দাজ্জাল কে? দাজ্জালকে আমরা চিনবো কিভাবে?
কেয়ামতের আগে দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে আল্লাহ দাজ্জালকে দিয়ে পরীক্ষা করবেন।
দাজ্জাল একজন মানুষ, যে ঈসা (আঃ) এর মতো অলৌকিক কাজ করে দেখাবে।
এই জন্য তাকে বলা হয় “মাসীহিদ-দাজ্জাল” অর্থাৎ প্রতারক বা মিথ্যা
মাসীহ।
দাজ্জালের পরিচয়ঃ
দাজ্জাল একজন তরুন মানুষ যার গায়ের রঙ হবে লালচে। তার চুল হবে ঘন ও কোঁকড়ানো।
তার কপাল হবে চওড়া ও বুক হবে প্রশস্ত। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তার ডান চোখ
হবে কানা আর বাম চোখ হবে আংগুরের মতো ফোলা, দেখে মনে হবে চোখ যেনো চোখের কোঠর থেকে
বের হয়ে আসছে। দুই চোখের ঠিক মাঝখানে লেখা “কাফ”, “ফা”, “রা” (كافر, অর্থাৎ কাফের) – এই তিনটি
অক্ষর লেখা থাকবে যার অর্থ হলো কাফির আর এই লেখা শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকল ইমানদারেরাই
পড়তে পারবে।
দাজ্জালের আরেকট বৈশিষ্ট্য হবে তার কোনো ছেলে মেয়ে থাকবেনা বা সে হবে নিঃসন্তান।
দাজ্জাল প্রথমে নিজেকে “মাসীহ” বা ঈসা (আঃ) এর মতো অলৌকিক ক্ষমতার দাবী করবে,
আর পরে সে নিজেক সরাসরি “আল্লাহ” হিসেবে দাবী করবে। কারণ, সে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী
(যাতে মানুষকে পরীক্ষা করা যায়) অনেক অলৌকিক কাজ করে দেখাবে। সে আকাশের মেঘকে হুকুম
করবে আর আল্লাহর ইচ্ছায় বৃষ্টি হবে, আর যে এলাকার মানুষ তাকে আল্লাহ হিসেবে মানবেনা
সেখানে বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে দুর্ভিক্ষ হবে।
দাজ্জালের অন্য অলৌকিক কাজের মধ্যে থাকবে তার সাথে রুটির পাহাড় ও পানির নহর
থাকবে যা সে মানুষের মাঝে বিতরণ করবে।
সে মৃত মানুষকে জীবিত করে দেখাবে, সে একজনকে বলবে আমি আল্লাহ আমাকে মানো। এর
প্রমান হিসেবে সে একটা জিনকে তার বাবা মার সুরতে হাজির করবে আর ঐ জিন তার বাবা মা সেজে
বলবে – দাজ্জালই হচ্ছে আল্লাহ, তাকে আল্লাহ বলে মেনে নিতে বলবে।
দাজ্জাল কখন আসবে?
এক হাদীসে বলা হয়েছে, মানুষ যখন দাজ্জাল নিয়ে আলোচনা করবেনা তখন দাজ্জাল
আসবে।
অর্থাৎ মানুষ যখন দাজ্জাল নিয়ে কথা বলবেনা, খতিব সাহবেরা মসজিদে
খুতবা দেবেনা, আলেমরা তাকে নিয়ে ওয়াজ করবেনা বা বই লিখবেনা। আর মানুষ তখন জানবেনা
যে দাজ্জাল নামক একজন মানুষ একটা বড় ফেতনা সৃষ্টি করবে। আর তাই অজ্ঞ মানুষেরা খুব
সহজেই দাজ্জালের ফেতনায় ঈমান হারিয়ে চির জাহান্নামী হবে (নাউযুবিল্লাহ)।
দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকার উপায়?
দাজ্জাল কখন আসবে কেউ জানেনা, হতে পারে কালকে সকালেই দাজ্জাল চলে আসতে পারে
আবার হতে পারে এক হাজার, দুই হাজার বছর পরে আসবে। তবে কেয়ামতের পূর্বে বহু ছোটো নিরর্দশন
ইতিমধ্যেই দেখা যাওয়ায়, সমস্ত আলেমরাই এখন মানুষকে সতর্ক করছেন – দাজ্জাল আসার সময়
খুব কাছে চলে আসছে। তাই আমাদেরকে সতর্কতা নিতে হবে এর ফেতনা সম্পর্কে। সুরা কাহাফের
প্রথম ১০ আয়াত যে মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। এছাড়া রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) এর শেখানো, নামাযের শেষে দাজ্জালের ফেতনা থেকে আশ্রয় চাওয়ার দুয়া করতে হবে।
সর্বশেষ, ঈসা (আঃ) দুনিয়াতে আবার আসবেন এবং তিনি তীরবিদ্ধ করে দাজ্জালকে হত্যা
করবেন।
আরো জানতে এই ফতোয়াটা পড়ুনঃ
http://islamqa.info/en/ref/8806