শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫

গায়ে হলুদ, পহেলা বৈশাখ, বসন্তবরণ, হোলি, দিওয়ালি, সান্টা ক্লজ

গায়ে হলুদ, পহেলা বৈশাখ, বসন্তবরণ, হোলি, দিওয়ালি, সান্টা ক্লজ. . .কাফের (অবিশ্বাসী) ও মুশরেক (অংশীবাদী) জাতির তাক্বলীদ (অন্ধ অনুকরণ) এর ফেতনাঃ

বর্তমান বাঙালি মুসলমান সমাজে এমন অনেকেই আছে,
    যাদের নাম মুসলমানদের নামের মতোই - আরিফ, হাসান, ইব্রাহীম, ফাতেমা, জামিলা, জিনাত ইত্যাদি।
    তারা মুসলমান বাবা-মায়ের সন্তান।
    তারা নিজেদেরকে মুসলমান বলেই দাবী করে, নাগরিকত্ব, সার্টিফিকেট পাসপোর্টে নিজেদের মুসলমান বলেই পরিচয় দেয়।
    ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে গরু জবাই করে খায়।
কিন্তু,
    জীবনে কোনদিন ৫ ওয়াক্ত নামায পড়েনা, পুরুষেরা শুধুমাত্র ঈদ আর জুমাহর দিনে, আর নারীরা শবে বরাত ও শবে ক্বদরে নামায পড়ে।
    ক্বুরানুল কারীম শেষ কবে পড়েছিলো সেটা বলতে পারবেনা, নিজের বাবা-মা না মরা পর্যন্ত আর কোনদিন খুলবেও বলে মনে হয়না।
    ঈমান, ইসলাম, হালাল-হারাম কি তা জানার ও মানার কোন ইচ্ছা বা আগ্রহ নেই, এইগুলোর প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেনা। 
শুনলাম এই শ্রেণীর কিছু তরুণ ছেলে ও মেয়ে এবং শিশুরা গতকাল (৬ই মার্চ, ২০১৫) হিন্দুদের হোলি নামের উৎসব উদযাপ করেছে। ইতিঃপূর্বে আমাদের দেশের অনেক স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন পার্টিতে ২৫শে ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে ক্রিসমাস ট্রি, বড়দিন, সান্টা ক্লজের শিরকি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বিগত ১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১৫ তে বিভ্রান্ত তরুণ নারী ও পুরুষেরা জুমুয়াহর মতো মোবারক দিনে বসন্ত বরণ নামের বিজাতীয় উৎসব উদযাপ করেছে।

এই বসন্ত বরণ অনুষ্ঠানের উৎস সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে,
দোলযাত্রা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির ও গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।
দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে। এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে, লিংক
http://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE

সুতরাং আল্লাহকে অস্বীকারকারী রবি ঠাকুরের আদর্শে বাঙালি মুসলমানেরা বসন্তবরণ নাম দিয়ে আসলে হিন্দুদের দোল উৎসব উদযাপন করে আসছে।

ঈমানী চেতনাহীন এমন নারী ও পুরুষ যারা জেনে বা না জেনেই মুশরেকদের অনুকরণে তাদের ধর্মীয় রীতি-নীতিগুলোর অনুকরণ করবে তাদের সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
মান তাশাব্বাহা বি ক্বাওমিন ফা হুয়া মিনহুম অর্থাৎ, কোন ব্যক্তি যেই জাতির অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলেই গণ্য হবে।
আবু দাউদঃ ৩৫১২, হাদীসটি সহীহ শায়খ আলবানী।

সুতরাং যারা হিন্দুদের অনুকরণ করবে তারা হিন্দুদের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে, যারা ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের অনুকরণ করবে তারা ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের অন্তর্ভুক্ত বলেই গণ্য হবে।

দুনিয়ার ধোঁকায় পড়ে অন্ধ নারী ও পুরুষদের মাঝে যারা প্রবৃত্তি ও খেয়াল-খুশির অনুসারী হবে, তাদের উদ্দেশ্যে ক্বুরানুল কারীমের একটি আয়াত এবং নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি সহীহ হাদীস পেশ করছিঃ

মহান আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে এই নিদর্শনসমূহ দিয়ে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম। কিন্তু সে এই দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হলো এবং নিজের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে রইল। সুতরাং তার অবস্থা হল কুকুরের মত; যদি তাকে তাড়া কর তাহলে সে জিহবা বের করে হাঁপাবে, আর যদি তাকে ছেড়ে দাও তবুও সে হাঁপাবে। এ হল সেসমস্ত লোকদের উদাহরণ; যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে। অতএব, আপনি তাদের কাছে এই কাহিনীগুলো বর্ণনা করে দিন, যাতে করে তারা এইগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে।
সুরা আল-আ'রাফঃ আয়াত ১৭৬।

নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
আঁধার রাতের অবিরাম খন্ডের মত কৃষ্ণ-কালো ফেতনা আবর্তিত হওয়ার পূর্বেই তোমরা দ্রুত নেক কাজে মনোনিবেশ কর। (এমন একটা সময় আসবে যখন) মানুষ সকাল বেলা মুমিন কিন্তু বিকেল বেলা সে হবে কাফের। আবার কেউ সন্ধ্যা বেলা মুমিন হবে তো সকাল বেলা হবে কাফের। দুনিয়াবি সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে সে দ্বীনকে বিক্রি করে ফেলবে।
[সহীহ মুসলীম]


আল্লাহ্‌ আমাদের ও আমাদের পরিবারকে তাগুত, মূর্তিপূজা ও শয়তান থেকে নিরাপদ রাখুন, আমিন।