সৌদি আরবে সালাতের (নামাজের) সময় হলে ৫ মিনিট আগে থেকে “হাইয়ার” (সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ
কাজে বাধাদানকারী সংস্থা, ইসলামিক পুলিশ) লোকেরা গাড়ীতে করে
এসে মাইকিং করে যায়,
সালাহ সালাহ আস সালাহ ইয়া আবদুল্লাহ... সালাহ...
তারপরে, আরেক দল আসে, চেক করতে নামাজের সময় কেউ দোকানপাট/ অফিস খোলা রাখল কিনা!
সাউদিতে নামাজের সময় সকল দোকান, কোম্পানি বন্ধ
রাখতে হয়,
এটা আইনে লিপিবদ্ধ আছে। কেউ খোলা রাখলে তার বিরুদ্ধে কঠোর
ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যদিও কেউ খোলা রাখেনা, এটা সংস্কৃতির একটা অংশ হয়ে গেছে। বলা চলে, সৌদি আরবের এমন
একটি সমাজ আছে যেখানে রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক ভাবে সালাত কায়েম আছে।
সৌদি আরবে এই আইন ২/১ দিনে গড়ে উঠেনি! এর পিছনে মুজাদ্দিদ ইমাম মুহাম্মাদ বিন
আব্দুল ওয়াহাব (রাহঃ) থেকে শুরু আজকের উলামারা পর্যন্ত মানুষ কে নামাজের হেফাজতের
জন্য,
বেনামাজির বিধান, নামাজের
গুরুত্ব ইত্যাদির ব্যাপারে ওয়াজ নাসিহাত এবং নামাজী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মেহনত করে যাচ্ছেন! অতঃপর সাউদিতে এটা এখন এখানে সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে যে
নামাজের সময় সকল কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু আইন করেই ক্ষান্ত হয়নি প্রশাসন!
কেননা জোর জবস্তি করে মানুষের দেহে প্রভাব বিস্তার করা যায় কিন্তু মানুষের অন্তরকে
শাসন করা যায় না! তাই তো আল্লাহপাক নাবী মুহাম্মাদ (সাঃ) কে ইসলামের দাওয়াতের
নীতিমালার পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন,
ﻓَﺬَﻛِّﺮْ
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺃَﻧﺖَ
ﻣُﺬَﻛِّﺮٌ
ﻟَّﺴْﺖَ
ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢ ﺑِﻤُﺼَﻴْﻄِﺮٍ
অতএব,
আপনি উপদেশ দিন, আপনি তো কেবল
একজন উপদেশদাতা মাত্র, আপনি তাদের উপরে শাসক নন!
(যে তাঁদের কে পিটিয়ে বাধ্যকরে হক কে কবুল করাবেন)
[সুরা গাশিয়াহ: ২১-২২]
কোন 'আইন'
সাফল্যর মুখ দেখে তখনই যখন সমাজের মানুষ ঐ আইন কে শ্রধার চোখে দেখে মেনে
নেয়, কিন্তু বোঝা হিসেবে দেখলে ঐ আইন সমাজে কখনো সাফল্যর মুখে দেখে না!
যেমন,
তালেবান দের শাসন আমলে যুবকদের দাঁড়ী রাখা বাধ্যতামূলক ছিল!
দাঁড়ী বিহীন কেউকে দেখলে ৭০ দিনের জেল দিত! যখন তালেবানরা ক্ষমতা থেকে চলে গেছে
তখন সেলুনে লাইন লেগেছে গেছে দাঁড়ী কামানোর!
আমাদের বাংলাদেশে যদি রাতারাতি সৌদি আরবের মতো এই আইন চালু করে দেয় যে, আগামীকাল থেকে নামাজ চলাকালীন সময়ে সমস্ত কিছু বন্ধ রাখতে হবে, মেয়েদের বোরকা পড়া ব্যতীত বাহিরে বের হলে শাস্তি দেওয়া হবে! তাহলে বলুন, এই আইন কি আদৌ সাফল্যর মুখ দেখবে? এইসব
আইন করতে হলে প্রয়োজন সমাজে প্রচুর ভাবে ইসলামের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া
এবং আলেম উলামাদের ইখলাছের সহিত মেহনত করা।
শাইখ সাইফুদ্দিন বেলাল আমাদের সাথে এক
অন্তরঙ্গ আলাপে একটি কথা বলেছিলেন যা আমারএখনো মনে আছে, “কাউকে কোন কাজ ভালো মতো বুঝিয়ে না দিয়ে তাকে ঐ কাজের দায়িত্বশীল করে দেওয়া বড়
অন্যায়!”
---collected from জনৈক সৌদি প্রবাসী ভাই