শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৪

“ঘরে বসা থাকা”

ঘরে বসা থাকা

পাশ্চাত্য উন্মুক্ত সমাজ ব্যবস্থার ধোঁকায় পড়ে ঘরে অবস্থান করা অনেক মুসলিম নারীর জন্য ডিজগাস্টিং (বিরক্তিকর) ব্যপার হয়ে গেছে, অথচ আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা এর মাঝেই তাদের সম্মান ও নিরাপত্তা রেখেছেন!
রাসুল সাঃ বলেছেন, একজন নারী যখন বাইরে যায় শয়তান তখন তাদের দিকে কুদৃষ্টি দেয় (তাদেরকে বিপথগামী করার জন্য এবং তাদেরকে দিয়ে পুরুষদেরকে ফেতনায় ফেলার জন্য)।

নারীদের পুরোটাই হচ্ছে আওরাহ বা সতর (শরীরের যে অংশ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক), যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে চোখ তুলে দেখে। নারী ঘরের মধ্যে অবস্থানকালেই আল্লাহর বেশি নৈকট্য প্রাপ্ত থাকে।
তিরমিজি ও ইবনে হিব্বান।

ইসলামে নারীরা বাইরে কাজ করতে পারে, যদি তাদের সেই কাজ বা জীবিকা অর্জন করার প্রয়োজনীয়তা থাকে। আর নয়তো, ঘরই হচ্ছে নারীদের প্রকৃত অবস্থান। সংসার দেখাশোনা করা, সন্তান লালন-পালন করা, এটা ঘরে বসে থাকা নয়, যেমনটা বর্তমান যুগের অজ্ঞ মুসলমান ও কাফেররা মনে করে থাকে। বরং, ইসলামের দৃষ্টিতে নারীদের জন্য এটাই সবচাইতে মহান জীবিকা। কারণ একজন মানুষ যতই বিত্তশালী হোক না কেন, একটা সমাজ যতই উন্নত হোক না কেনো, পরিবারে শান্তি না থাকলে, সন্তান মানুষ না হলে ব্যক্তি জীবনে যেমন অশান্তির আগুন জ্বলে উঠবে, তেমনি ভবিষ্যত প্রজন্ম হবে শিক্ষা বর্জিত অমানুষ, যা বর্তমান আধুনিক সমাজে খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। সেইজন্য দ্বীনি বোনদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘরে অবস্থান করা এবং সংসারের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখাকে ঘরে বসা থাকা বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবেনা। বরং, এটা আমাদের রব্বের নির্দেশ পালন এবং নারীদের জন্য সর্বোত্তম পেশা। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,

আর তোমরা গৃহে অবস্থান করবে, জাহেলিয়াতের (মূর্খতা যুগের) মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। তোমরা নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে।
সুরা আল-আহজাবঃ ৩৩।

বিঃদ্রঃ উপরের বক্তব্যের অর্থ এইনা যে, এমন কোন নারী যার বাবা নেই তাকেই পরিবার দেখাশোনা করতে হয় তাঁর জন্য #হালাল চাকরি করা অন্যায়। বরং তিনি যদি পর্দা রক্ষা করে হালাল জীবিকা অর্জন করেন এটা তাঁর জন্য কল্যান আর আল্লাহ একেকজনকে একেকভাবে পরীক্ষা করেন। সুতরাং, প্রত্যেকটা বিষয়ে ইসলামের আলাদা আলাদা বক্তব্য থাকে, সবাই নিজ নিজ অবস্থান অনুযায়ী সঠিক ইসলামী হুকুম আহকাম জেনে সেই অনুযায়ী আমল করবেন।

নারীরা কি বাইরে কাজ করতে পারবে?

আল্লামাহ, শায়খ সালেহ আল-ফাওজান হাফিজাহুল্লাহ বলেনঃ
নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করার জন্য ৩টি শর্তঃ
১. কাজ করা বা অর্থ উপার্জন করার প্রয়োজন রয়েছে তাহলেই শুধুমাত্র কাজ করবে।
২. কাজ করা নারীর জন্য দ্বিতীয় প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে, সংসার কাজের থেকে বেশি প্রাধান্য পাবে। ( এই হিসাবে টাইম পাস করার জন্য, নিজের পায়ে দাঁড়ানো বা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য, ডিগ্রীকে কাজে লাগানো এইগুলো কোন শরীয়তি কোন ওযর নয়, নারীদের ঘর ছেড়ে বাইরে কাজ করার)
৩. নারীর কাজের ক্ষেত্রে কোন পুরুষের উপস্থিতি না থাকা।অর্থাৎ, নারী ও পুরুষের কাজের পরিবেশ আলাদা হওয়া।

______________________