“অর্থ
বুঝে নামায পড়ুন” (২য়
পর্ব, আজকে এই সিরিজ সমাপ্ত)
- আনসারুস সুন্নাহ
________________________
প্রথম পর্বের লিংক –
https://www.facebook.com/dawati.kaj/photos/a.1539584829647010.1073741828.1440162482922579/1605992326339593/?type=1
________________________
৮. রুকুতে যাওয়ার সময় তাকবীরঃ
আল্লাহু
আকবার
অর্থঃ
আল্লাহ সবচাইতে বড় / আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ / আল্লাহ সবচাইতে মহান।
Allah is the greatest.
৯. রুকুর তাসবীহ বা দুয়া
سُبْحانَ
رَبِّيَ الْعَظِيمِ
রুকুর
তাসবীহঃ সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’যীম।
অর্থঃ
আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
সুবহা’না – পবিত্রতা ঘোষণা করছি
রাব্বি
– আমার রব্বের বা আমার প্রতিপালকের
আ’যীম – মহান
রুকু
ও সিজদাতে আমরা যেই দুয়া পড়ি এগুলো ছাড়াও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকু
ও সিজদার মাঝে আরো অন্যান্য দুয়া করতেন। রুকুতে নিজে থেকে কোন দুয়া করা নিষিদ্ধ। রুকুতে
শুধুমাত্র নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকুতে যেই দুয়া করেছেন, সেই দুয়াগুলো
করা যাবে।
রুকু
ও সিজদা এই দুই সময়েই পড়া যায়, এমন সুন্দর একটা দুয়া/তাসবীহঃ
আমরা
রুকু-সিদজা বা নামাযের কোন কাজটা কেনো করি আসলে বেশিরভাগ মানুষই জানিনা। মা আয়েশাহ
রাদিয়াল্লাহু আ’নহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
“সুরা
নাসর নাযিল হবার পর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ
اغْفِرْ لِي
এই
দোয়াটি রুকু ও সিজদার সময় বেশি বেশি পাঠ করতেন।”
সহিহ
বুখারীঃ ৪৯৩।
কেনো
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা নাসর নাযিল হওয়ার পর এই দুয়াটা বেশি
পড়তেন? উত্তর হচ্ছে সুরা নাসরে আল্লাহ তাআ’লা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কে আদেশ করেছিলেন,
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ ۚ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
উচ্চারণঃ
ফাসাব্বিহ’ বিহা’মদি রাব্বিকা ওয়াস্তাগফিরহু, ইন্নাহু কানা তাওয়্যাবা।
অর্থঃ
অতএব, আপনি আপনার পালনকর্তার “হামদ” (প্রশংসা সহকারে) “সাব্বিহ” (পবিত্রতা বর্ণনা করুন) এবং ওয়াস্তাগফিরহু
(তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, কারণ) নিশ্চয় তিনি হচ্ছেন “তাওয়্যাবা” (তাওবা কবুলকারী)।
এই
আয়াতের উপর আমল করার জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকু ও সিজদাতে উপরের
এই দুয়াটা বেশি বেশি করে পড়তেন। এই দুয়াটাতে আল্লাহর হামদ, তাসবীহ ও ক্ষমা প্রার্থনা,
এই তিনটা বিষয়ই একসাথে রয়েছে।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ
اغْفِرْ لِي
উচ্চারণঃ
সুবহা’নাকা আল্লা-হুম্মা রব্বানা ওয়া বিহা’মদিকা আল্লা-হুম্মাগফির-লী।
অর্থঃ
হে আল্লাহ! আমাদের রব্ব! আপনার প্রশংসাসহ আপনার পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি। হে আল্লাহ!
আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
আবু
দাউদঃ ৮৭০, তিরমিযীঃ ২৬২, নাসাঈঃ ১০০৭, ইবন মাজাহঃ ৮৯৭, আহমাদঃ ৩৫১৪, শায়খ আলবানীর
মতে হাদীসটি সহীহ, সহীহুত তিরমিযীঃ ১/৮৩।
শব্দার্থঃ
সুবহা’নাকা – পবিত্রতা ঘোষণা করছি, রাব্বানা – হে আমাদের রব্ব, ওয়া = এবং, বিহা’মদিকা = প্রশংসা সহকারে, আল্লা-হুম্মা = হে আল্লাহ!
আল্লা-হুম্মা + মাগফিরলী = আল্লা-হুম্মাগফিরলী, আল্লা-হুম্মা = হে আল্লাহ! মাগফিরলি
= তুমি আমাকে ক্ষমা করো।
বিঃদ্রঃ
রুকুতে সুবহা’নাল্লাহ রাব্বিয়াল আ’যীম বা সিজদাতে সুবহা’নাল্লাহ রাব্বিয়াল আ’লা দুয়া পড়ার পরে এই দুয়া পড়তে পারেন, ১/২/৩...আপনার
যত বার ইচ্ছা। যেকোনো রুকু/সিজদাতেই যতবার ইচ্ছা পড়তে পারেন, আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী,
কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।
১০. রুকু থেকে দাঁড়ানোর সময় দুয়া
سَمِعَ
اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
উচ্চারণঃ
সামিআ’ল্লা-হুলিমান হা’মিদাহ।
অর্থঃ
আল্লাহ তার কথা শোনেন যে তাঁর প্রশংসা করে।
সামিঅ’ – শোনেন, সামিআ’ল্লা-হ – আল্লাহ শোনেন।
লিমান
– যে বা যিনি তাঁর, হা’মিদাহ – প্রশংসা করে।
رَبَّنَا
وَلَكَ الْحَمْدُ
উচ্চারণঃ
রাব্বানা ওয়া লাকাল হা’মদ।
অর্থঃ
হে আমার প্রভু! সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য।
রাব্বানা
– হে আমাদের রব্ব (পালনকর্তা)।
লাকাল
হা’মদ = সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য।
১১.
সিজদার তাসবীহ বা দুয়া
سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى
উচ্চারণঃ
সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’লা
অর্থঃ
আমি আমার মহান সুউচ্চ রব্বের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
সুবহা’না – পবিত্রতা ঘোষণা করছি
রাব্বি
– আমার রব্ব বা আমার প্রতিপালক
আল-আ’লা – যিনি সুউচ্চ ও মহান
১২. দুই সিজদার মাঝখানে দুয়াঃ
اللَّهُمَّ
اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَاجْبُرْنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي،
وَارْفَعْنِي
উচ্চারণঃ
আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহা’মনী,
ওয়াহদ্বীনি, ওয়াজবুরনী, ওয়াআ’ফিনি,
ওয়ারযুক্বনী, ওয়ারফা‘নী।
অর্থঃ
হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন,
আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন
এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।”
আবূ
দাউদঃ ৮৫০, তিরমিযীঃ ২৮৪, শায়খ আলবানির মতে হাদীসটি সহীহ।
আল্লা-হুম্মাগফিরলী
– হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন
ওয়ারহা’মনী – আমার প্রতি দয়া করুন
ওয়াহদ্বীনি
– আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন
ওয়াজবুরনী
– আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন
ওয়াআ’ফিনি – আমাকে নিরাপত্তা দান করুন
ওয়ারযুক্বনী
– আমাকে রিযিক দান করুন
ওয়ারফাঅ’নী – আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।
১৩.
তাশাহ্হুদ
আত্তাহিইয়াতু
লিল্লাহি…এই দুয়াটির আসল নাম হচ্ছে ‘তাশাহহুদ’।
التَّحِيَّاتُ
لِلَّهِ، وَالصَّلَواتُ، وَالطَّيِّباتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ
وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ
الصَّالِحِينَ. أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً
عَبْدُهُ وَرَسولُهُ
উচ্চারণঃ
আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস্সালাওয়া-তু ওয়াত্তায়্যিবা-তু আস্সালা-মু আ’লাইকা আইয়্যূহান নাবিয়্যূ ওয়া রাহমাতুল্লা-হি
ওয়া বারাকা-তুহু। আস্সালা-মু আ’লাইনা
ওয়া আ’লা ই’বাদিল্লা-হিস সোয়ালিহীন। আশহাদু আল্লা-ইলা-হা
ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহা’ম্মাদান
আ’ব্দুহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থঃ যাবতীয় ‘তাহিয়্যা’ (অভিবাদন, প্রশংসাসূচক বাক্য) আল্লাহ্র জন্য,
অনুরূপভাবে সকল সালাত (দুয়া, নামায ইত্যাদি) ও পবিত্র কাজগুলোও তাঁর জন্য। হে নবী!
আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহ্র নেক
বান্দাদের উপরেও শান্তি অবতীর্ণ হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য
দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ্র বান্দা ও রাসূল (প্রেরিত
দূত)।
তাশাহুদে আমরা আসলে কি পড়ি?
তাশাহুদের চারটি অংশ রয়েছেঃ
i. “আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস্সালাওয়া-তু ওয়াত্তায়্যিবা-তু” – এই অংশ হচ্ছে আল্লাহর প্রশংসা ও পবিত্রতা ঘোষণা
করে বৈঠক শুরু করা। যেকোন কাজের শুরুতে রয়েছে আল্লাহর প্রশংসা।
ii. “আস্সালা-মু
আ’লাইকা আইয়্যূহান নাবিয়্যূ ওয়া রাহমাতুল্লা-হি
ওয়া বারাকা-তুহু” এই
অংশ হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি সালাম পেশ করা এবং তাঁর প্রতি রহমত ও বরকতের জন্য
আল্লাহর কাছে দুয়া করা। [উল্লেখ্য রাসুল সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি যেই সালাম দেওয়া হয় তিনি সেটা সরাসরি শুনতে পারেন
না, একদল ফেরেশতা দুনিয়াতে ঘুরে-বেড়ান, যারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি পড়া সালামগুলো রূহের জগতে রাসুলের
কাছে পৌঁছে দেন। আল্লাহ তাআ’লা
নবী রাসুল সাঃ এর রূহকে তখন ফিরিয়ে দেন এবং তিনি তাঁর উত্তর দেন। এইগুলো কিভাবে হয়
একমাত্র আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন, সহীহ হাদীসে যেইভাবে এসেছে কোনরকম
ব্যখ্যা-বিশ্লেষণ ও প্রশ্ন ছাড়াই এর প্রতি ঈমান আনা আমাদের জন্য ওয়াজিব।]
iii. “আস্সালা-মু
আ’লাইনা ওয়া আ’লা ই’বাদিল্লা-হিস সোয়ালিহীন” এই অংশ হচ্ছে সমস্ত নেককার মুসলমানদের জন্য
দুয়া করা। এই দুয়ার দ্বারা জীবিত ও মৃত সমস্ত মুসলমানেরাই উপকৃত হয়।
iv. “আশহাদু
আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহা’ম্মাদান আ’ব্দুহু ওয়া রাসুলুহু” - এই অংশ হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া আর কোন ‘ইলাহ’ (মাবূদ বা উপাস্য) নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসুল (প্রেরিত দূত) – এই দুইটি স্বাক্ষ্য দেওয়া।
আত্তাহিয়্যা-তু
লিল্লা-হি ওয়াস্সালাওয়া-তু ওয়াত্তায়্যিবা-তু – সমস্ত শ্রদ্ধা, সালাত, ভালো কাজ আল্লাহর জন্য।
তাহিয়্যা – প্রশংসাসূচক
অভিবাদন ও বাক্যসমূহ, লিল্লাহি – আল্লাহর
জন্যে, ওয়াস্+সালাওয়া-তু – এবং সালাত সমূহ, ওয়াত-তায়্যিবা-তু, তায়্যিবা-ত
– পবিত্র বাক্য সমূহ।
আস্সালা-মু
আ’লাইকা আইয়্যূহান নাবিয়্যূ ওয়া রাহমাতুল্লা-হি
ওয়া বারাকা-তুহু – হে
নবী! আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক।
সালাম
থেকে আস্সালা-মু – শান্তি,
আ’লাইকা – আপনার উপর, আইয়্যূ –
হে,
আইয়্যূহান নাবিয়্যূ – হে
নবী, ওয়া রাহমাতুল্লা-হি – এবং
আল্লাহর রহমত, ওয়া বারাকা-তুহু – এবং
বরকত।
আস্সালা-মু
আ’লাইনা ওয়া আ’লা ই’বাদিল্লা-হিস সোয়ালিহীন – আমাদের উপর এবং আল্লাহ্র নেক বান্দাদের উপরেও
শান্তি অবতীর্ণ হোক।
সালাম
থেকে আস্সালা-মু – শান্তি,
আ’লাইনা – আমাদের উপরে, ওয়া – এবং, ই’বাদিল্লা-হিস – আল্লাহ্র বান্দাদের, সোয়ালিহীন – নেককার, ধার্মিক।
আশহাদু
আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহা’ম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহু – আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন
ইলাহ নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
আল্লাহ্র বান্দা ও রাসূল (প্রেরিত দূত)।
আশহাদু
– আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লা – নেই, ইলাহা – মাবূদ
বা উপাস্য, ইল্লাল্লা-হু – আল্লাহ
ছাড়া, ওয়া আশহাদু – আমি
আরো স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হা’ম্মাদান
– মুহাম্মাদ হচ্ছেন, আ’বদুহু – তাঁর বান্দা, ওয়া রাসুলুহু – ও রাসুল (প্রেরিত দূত)।
১৪.
দুরুদ (রাসুল সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্য দুয়া করা)
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ،
كَمَا صَلَّيتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ
مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ
عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিউ
ওয়া আ’লা আ-লি মুহাম্মাদিন
কামা সাল্লাইতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রাহীম,
ইন্নাকা হা’মীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা
বারিক আ’লা মুহাম্মাদিউ
ওয়া আ’লা আলি মুহা’ম্মাদিন, কামা বা-রাকতা
আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া
আ’লা আ-লি ইব্রাহীম,
ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ
এবং তাঁর পরিবারের প্রতি শান্তি অবতীর্ণ করুন, যেমন আপনি ইব্রাহিম এবং তাঁর পরিবারের
প্রতি শান্তি অবতীর্ণ করেছিলেন, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ
এবং তাঁর পরিবারের প্রতি বরকত দান করুন, যেমন আপনি ইব্রাহিম এবং তাঁর পরিবারের প্রতি
বরকত দান করেছিলেন, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান।
আল্লা-হুম্মা – হে আল্লাহ! সাল্লি – আপনি শান্তি অবতীর্ণ করুন, আ’লা – উপরে, মুহাম্মাদিউ
– মুহাম্মাদ এর,
ওয়া – এবং, আ’লা – উপরে, আ-লি মুহাম্মাদিন
– মুহাম্মাদ এর পরিবার,
কামা – যেমনিভাবে, সাল্লাইতা
– শান্তি অবতীর্ণ করেছিলেন, আ’লা – উপরে, ইবরাহীম – ইবরাহীম, ওয়া – এবং, আ’লা – উপরে, আ-লি ইব্রাহীম
– ইব্রাহীমের পরিবার,
ইন্নাকা – নিশ্চয়ই আপনি, হামীদ – প্রশংসিত, মাজীদ – মহান।
অনুরূপভাবে
দ্বিতীয় অংশের অর্থ হুবুহু এক…শুধুমাত্র
সালাম বা শান্তির জায়গায় বরকত। বরকত অর্থ হচ্ছে, অল্প থেকে অনেক বৃদ্ধি পাওয়া।
১৫.
“দুয়া মাসুরা”
রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত সালাম
ফেরানোর পূর্বের দুয়াগুলোকে ‘দুয়া
মাসুরা’ বলা হয়। সাধারণত আমরা যেই দুয়া মাসুরাটা পড়ি,
এছাড়াও আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুয়া মাসুরা আছে, যা আপনারা ‘হিসনুল মুসলিম’ বই থেকে মুখস্থ করতে পারেন। সাধারণত বেশিরভাগ
মানুষ যেই দুয়া মাসুরাটা পড়ে আমি তার অর্থ দিচ্ছি।
اللَّهُمَّ
إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْماً كَثِيراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنوبَ إِلاَّ أَنْتَ،
فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفورُ
الرَّحيمُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী যলামতু নাফসী যুলমান কাসীরা।
ওয়ালা ইয়াগফিরুয্-যুনূবা ইল্লা আংতা। ফাগফির লী মাগফিরাতাম মিং ই’নদিকা, ওয়ারহা’মনী, ইন্নাকা আনতাল
গাফূরুর রাহীম।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আমার নিজের উপর অনেক যুলুম করেছি। আর
আপনি ছাড়া গুনাহসমূহ কেউ ক্ষমা করতে পারে না। সুতরাং আমাকে আপনার পক্ষ থেকে বিশেষ ক্ষমা
দ্বারা মাফ করে দিন, আর আমার প্রতি দয়া করুন; নিশ্চয়ই আপনি তো ক্ষমাকারী, পরম দয়ালু
আল্লা-হুম্মা – হে আল্লাহ! ইন্নী
– নিশ্চয়ই আমি, যলামতু
– যুলুম/অন্যায় করেছি,
নাফসী – নিজের উপরে, যুলমান
কাসীরা – অনেক অন্যায়। ফাগফির
লী – অতএব আমাকে মাফ
করুন, মাগফিরাতাম মিং ই’নদিকা – আপনার পক্ষ থেকে বিশেষ ক্ষমার দ্বারা, ওয়ারহা’মনী – আর আমার প্রতি
দয়া করুন, ইন্নাকা আনতাল – নিশ্চয়ই আপনি তো, গাফূর থেকে গাফূরুর –
অত্যন্ত ক্ষমাশীল, রাহীম – পরম দয়ালু।
১৬. “তাসলিম” – সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামায শেষ করা।
উচ্চারণঃ আস সালামু আ’লাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অর্থঃ আপনাদের প্রতি শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।
সালাম থেকে আস সালামু – শান্তি, আ’লাইকুম – আপনাদের উপর, রহ’মাতুল্লাহ – আল্লাহর রহমত।
________________________
[সমাপ্ত, সমাপ্ত, সমাপ্ত]
[সমাপ্ত, সমাপ্ত, সমাপ্ত]