একটা হাদীস ও একটা
বইয়ের নাম বলবো। সবাই মনোযোগ দিয়ে
পড়ুন।
অনেক সময় পাপ করতে
করতে মনে হয়…
আমি বোধহয় আল্লাহর নেক বান্দা হতে পারবোনা!
আমি বোধহয় জান্নাতে যাবোনা (নাউযুবিল্লাহ)।
আমাকে দিয়ে হবেনা!
এইরকম নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা
ঢুকে যায় মনের
মধ্যে। সাবধান! এইগুলো শয়তানের ধোঁকা! এইভাবে শয়তান আপনাকে হতাশ
করে দিতে চায়
যাতে করে আপনি
আল্লাহর ইবাদত করা বন্ধ করে দিয়ে
তাঁর রহমত হতে নিরাশ হয়ে পড়েন!
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আদম সন্তানের সবাই পাপ করে"।
এমনকি আমরা যদি পাপ কাজ না করে আল্লাহর কাছে তোওবা
না করতাম তাহলে
আল্লাহ্ আমাদের পরিবর্তে অন্য জীব সৃষ্টি করতেন যারা পাপ করে আল্লাহর কাছে
তোওবা করতো আর আল্লাহ তাদের ক্ষমা
করতেন। (মুসলিম)
আপনি যত পাপই করে থাকেন না কেনো
সবসময় তোওবা করবেন
আর সাধ্য অনুযায়ী মরণের আগে পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবেন পাপ থেকে
বেঁচে থাকার জন্য।
আপনি যদি দিনে ১০০০
বার পাপ করেন,
আর পাপ করার
পরে প্রত্যেকবার আন্তরিকভাবে তোওবা
করেন তবুও আল্লাহ্ আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন। তবে শর্ত
হলো, তোওবা আন্তরিক হতে হবে।
তবে, কেউ যদি মনে করে আল্লাহতো মাফ করেই দিবেন, তাহলে
এই পাপটা করে ফেলি পরে তোওবা
করে ফেলবো - এটা স্পষ্ট মুনাফেকি। আর এইরকম
বক্রতা অবলম্বন করলে
চান্স আছে যে আল্লাহ্ শাস্তিস্বরূপ স্থায়ীভাবে তাঁর
অন্তরটাকে বাঁকা করে দিবেন বা শক্ত
করে দিবেন - পরে তার আর তোওবা
করার ইচ্ছা বা সুযোগ হবেনা। তাই এইরকম মুনাফেকী থেকে সাবধান থাকতে হবে।
শয়তানের ধোঁকায় পড়ে বা নফসের তাড়নায় যখনই পাপ কাজ হয়ে
যাবে, আর যখনই
নিজের ভুল বুঝতে
পারবেন, সাথে সাথে
তোওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসবেন। আল্লাহু আকবার আল্লাহ্ হচ্ছেন সেই মহান
সত্ত্বা যিনি সমস্ত
গুনাহ মাফ করে দেন - আর বিপদে আপদে তাঁর পাপী
বান্দাদের আশ্রয় দিয়ে
থাকেন। এইজন্যই আমরা
তাঁর ইবাদত করি
- তিনি আমাদের মাবূদ।
কখনোই কোনো অবস্থাতেই আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণা
করবেন না যে -
আল্লাহ আমার তোওবা
কবুল করবেন না। এক হাদীসে বলা হয়েছেন, "আমার বান্দা আমার
সম্পর্কে যেই ধারণা
করে আমি তার সাথে ঠিক সেইরকম আচরণ করি।"
আপনি যদি মনে করেন
যে, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করবেন না তাহলে আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করবেন না। আর আপনি যদি আশা রাখেন আল্লাহ আপনাকে রহম করবেন
- তাহলে অবশ্যই আল্লাহ্ আপনাকে রহম করবেন।
আর চেষ্টা করুন, ছোটো
বড় যাই হোক নেক আমল করার
জন্য। কারণ একটা
নেক আমলের উপর ভিত্তি করে আল্লাহ্ আপনার অসংখ্য গুনাহ
মাফ করে জান্নাতে দিবেন। বিশেষ করে অন্যেক উপকার করা
- সম্ভব হলে টাকা
পয়সা দিয়ে মানুষের বিপদ আপদে সাহায্য করা, উত্তম কথা বলে তাকে উপদেশ/পরামর্শ বা দাওয়াত দেওয়া, যেইভাবে সম্ভব
তার কাজে সাহায্য করা।
এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "এক ব্যাক্তি রাস্তার উপর পড়ে থাকা একটি
গাছে ডালের পাশ দিয়ে পার হল। সে বললো, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই এটিকে মুসলিমদের পথ থেকে সরিয়ে দেবো
যাতে তাদেরকে কষ্ট
না দেয়। সুতরাং (এই কারণে) লোকটিকে জান্নাতে প্রবেশ করানো
হলো।" (রিয়াদুস সালেহীন ১২৯)
আল্লাহু আকবার! কত ছোটো
একটি কাজ কিন্তু আল্লাহর রহমতে এই কাজের বিনিময়ে জান্নাতে গেলো!
আমাদের জীবনটাকেও পাপ কাজের
ভীড়ে এইরকম অসংখ্য ছোটো বড় নেকের
কাজ দিয়ে পূর্ণ
করতে হবে - আর তার বিনিময়ে আল্লাহর রহমতের আশা রেখে মৃত্যুবরণ করতে হবে। আল্লাহ্ আমাদের সকলকেই তোওফিক দান করুন।
বিঃদ্রঃ এইরকম আশ্চর্যজনক ও আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপরে কুরান ও হাদীসের অমিয় বাণী
জানার জন্য নিয়মতি পড়ুন ইমাম নববীর
হাদীসের অনবদ্য সংকলন
"রিয়াদুস সালেহীন"।
সম্ভব হলে, তাওহীদ পাবলিকেশানের "তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন" কিনুন
- এটা অনেক কারণেই শ্রেষ্ঠ ও সহীহ
অনুবাদ। আর সম্ভব
না হলে অন্য
প্রকাশনীরটা কিনুন। আর টিভি ফেইসবুক, আড্ডা,
গানে সময় নষ্ট
না করে - এই বইটা বার বার পড়ুন - কুরান ও সুন্নাহ দিয়ে জীবন
গড়ে তোলার জন্য। তাওহীদ পাবলিকেশানের "তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন" এর ডাউনলোড লিঙ্কঃ