ইমাম বুখারীর বাবা ও মা দুইজনেই অন্তন্ত
ধার্মিক ও মুত্তাকী মানুষ ছিলেন। ইমাম বুখারী রহঃ ইয়াতিম ছিলেন, ছোট থাকতেই তার বাবা মারা যায়। তার বাবা মৃত্যুর পূর্বে সন্তানদের জন্য
খুব বেশি কিছু রেখে যেতে পারেন নি। কিন্তু সামান্য যাকিছু রেখে যান, সেই ব্যপারে তিনি বলেন, আমি আমার সন্তানদের জন্য এই
পূজি রেখে যাচ্ছি যে আমি জীবনে চলার সময় তাক্বওয়া অর্জন করার চেষ্ট করেছি, আর যা কিছু রেখে যাচ্ছি সেখানে হারাম কোন সম্পদতো দূরের কথা, সন্দেহজনক কোন কিছু রেখে যাইনি। একবার ছোটবেলায় কি একটা অসুখের কারণে ইমাম
বুখারী রহঃ এর দুইচোখ একেবারে অন্ধ হয়ে যায়। তার মাও (রহঃ) ছিলেন একজন অত্যন্ত
নেককার, ধার্মিক মহিলা। তিনি ইমাম বুখারীকে নিয়ে খুব চিন্তায়
পড়েন, একেতো গরিব ঘরের ইয়াতীম ছেলে, তার
উপরে যদি অন্ধ হয়, এই ছেলে বড় হয়ে কি করে খাবে? তিনি রাত দিন কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে দুয়া করেন, আল্লাহ্ যেনো তার ছেলের দুই চোখ ভালো করে দেন। একদিন তাহাজ্জুদের নামায
পড়ে ইমাম বুখারীর মা আল্লাহর কাছে দুয়া করছিলেন আর এমন সময় ইমাম বুখারী রহঃ ঘুম
থেকে উঠে বলেন, আল্লাহ্ তার দুই চোখ ভালো করে দিয়েছেন।
আল্লাহু আকবর, আল্লাহ্ এইভাবে দুঃখের দিনে তাঁর প্রিয়
বান্দা ও বান্দীদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, ঠিক সেইভাবে
যেইভাবে তিনি মৃত গাছের ডাল থেকে গাছ বের করে আনেন। কিন্তু তার জন্য দরকার আল্লাহর
নৈকট্য ও ভালোবাসা অর্জন করা। আমরা অনেকেই অভিযোগ করি, আল্লাহ্
কেনো আমাদের দুয়া কবুল করেন না। দুয়া কবুল না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে তাঁর পূর্বে আসলে আমাদের নিজেদের দিকেও একটু লক্ষ্য করা প্রয়োজন,
আমরা কতটুকু ঈমান, ইখলাসের সাথে আল্লাহর কাছে
চাইতে পারছি, আমরা ইতিমধ্যে যাই পেয়েছি তার জন্য কতটুকু
শুকরিয়া আদায় করতে পেরেছি, আল্লাহর প্রতি কতটুকু আনুগত্যের
মাধ্যমে নিজেদেরকে আল্লাহর গোলাম বানাতে পেরেছি?
আল্লাহ্ আমাদের সককলেই মাফ করুন, এবং তাঁর নিজ রহমতকে উসীলা করে আমাদেরকে কবুল করে নিন, আমিন।
বিঃদ্রঃ সন্তানের আমল-আখলাক অনেক
ক্ষেত্রেই পিতা-মাতার উপরে নির্ভরশীল। খারাপ গাছ থেকে ভালো ফসল আশা করা যায়না। তাই
নেককার সন্তাত পেতে হলে বিয়ের পূর্বে বা পরে নিজের ও সংগি/সংগিনীর দিকে লক্ষ্য
রাখুন।