ক্বুরানুল
কারিমের দুইটি আয়াতের তেলাওয়াত আমি যতবারই শুনি, আয়াতের অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে প্রত্যেকবার
আমার গা শিউরে উঠে। আয়াতগুলো হচ্ছে,
رُّبَمَا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْ كَانُواْ مُسْلِمِينَ
ذَرْهُمْ يَأْكُلُواْ وَيَتَمَتَّعُواْ وَيُلْهِهِمُ الأَمَلُ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
অর্থঃ
কোন সময় কাফেররাও কামনা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত! আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন, তারা পানাহার ও ভোগ-বিলাস মত্ত
থাকুক এবং আশা তাদেরকে গাফেল করে রাখুক, আর অচিরেই তারা জানতে পারবে। [সূরা আল-হিজরঃ
২-৩]
গা
শিউরে উঠে এই কথা ভেবে, আমরা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারিনা, আমাদের শেষ পরিণতি কেমন
হবে? [তবে অবশ্যই আল্লাহর কাছে ভালো অবস্থায় মৃত্যুর জন্য আশা রেখে দুয়া করতে হবে]
যাই হোক, একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা শুনুন, কিভাবে একজন মুজাহিদ ঈমানহারা হয়েছিলোঃ
হাফেজ
ইবনে কাসির রহ. ইমাম জাউজির বরাত দিয়ে বলেন, আবদাহ বিন আব্দুর রহিম নামে এক মুজাহিদ
২৭৮ হিজরি সনে মারা যায়। যার সম্পর্কে শ্রুতি রয়েছে যে, সে অধিকাংশ সময় ইউরোপের বিরুদ্ধে
জেহাদে ব্যস্ত থাকত। একবারের ঘটনা, মুজাহিদগণ ইউরোপের একটি দেশ ঘেরাও করে রেখে ছিল,
দূর্গের ভেতর অবস্থানকারী এক নারীর প্রতি তার দৃষ্টি পড়ল, আর এতেই সে তার প্রেমে পড়ে
যায়। আরম্ভ হল চিঠির আদান-প্রদান, সে তাকে লিখল আমি তোমাকে কীভাবে পেতে পারি? সে বলল,
তুমি খৃষ্টান হও আর দেয়াল টপকে আমার কাছে চলে এসো, সে তাতে সাড়া দিল। বিষয়টি মুসলমানদের
খুব ভাবিয়ে তুলল, বরং, আতঙ্কিত করল। সকলেই মর্মাহত হল, অনেক আফসোস করল, কঠিন মনে হল
তাদের কাছে তার ঘটনাটি। কয়েক বৎসর পর তার সাথে একদল মুজাহিদের সাক্ষাত। তারা দেখতে
পেল, তখনও সে ঐ মহিলার সাথে সংসার করছে, তারা জিজ্ঞেস করল, কি ব্যাপার? কোথায় গেল তোমার
কুরআন? আর তোমার আমল, রোজা, জেহাদ ও নামাজের খবর কি? সে বলল, আমি পূর্ণ কুরআন ভুলে
গেছি, শুধু একটি আয়াত আমার মনে আছে,
কোন
সময় কাফেররাও কামনা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত! আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন, তারা পানাহার ও ভোগ-বিলাস মত্ত
থাকুক এবং আশা তাদেরকে গাফেল করে রাখুক, আর অচিরেই তারা জানতে পারবে। [সূরা আল-হিজরঃ
২-৩]
সে
আরো জানাল, এখন তো আমার তাদের মধ্যে অনেক সন্তান ও সম্পদ হয়েছে।”
আল-বিদায়াঃ
১১/৬৪।