মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০১৫

“রোযা নিয়ে ৩টি প্রশ্নের উত্তর”

রোযা নিয়ে ৩টি প্রশ্নের উত্তর
- আনসারুস সুন্নাহ।
___________________________________
১. নামায-রোযা কখন থেকে ফরয হয়?
উত্তরঃ সন্তান যখন বালেগ/বালেগাহ অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয় তখন তাদের উপরে নামায-রোযা ফরয হয়। যদিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৭ বছর বয়স থেকেই সন্তানদেরকে নামায পড়ানোর জন্য অভ্যেস করার আদেশ দিয়েছেন , আর ১০ বছর বয়স থেকে তাদেরকে নামাযের জন্যে শারীরিক শাস্তি দিতে বলেছেন। বালেগ না হলে তখন তাদের উপর নামায ফরয হয়না, কিন্তু প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ার পর যাতে তারা নিয়মিত নামাযে অভ্যস্ত হয় সেইজন্য আগে থেকেই তাদেরকে ট্রেনিং দিয়ে গড়ে তুলতে হবে। যাইহোক, প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ার লক্ষণ হচ্ছে ৪টিঃ
১. নাভীর নিচে লজ্জাস্থানের আশেপাশে শক্ত কালো লোম গজানো
২. জাগ্রত অথবা নিদ্রাবস্থায় বীর্যপাত হওয়া
৩. নারীদের জন্য হায়েজ বা ঋতু শুরু হওয়া
৪. এই ৩টার যেকোন একটা প্রকাশিত হলেই সেই ছেলে বা মেয়ে সাবালক/সাবালিকা বলে গণ্য হবে এবং তার উপর রোযা সহ শরীয়াতের অন্য বিধানগুলো ফরয বলে গণ্য হবে। এর কোনটাই প্রকাশিত না হলে, বয়স ১৫ হলেই সন্তান সাবালক/সাবালিকা বলে গণ্য হবে।
সূত্রঃ ফতোয়া আরকানুল ইসলাম এ শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন (রহঃ) এর ফতোয়া অবলম্বনে।
___________________________________
২. রোযার নিয়ত কিভাবে করতে হবে?
উত্তরঃ রমযান মাসে রোযা থাকা ফরয। রাতের বেলা আপনার যদি নিয়ত থাকে যে, আগামীকাল আপনি রোযা থাকবেন, অথবা সাহরীর সময় উঠে খাওয়া দাওয়া করেন এবং মনে মনে চিন্তা করেন আগামী কাল রোযা থাকার, তাহলেই আপনার নিয়ত করা হয়ে যাবে।
সাহরী ও ইফতারির ক্যালেন্ডার বা বিভিন্ন বই-পুস্তকে যে দুয়া নাওয়াইতুয়ান আসামু গাদামান... এইরকম দুয়া ক্বুরআন হাদীসের কোথাও নাই, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দুয়া পড়ে নিয়ত করতেন না। এটা আমাদের দেশীয় মাওলানা সাহেবরা বানিয়ে নিয়েছেন, যা সুস্পষ্ট বিদআত। আর বিদআত মানেই হলো পরিত্যাজ্য যার পরিণাম হচ্ছে জাহান্নাম।
আর রমযানের বাইরে, আপনি যখন অন্য কোন নফল, সুন্নত অথবা কাযা রোযা রাখবেন তখন আপনি রাতের বেলা বা ঘুম থেকে উঠে সাহরী খাওয়ার পরে মনে মনে ঠিক করে নেবেন, আমি আগামী কাল অমুক রোযা (বৃহস্পতিবারের সুন্নত রোযা/বিগত রমযানের অমুক কাযা রোযা/আরাফার সুন্নত রোযা) রাখবো।
উল্লেখ্যঃ নফল/সুন্নত রোযার জন্য কেউ যদি আগে থেকে নিয়ত করে না রাখেন, আর ঘুম থেকে উঠে ফযরের ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পরেও রোযা থাকার নিয়ত করতে পারবে। তবে যত সময় পরে করবেন ঐ সময়টকুর জন্য নিয়ত না থাকায় ততটুকু অংশের সওয়াব মিস করবেন। কিন্তু ফরয রোখা রাখতে হলে ফযরের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বে অন্তরে অবশ্যই নিয়ত করে নিতে হবে।
___________________________________
৩. ইফতারির সহীহ দুয়া কোনটি?
উত্তরঃ বিসমিল্লাহ বলে ইফতার খাওয়া শুরু করতে হবে। এসময় আও কোন দুয়া নেই বা নিয়তের জন্য কোন কিছু মুখে উচ্চারণ করে বলতে হবেনা। ইফতারি খাওয়া শেষ হলে এই দুয়া পড়তে হবে,

ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ العُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ

উচ্চারণঃ যাহাবায-যামাউ, ওয়াবতাল্লাতিল উরূক্বু, ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশা-আল্লা-হু।
অর্থঃ পিপাসা দূরীভূত হয়েছে, ধমনীগুলো সিক্ত হয়েছে এবং সওয়াব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইন শা আল্লাহ।
আবু দাউদঃ ২৩৫৯ এবং অন্যান্য। হাদীসটি সহীহ, সহীহুল জামেঃ ৪/২০৯।

___________________________________