোঝানো হয়েছে যাদের জন্য সাদাকাহ খাওয়া হারাম ছিলো। তারা হচ্ছেন, খাদিজাহ (রাঃ), আলী (রাঃ), আয়িশাহ (রাঃ), ফাতিমাহ (রাঃ), হাসান(রাঃ), হুসাইন (রাঃ) ও অন্যান্যরা। কুরআন ও হাদীসে “আহলে বায়তদের” অনেক মর্যাদার কথাবলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, “শিয়া” নামক ভ্রান্ত একটা দল দাবী করে তারা আহলে বায়তের অনুসারী, বিশেষ করে তারা আলী (রাঃ) এর অনুসারী হওয়ার দাবী করে। এটা ডাহা মিথ্যা কথা, যেমন মিথ্যা কথা আমাদের দেশের কবরপূজারীরা করে থাকে নিজেদের আহলে সুন্নাহ বলে পরিচয় দিয়ে। শিয়া নামক এই দল যারা নিজদের আহলে বায়তের অনুসারী বলে দাবী করে – এরা আসলে আহলে বায়তের চরম শত্রু। হাসান ও হুসাইন (রাঃ) এর হত্যার সাথে এদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ছিলো। এরা মা আয়িশাহ (রাঃ) এর নামে জঘন্য অপবাদ দেয় (নাউযুবিল্লাহ) ।
আর আস্তে
আস্তে পরবর্তীতে আহলে বায়তের অনুসারী হওয়ার দাবীদার এই শিয়াদের মাঝে (এরা আসলে ইয়াহুদী মুনাফেক আব্দুল্লাহ ইবনে সাবাহর অনুসারী) মারাত্মক রকমের শিরকি, কুফুরী আকীদা ঢুকেছে। আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশে কবরপূজারীদের বাপ-মা আসলে এই শিয়ারা। অনেক শিয়াদের আকীদা ইয়াহুদী, খ্রীস্টানদের চেয়ে জঘন্য। আর ইতিহাস স্বাক্ষী, শিয়ারা আহলে সুন্নাহর সাথে ইয়াহুদীদের থেকে বেশি শত্রুতা করে আসছে, আজ পর্যন্ত। সর্বশেষ, সিরিয়ার ঘটনা তার একটা প্রমান।