ফেইসবুক না ফেতনাবুক?
ফেইসবুক মাধ্যমটার সমালোচনার
শেষ নেই। এমনকি এই তথাকথিত ইসলামী পেজের নামেও অনেক ফেতনা ও পাপাচার হচ্ছে। এই ব্যপারে
কিছু গাইডলাইন দেওয়া হলো – অবহেলা করবেন না। পাপে জড়িয়ে পড়া মানুষের জন্য সবচাইতে বড়
বিপদ – কারণ এর প্রতিদান জাহান্নাম, নাউযুবিল্লাহ!
***নারীদের চেহারা দেখিয়ে
(হিজাবী/আধা হিজাবী) ছবি দেখানো সম্পূর্ণ হারাম!
অনেক নারী বেপর্দা ছবি দিয়ে
কমেন্ট করে। অনেক পুরুষ এতে তাদের দিকে আকৃষ্ট হয়ে তাদের প্রোফাইলে যায়, তাদেরকে ফ্রেন্ড
রিকুয়েস্ট পাঠায়, তাদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে...এইভাবে কত যে কাহিনী ও কত পাপ
হচ্ছে আল্লাহ ভালো জানেন। নারীরা ছবি দিয়ে কমেন্ট করবেন না, গায়ের মাহরাম পুরুষদেরকে
ইসলামী সুরতে ফ্রেন্ড লিস্টে ঢুকাবেন না। আপনি দ্বীন শিখবেন আলেমদের কাছে থেকে তাদের
বই পুস্তক পড়ে, ওয়াজ লেকচার শুনে – আপনার কোনো ছেলেকে ফলো করার দরকার নাই। আর কোনো
পুরুষেরও দরকার নাই, ইসলাম শেখার নাম করে নারীদের ফলো করার। এই লোকটা মূর্খ, সহীহ আকীদার
আলেম ওলামাদের কাছে না গিয়ে যে নারীদের পেছনের ঘুরে (বাস্তবেই হোক, ফোনে যোগাযোগ করে,
মেয়ে বন্ধুর কাছ থেকে বা ফেইসবুকে ফ্রেন্ড হয়ে) সে আহলুল হাওয়া – প্রবৃত্তি পূজারী।
এ আসলে নারীদের প্রতি আকৃষ্ট, দ্বীনের নামে আসলে মুখোশ পড়ে আছে।
১. নায়ক-নায়িকার ছবি প্রোপিক
দিবেন না। এখনো ক্ষেতের মতো ফিল্ম স্টারের ছবি দিয়ে রাখেন? ভালো করে ইসলাম শিখুন...
২. অশ্লীল ছবি প্রোপিক দিবেন
না। কি বাজে দেখা যায়, অশ্লীল ছবি দিয়ে রেখেছেন, আবার কমেন্ট করেন ইন শা’ আল্লাহ, মা
শা’ আল্লাহ। দুইমুখী নীতি, কমস সেন্সের বিষয়।
৩. নারীর ছবি দিবেন না। এটা
ফেইসবুকে সবচেয়ে বড় ফেতনা! নিজেদেরকে ফেতনাবাজের কাতারে ফেলবেন না। হিজাব পর্দা নারীদের
সম্মান। ফেইসবুকে থার্ডক্লাস পুরুষদের লাইক পাওয়ার লোভে নিজেদের সম্মানকে বিসর্জন দেবেন
না।
*অনেকে মনে করে মাথায় রুমাল
বেঁধে মুখ খোলা নারীদের ছবি দেওয়া জায়েজ?...তথাকথিত অনেক ইসলামিক পেজে দেখি নারীদের
ছবি আপলোড করে লাইক পাওয়ার আশায়...ভুয়া হিজাবীর ছবিতে অজ্ঞ মুসলমানেরা লাইক দেয়, শেয়ার
করে, কমেন্ট করে মা শা’ আল্লাহ!
লা হা’উলা ওয়ালা ক্বুওয়্যাতা
ইল্লা বিল্লাহ...যেমন এডমিন তেমন ফলোয়ার!
৪. পুরুষের ছবিও দিবেন না।
দুনিয়ার সব নারী আপনার মাহরাম না। আপনার ছবি দিয়ে নারীদের ফেতনায় ফেলবেন না।
৫. দাঁড়ি বিহীন পুরুষের ছবিতো
আরো মারাত্মক। নিজের পাপ কাজের হাজার হাজার স্বাক্ষী রাখছেন!
৬. বাচ্চাদের ছবি দেবেন না,
বাচ্চাদের নযর লাগতে পারে।
৭. কার্টুনের ছবি দেবেন না।
অনেকে দেখি এমন গার্ল কার্টুন দিয়ে রাখে বেপর্দা! অনেকে ভৌতিক, উদ্ভট, দেখতে খারাপ
ছবি দিয়ে রাখে। কি আজিব...!
৮. কোনো প্রাণীর ছবি দিবেন
না।
৯. প্রাণীর ছবি দিয়ে, অশ্লীল,
অভদ্র, গালি সংবলিত ছবি দিয়ে কমেন্ট করবেন না। পেজে কুরআন ও হাদীস প্রচার করার চেষ্টা
করা হয়। দয়া করে সেই পরিবেশ নষ্ট করবেন না।
১০. প্রোপিক হিসেবে ন্যাচারাল
বিউটি, বন, পাহাড় এইসব প্রাণহীন বস্তুর ছবি দিবেন।
১১. গায়ের মাহরামদের সাথে যোগাযোগ
করবেন না, প্রাইভেট মেসেজে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনি বিবাহিত হলে সুখ দুঃখের
আলাপ সব স্বামী বা স্ত্রীর সাথে করুন। বিবাহিত না হলে ধৈর্য ধরুন, আল্লাহর কাছে দুয়া
করুন। আর বেশি কঠিন মনে হলে রোযা রাখুন। অবৈধ সম্পর্ক যোগাযোগ, মিথ্যে ভালোবাসার পেছনে
ছুটবেন না। পুরুষদের জন্য নারীর চাইতে বড় ফেতনা আর নেই। ফেতনাকে ভয় করুন।
বিঃদ্রঃ দলীল উল্লেখ করা হয়নি
এমন একটা পোস্ট, যদিও এর পক্ষে অনেক অনেক দলীল রয়েছে। আমি অনেক আলেম ওলামাকে এইগুলোর
ব্যপারে অত্যন্ত কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করতে দেখেছি।
হাদীসটা ভালো করে পড়ুন...
"হালালও স্পষ্ট এবং হারামও
স্পষ্ট। আর এ দু'য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়-যা অনেকেই জানেনা। যে ব্যক্তি সেই
সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর
যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে তার উদাহরণ ঐ রাখালের মত, যে তার পশু বাদশাহর
সংরক্ষিত চারণভূমির আশে পাশে চরায়, অচিরেই সেগুলো সেখানে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে
রাখ যে, প্রত্যেক বাদশাহরই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর যমীনে
তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের
টুকরা রয়েছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে
যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ যে, সে গোশতের টুকরাটি হল কলব।"
[বুখারী, ১ম খন্ড, ঈমান অধ্যায়,
হাদীস নং ৫০]