মাসবুক
কিভাবে নামায পুরা করবেন?
মাসবুক
অর্থ হলো যিনি দেরী করে অর্থাত ১ বা ২ রাকাত পরে জামাতে শরীক হয়েছেন।
মাগরিবের
নামাযে দেরীতে জামাতে শরীক হলে বাকী নামায কিভাবে পড়বে?
যদি
এমন অবস্থায় পায় যে ইমাম ২য় রাকাতের রুকুতে আছে আর সে রুকু পেয়ে গেলো, তাহলে সে ঐ রাকাত
পেলো। আর যদি রুকু না পায় তাহলে সে ঐ রাকাত পায়নি (ফতোয়া আরকানুল ইসলামঃ শায়খ উসাইমিন)।
যদি
২য় রাকাতের রুকু পায় তাহলে সে ইমামের সাথে ২য় ও ৩য় রাকাতে বৈঠকে বসবে, ইমাম সালাম ফিরালে
সে দাঁড়িয়ে তার ৩য় রাকাত পড়ে নেবে। এই রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে অন্য সুরা না পড়লেও
চলবে – কারণ এটা তার ৩য় রাকাত।
আর
যদি ইমামের ২য় রাকাতের রুকু না পায়, তাহলে সে ২য় ও ৩য় রাকাতে বৈঠকে বসবে। ইমাম সালাম
ফিরালে সে দাঁড়িয়ে তার ২য় রাকাত থেকে পড়া শুরু করবে। এই ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে প্রথম রাকাতে
সুরা ফাতিহার পরে অন্য একটা সুরা পড়বে, আর এই এক রাকাতের পড়েই সে বৈঠকে বসবে, কারণ
ইমামের সাথে তার ১ রাকাত আর দাঁড়ানোর পরে একাকী ১ রাকাত = ২ রাকাত হলো। বৈঠক শেষ করে
এর পরে আবার দাঁড়িয়ে ৩য় রাকাত পড়ে নেবে। এই রাকাতে সুরা ফারিহার পরে অন্য সুরা না পড়লেও
চলবে – কারণ এটা তার ৩য় রাকাত।
#
এই ক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ ৪টা বৈঠক হবে। এটা যেকোনো নামাযে সর্বোচ্চ বৈঠক সংখ্যা – ৪টা!!! #
আর
যদি ইমামের সাথে ৩য় রাকাতে যোগ দেয় এমন অবস্থায় যে সে রুকু পেয়ে গেলো, তাহলে তার অবস্থা
হবে উপরে বর্ণিত নিয়ম যেখানে সে ২য় রাকাতে রুকুর পরে যোগ দিলো। অর্থাত সে এক রাকাত
পেলো, ইমাম সালাম ফিরালে একাকী আরো দুই রাকাত পড়ে নেবে। এইক্ষেত্রে সে একাকী এক রাকাত
পড়ে প্রথম বৈঠক করবে। প্রথম বৈঠক শেষ করে তৃতীয় রাকাত পড়বে
আর
যদি ৩য় রাকাতের রুকু না পায়, তাহলে সে কোনো রাকাতই পেলোনা ইমামের সাথে। ইমাম সালাম
ফিরালে সে একাকী ৩ রাকাত পড়ে নেবে, সাধারণ যে নিয়ম মাগরিবের নামায পড়ার, ঠিক সেই নিয়মেই।
উল্লেখ্য,
দেরীতে গেলেও ইমামকে যে অবস্থায় পায়না কেনো সে ঐ অবস্থাতে আগে তাকবীরে তাহরীমা “আল্লাহু আকবার” বলে বুকে হাত বেঁধে নামায শুরু করার পরে, আবার
আল্লাহু আকবার তাকবীর দিয়ে ইমাম যা করে তার অনুসরণ করবে। এই অবস্থায় কেউ যদি তাকবীরে
তাহরীমার “আল্লাহু আকবার” না বলে সরাসরি আল্লাহু আকবার বলে রুকু বা সিজদায়
চলে যায় তাহলে তার নামায হবেনা। কারণ তাকবীরে তাহরীমা “আল্লাহু আকবার” বলে নামায শুরু করা ফরয।
এইভাবে
যোগ দিলে সে যদি কোনো রাকাত নাও পায় তবুও ইন শা’ আল্লাহ সে জামাতের সওয়াব পেয়ে যাবে। আর কেউ
যদি এমন অবস্থায় যায় যে কোনো রাকাত পাবেনা আর সে জানে পরে অন্য আরেকটা জামাত হবে, অথবা
নিজেরা ২-৩ জনে মিলে জামাত করবে, তাহলে তার ইচ্ছা সে পরে জামাতের জন্য অপেক্ষা করতে
পারে বা এই জামাতের সাথেই শরীক হতে পারে।
৪
রাকাত নামাযে মাসবুকের নামাযের নিয়মঃ
যদি
২য় রাকাতে অন্তত রুকু পেয়ে যান তাহলে – ইমাম
সালাম ফেরালে তিনি দাঁড়িয়ে শুধু এক রাকাত পড়বেন, কারণ তার এক রাকাতই মিস হয়েছিলো। এক
রাকাত পড়েই শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরাবেন। এই রাকাতে সুরা ফাতেহার পরে অন্য সুরা পড়া
লাগবেনা।
যদি
২ রাকাত পরে শরীক হন, তাহলে ইমাম সালাম ফিরালে একাকী ২ রাকাত পড়বেন। এই ২ রাকাতে সুরা
ফাতেহার পরে অন্য সুরা লাগবেনা।
৩
রাকাত পরে শরীক হলে, ইমাম সালাম ফিরালে আপনি ৩ রাকাত পড়বেন। এই ক্ষেত্রে আপনি ১ রাকাত
একা পড়ে প্রথম বৈঠক করবেন। পরে ২ রাকাত।
যে
বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখা জরুরীঃ
১.
ইমামের সাথে রুকু পেলেন কিনা?
রুকু
পেলে – এমন অবস্থায় যে ইমাম আল্লাহু আকবার বলে রুকু
করে দাঁড়ানোর আগেই আপনি রুকুতে গেলেন এবং স্বাভাবিকভাবে একবার সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’যীম বলার সূযোগ পেলেন – তাহলে আপনি রুকু পেলেন। কিন্তু ইমাম রুকু শেষ
করে দাঁড়িয়ে গেছেন, আর আপনি একাকী রুকু করে মনে করলেন রুকু পেয়ে গেলেন – এইটা ভ্রান্ত ধারণা। এমন করে পরে এক রাকাত না
পড়লে পুরো নামায বাতিল হয়ে যাবে। এইরকম বা তাড়াহুড়া দৌড়ে গিয়ে রুকু ধরা, বা দ্রুত জামাতের
বাইরে পেছনের কাতারে একাকী রুকু ধরা – এই
সবগুলো কাজ নিষিদ্ধ। স্বাভাবিক ভাবে যাবেন, যতটুকু পান ইমামের সাথে ততটুকু পড়েন, পরে
একাকী বাকি নামায পূর্ণ করে নেবেন। আপনি যেখানেই ধরেন, জামাতের সওয়াব পেয়ে যাবেন, কিন্তু
তাড়াহুড়া করে নামায ধরে হারাম কাজ করবেন না, এতে নামাযের খুশু ও খুজু নষ্ট হয় + এতে
ভুল করে নামায নষ্ট হওয়ার আশংকা আছে।
যে
কথা বলছিলাম – রুকু পেলে সেটাকে আপনি এক রাকাত বলে গণ্য করবেন।
২.
আর আপনার যখন ২ রাকাত হবে তখন আপনি দুই রাকাতের জন্য প্রথম বৈঠক করবেন।
দুঃখিত
হয়তো বুঝাতে পারলাম না। বুঝাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সত্যিই দুঃখিত। আপনারা স্থানীয় আলেমের
সাথে কথা বলে জেনে নিবেন, কারণ এইগুলো শিক্ষা করা আপনার জন্য ফরয।