রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৪

জিনা-ব্যভিচার সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর

জিনা-ব্যভিচার সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ
[প্রশ্ন নং ১৮]
আমাকে একটি বিষয় খুবই উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করছে, তাহলো আমি এক মহিলার সাথে ব্যভিচার করি। এখন কিভাবে তাওবা করবো?
অন্য একজন প্রশ্ন করেছেন, আমি বিদেশে গিয়ে কুকর্মে লিপ্ত হই। আমার দ্বারা মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এখন কি সন্তানটি আমার হবে এবং তাকে কি আমি সন্তানের জন্য খরচা-পাতি পাঠাবো?
উত্তর: অশ্লীল কাজ সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নমালা আসছে যার জন্য মুসলমানদের উপর জরুরী হয়ে পড়েছে বিষয়টির উপর গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করার এবং কুরআন হাদীস মোতাবেক নিজেদের সংশোধন করার এবং বিশেষ করে দৃষ্টি সংযত করার, নির্জন সাক্ষাৎ না করার এবং বেগানা মহিলাদের সাথে মুসাফাহা না করার আর পরিপূর্ণ শরয়ী পর্দা রক্ষা করে চলার। মেলামেশার বিপজ্জনকতা উপলব্ধি করা এবং কাফেরদের দেশে ভ্রমণে না যাওয়া। মুসলিম পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষা করে চলা, অল্প বয়সেই বিয়ে করা এবং এ ব্যাপারটি কঠোর না করে ফেলা।
যে ব্যক্তি কুকর্ম করেছে সেটি এ দু'অবস্থার বাইরে নয়:
১. হয়তো সে জোরপূর্বক জেনা করেছে এক্ষেত্রে তাকে মহরে মিস্‌ল্‌ প্রদান করতে হবে, তার যে ক্ষতি সাধন করেছে তা পূরণ করার লক্ষ্যে। সেই সাথে তাকে খালেস তাওবা করতে হবে এবং বিষয়টি যদি হাকেম বা বিচারক পর্যন্ত (ইসলামী বিচারক) গড়ায় তাহলে তার উপর হদ (শরয়ী শাস্তি বিধান) কায়েম করতে হবে। (বিস্তারিত দেখুন মাদারেজুস সালেকীন ১/৩৬৬)
২. উক্ত মহিলার সম্মতিতেই তার সাথে ব্যভিচার করেছে। এক্ষেত্রে তাকে শুধুমাত্র তাওবা করতে হবে। তার সাথে কখনো সন্তানকে সম্পৃক্ত করা হবে না এবং তাকে খরচও দিতে হবে না। কেননা সন্তান পরিচিত হবে মায়ের সাথে, কোনভাবেই জেনাকারীর সাথে সন্তান সম্পৃক্ত বা পরিচিত হবে না।
[প্রশ্ন নং ১৯]
আমার দ্বারা কুকর্ম সম্পাদিত হয়েছে। এজন্য আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি সে মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হয়েছি। এটা বেশ কয়েক বছর পূর্বের ঘটনা। আমরা উভয়ে খালেস তাওবা করেছি। এখন আমাদের কর্তব্য কি?
উত্তর: যখন দু'জনের পক্ষ থেকেই তাওবা হয়েছে এজন্য আপনাদের উভয়কে বিবাহ বন্ধনটা নতুন করে নিতে হবে শরিয়তের শর্ত মোতাবেক ওলী, সাক্ষীর উপস্থিতিতে (যদি এর আগে শরীয়তের শর্ত মোতাবেক বিবাহ না হয়ে থাকে তবেই)। এজন্য জরুরী নয় যে, কোর্টে গিয়ে হাজির হতে হবে বরং বাসার মধ্যে হলেই যথেষ্ট হবে।
[প্রশ্ন নং ২০]
একজন মহিলা বলে, সে এক নেককার লোকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সে বিবাহের পূর্বে এমন কিছু কাজ করেছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। এখন তার মনে বিষয়টি সর্বদা পীড়া দিচ্ছে। এখন তার প্রশ্ন, সে কি তার স্বামীকে পূর্বে যা কিছু ঘটেছে তা জানাবে?
উত্তর: স্বামী স্ত্রীর উভয়েরই কেউ অপরকে জানান ওয়াজিব নয় যে, অতীতে সে কি করেছে। কেউ যদি এসব পঙ্কিলতার দ্বারা পরীক্ষিত হয়ে থাকে তাহলে সে যেন তা আল্লাহর ওয়াস্তে গোপন করে। তার জন্য খালেস তাওবাই যথেষ্ট।
তবে কেউ যদি কুমারী মেয়েকে বিবাহ করে অতঃপর প্রকাশিত হয় যে, মেয়েটি প্রকৃত কুমারী নয়, অতীতে অপকর্ম করার কারণে, তাহলে সে যে মোহর দিয়েছে তা ফেরত নিয়ে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে। আর যদি সে দেখে যে, সে তাওবা করেছে যার ফলে আল্লাহ তার দোষ গোপন রেখেছেন তাহলে যদি তাকে দাম্পত্যে রেখে দেয় তাহলে অবশ্যই মহান আল্লাহ কর্তৃক নেকী ও সোয়াবের ভাগী হবে।
শায়খ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদের লেখা অত্যন্ত উপকারী বই, যা সকলের পড়া উচিতঃ
“আমি ‪#‎তাওবা‬ করতে চাই কিন্তু...”
তোওবা কি, তোওবা কিভাবে করতে হবে, কিভাবে বুঝবো আমার তোওবা কবুল হয়েছে কিনা, এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাপ যে করে ফেলেছে সে কিভাবে তোওবা করবে – তোওবা সংক্রান্ত এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য এই বইটা অবশ্যই পড়বেন।http://bit.ly/1tdTuB8