গতকালকে আমি লিখেছিলাম,
“সরকারী দলের লোক হোক, আর বিরোধী দলের লোক হোক,
রাজনীতির নামে যারাই পেট্রোল বোমা মেরে নিরীহ মানুষ পুড়ায়, তাদের প্রতি আল্লাহর লানত পড়ুক, আল্লাহ্ তাদেরকে
কঠিন শাস্তি দিন।”
আমাদের সেই পোস্টে একজন মন্তব্য করেছেন,
“রাসূল স. কি জুলুমবাজ এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে বলেননি? আর এতে মানুষ মরবেই, কারন এখন ফাঁকা মাঠে সংগ্রাম হয না। হয় রাস্তায়।”
বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ লোক নিজেদের
মুসলমান বলে দাবী করে। বেঁচে থাকার তাগিদে এই মানুষগুলোর কেউ অফিস-আদালতে, কেউ
স্কুল-কলেজে, কেউবা জরুরী চিকিতসার জন্য হাসপাতালে যায়। এখন আমি যদি ক্ষমতায় যেতে না
পেরে, সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানোর জন্য অথবা, জুলুম-অত্যাচার করে, টাকার
লোভে দেশকে দেশের শত্রুদের কাছে বিক্রি করে দিয়েও নিজের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার
জন্য পেট্রোল বোমা মেরে নিরীহ মানুষ পুড়াই, টিভি ক্যামেরার সামনে সাপের মতো পিটিয়ে
নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করি, তাহলে আমি নিজেকে কতবড় মুসলমান বলে মনে করতে পারি?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“সে-ই প্রকৃত মুসলমান, যার জিহবা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” [সহিহ বুখারি]
মানুষের মাঝে এইরকম লোক যারা নিজেরা জমীনে
ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়, কিন্তু তারা দাবী করে তারা হচ্ছে শান্তি স্থাপনকারী, এটা আসলে
মুনাফেক লোকদের চরিত্র।
মহান আল্লাহ্ তাআ’লা বলেন,
“আর যখন তাদেরকে (মুনাফেকদেরকে) বলা হয় যে, তোমরা
দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে,
আমরাই হচ্ছি শান্তি স্থাপনকারী। জেনে রাখো,
প্রকৃতপক্ষে তারাই হচ্ছে হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা সেটা
বুঝতে পারেনা”
সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১১-১২।
উল্লেখ্য, মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্ত “খারেজী” দলের লোকদের চরিত্রের মাঝেও নিকৃষ্ট এই
চরিত্র দেখা যায়। তারা ইসলাম কায়েমের নামে, জিহাদের নাম দিয়ে অন্যায়ভাবে রক্তপাত
করে, নিজেরা মরে অন্যদেরকে মারে, এইভাবে তারা ইসলাম বিরোধী, ধ্বংসাত্মক পথ বেছে
নিয়ে অন্যায় যুদ্ধ করে, মানুষ মারে আর করে জান্নাতে যাবে!!?
মহান আল্লাহ্ তাআ’লা বলেন,
“আর এমন কিছু লোক রযেছে যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত
করবে। আর তারা সাক্ষ্য স্থাপন করে আল্লাহকে নিজের মনের কথার ব্যাপারে। প্রকৃতপক্ষে
তারা অত্যন্ত ঝগড়াটে লোক। আর তারা যখন ফিরে যায়, তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে
অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ ফাসাদ ও
দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না। আর যখন তাকে বলা হয় যে, আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার পাপ তাকে অহঙ্কারে উদ্বুদ্ধ
করে। সুতরাং তার জন্যে জাহান্নামই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হচ্ছে অত্যন্ত নিকৃষ্ট
আবাসস্থল।”
সুরা আল-বাক্বারাহঃ ২০৪-২০৬।
শয়তান এদের বিবেককে নষ্ট করে ফেলেছে, এদের
কোন একজনের বাবা-মা বা ছেলে-মেয়েকে অন্য কেউ যদি পুড়িয়ে মারে, তখন বুঝবে মানুষরূপী
এই জানোয়ারগুলো, স্বজন হারানোর বেদনা।
সর্বশেষ, গণতন্ত্র একটি শিরকি মতবাদ, এই
শিরকি ব্যবস্থাকে মেনে নেওয়ার কারণে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অনুসারী লোকেরা
যদিও নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবী করেও, কিন্তু আচার-আচরণে তারা মুশরেকদের মতোই!