বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০১৫

“হক্ক কথা কটু লাগে” বিশ্বকাপ ক্রিকেট/ফুটবল

হক্ক কথা কটু লাগে
প্রসংগঃ যারা বিশ্বকাপ ক্রিকেট/ফুটবল খেলে এবং যারা টিভিতে এই খেলাগুলো দেখে।

টাকার বিনিময়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট অথবা ফুটবলা খেলা হারাম। কারণ,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
সর্বপ্রকার খেলা-ধূলা হারাম। শুধুমাত্র তিনটি বিষয় এই খেলা-ধূলার অন্তর্ভুক্ত নয়।
১. তীর-ধনুক চালনা করা,
২. ঘোড়াকে প্রশিক্ষণ দান করা,
৩.নিজ আহলিয়া (স্ত্রীর) সাথে শরীয়তসম্মত হাসি-খুশী করা।
[মুসতাদরাক আল-হাকিম]

বিশ্বকাপ খেলা দেখা নিয়ে সৌদি আরবের বড় আলেমদের ফতোয়া দেখুন
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/pb.125167817515974.-2207520000.1416920300./951147861584628/?type=1&source=42&_rdr

হারাম খেলা-ধূলা করে টাকা-উপার্জন করাও হারাম। সুতরাং কোন মুসলমান ব্যক্তি সে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান. . . যেই দেশেরই হোক না কেনো, তার জন্য বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা সম্পূর্ণ হারাম। এই খেলাধূলা করে তার উপার্জিত টাকা ও পুরষ্কারগুলো হারাম. . .হারামখোর, ফাসেক লোক যারা বিভিন্ন পাপকর্ম ও বেহুদা কাজের দ্বারা মানুষকে আল্লাহ থেকে, নামায থেকে দূরে সরিয়ে রাখে তাদেরকে আল্লাহ্ অত্যন্ত ঘৃণা করেন, যদিও তারা নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবী করে থাকুক না কেনো। এইরকম (খেলোয়াড়, নায়ক, গায়ক ইত্যাদি) লোকদের জন্য বুকের মাঝে একফোঁটা ভালোবাসা রাখা, তাদের নিষিদ্ধ ও বেহুদা কাজগুলোর জন্য (যেমন কয়টা গোল দিলো, কত রান করলো, কত উইকেট পেলো) এইগুলোর জন্য তাদের প্রশংসা করা কস্মিনকালেও জায়েজ নয়। এরপরেও যারা দেশি অথবা বিদেশী কোন দলের ক্রিকেট অথবা ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য ভালোবাসা রাখবেন, তাদের জন্য নিচের এই হাদীসটা পেশ করছি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যে যাকে ভালোবাসে, কিয়ামতের দিন সে তার সাথেই থাকবে।
[সহীহ মুসলিমঃ ২৬৪০]

এই বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলাটাই হারাম, তার উপর বর্তমানে এই খেলাগুলোর সাথে যুক্ত হয়েছে মদ, জুয়া, বাজী, উদ্দাম গান-বাজনা, বেহায়া ও নগ্ন নারীর প্রদর্শনী, যিনা-ব্যভিচার সহ নানা ধরণে গুনাহর আড্ডা। এক কথায় বলা যেতে পারে, বিশ্বকাপ হচ্ছে দুনিয়া পূজারী কাফের ও মুশরেকদের পাপের একটা উৎসব বা মেলা। কাফের মুশরেকদের এইসমস্ত চমকপ্রদ কাজের দ্বারা অনেক মুসলমানের দৃষ্টি ঝলসে গেছে, আর তাইতো নামধারী বাঙ্গালী মুসলমান সমাজের কথিত হিজাবি (মাথায় একটা কাপড়) পড়া মেয়েরাও আজকাল বিশ্বকাপ খেলা উপলক্ষে লজ্জা-শরম ভুলে প্রকাশ্যে রাস্তায় নেচে-গেয়ে ইউটিউবে ভিডিও প্রচার করছে! মনে পড়ে,

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক হাদীসে বলেছেন,
তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রীস্টানদের পদে পদে অনুসরণ করবে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে জেনা করে, তাহলে তোমাদের মধ্যে থেকেও কোন ব্যক্তি সেই কাজটা করবে। [বাযযারঃ ১২১০৫]

প্রবৃত্তির পূজারী লোকদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ্‌ তাআলার বক্তব্য,
আপনি কি তার দিকে লক্ষ্য করেন নি, যে তার নিজের হাওয়া (প্রবৃত্তিকে) মাবূদ হিসেবে গ্রহণ করেছে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং তার চাইতেও পথভ্রষ্ট। [সুরা আল-ফুরক্বানঃ ৪৩-৪৪]

মহান আল্লাহ্‌ তাআলা আরো বলেন,
আর আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর আছে, কিন্তু তার দ্বারা তারা চিন্তা-ভাবনা করে না, তাদের চোখ আছে কিন্তু তার দ্বারা তারা দেখেনা, আর তাদের কান আছে কিন্তু তার দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চাইতেও নিকৃষ্টর। তারাই হল উদাসীন ও শৈথিল্যপরায়ণ।
[সুরা আল-আরাফঃ ১৭৯]

সর্বশেষ, কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে একের পর এক নিত্য-নতুন ফেতনা যখন মুসলমানদেরকে গ্রাস করবে, তখনকার যুগে মানুষের ঈমানের যেই হবে সে সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,


আঁধার রাতের অবিরাম খন্ডের মত কৃষ্ণ-কালো ফেতনা আবর্তিত হওয়ার পূর্বেই তোমরা দ্রুত নেক কাজে মনোনিবেশ কর। (এমন একটা সময় আসবে যখন) মানুষ সকাল বেলা মুমিন কিন্তু বিকেল বেলা সে হবে কাফের। আবার কেউ সন্ধ্যা বেলা মুমিন হবে তো সকাল বেলা হবে কাফের। দুনিয়াবি সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে সে দ্বীনকে বিক্রি করে ফেলবে।  [সহীহ মুসলীম]