শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪

“নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতি একই”

নারী-পুরুষের নামাযের পদ্ধতি একই

পুরুষ ও মহিলার নামাযের নিয়ম বা পদ্ধতি একই রকম। সুতরাং মহিলারাও একই তরীকায় নামায পড়বে, যেইরূ পুরুষেরা নামায পড়ে থাকে। কারণ, (নারী-পুরুষ উভয় জাতির) উম্মতকে সম্বোধন করে রসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমরা ঠিক সেইভাবে নামায পড়, যেইভাবে আমাকে নামায পড়তে দেখেছ।
সহীহ বুখারী, মুসলিম, মিশকাতঃ ৬৮৩নং।  
আর উভয়ের নামায পৃথক হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীলও নেই।

সুতরাং যে আদেশ শরীয়ত পুরুষদেরকে করেছে, সে আদেশ মহিলাদের জন্যও এবং যে সাধারণ আদেশ মহিলাদেরকে করেছে তাও পুরুষদের ক্ষেত্রে পালনীয় -যদি বিশেষ হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার দলীল না থাকে। যেমন, যারা সতী মহিলাদের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে, অতঃপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদের জন্য শাস্তি হল ৮০ কোড়া---। (কুরআন মাজীদ ২৪/৪) পরন্তু যদি কেউ কোন সৎ পুরুষকে অনুরুপ অপবাদ দেয়, তবে তার জন্যও ঐ একই শাস্তি প্রযোজ্য।

সুতরাং মহিলারাও তাদের নামাযে পুরুষদের মতই দুই হাত তুলবে, পিঠ লম্বা করে রুকূ করবে, সিজদায় জানু হতে পেট ও পায়ের রলাকে দূরে রেখে পিঠ সোজা করে সিজদাহ করবে। তাশাহ্‌হুদেও সেইরুপ বসবে যেইরুপ পুরুষেরা বসে। উম্মে দারদা (রাঃ) তাঁর নামাযে পুরুষের মতই বসতেন। আর তিনি একজন ফকীহ্‌ (বিদ্বান) ছিলেন।
ইমাম বুখারী রহঃ রচিত আত্‌-তারীখুস স্বাগীরঃ ৯৫পৃ, ইমাম ইবনে হাজার রহঃ রচিত সহিহ বুখারীর ব্যখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীঃ ২/৩৫৫।
আর মহিলাদের জড়োসড়ো হয়ে সিজদাহ করার ব্যাপারে কোন হাদীস সহীহ নেই।
ইমাম নাসিরউদ্দিন আলবানী রহঃ এর সিলসিলাহ যায়ীফাহঃ ২৬৫২ নং।  
এজন্যই ইমাম ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ বলেন,
নামাযে মহিলারা ঠিক তাই করবে, যেইরূপ পুরুষেরা করে থাকে।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ১৮৯পৃ:।

পক্ষান্তরে দলীলের ভিত্তিতেই নামাযের কিছু ব্যাপারে মহিলারা পুরুষদের থেকে ভিন্নরুপ আমল করে থাকে। যেমন:-

১. বেগানা পুরুষ আশে-পাশে থাকলে (জেহরী নামাযে) মহিলা সশব্দে কুরআন পড়বে না। (আলমুমতে, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৩/৩০৪) যেমন সে পূর্ণাঙ্গ পর্দার সাথে নামায পড়বে। তাছাড়া একাকিনী হলেও তার লেবাসে বিভিন্ন পার্থক্য আছে।

২. মহিলা মহিলাদের ইমামতি করলে পুরুষদের মত সামনে না দাঁড়িয়ে কাতারের মাঝে দাঁড়াবে।

৩. ইমামের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মহিলা পুরুষের মত সুবহা-নাল্লাহ্‌ না বলে হাততালি দেবে।

৪. মহিলা মাথার চুল বেঁধে নামায পড়তে পারে, কিন্তু (লম্বা চুল হলে) পুরুষ তা পারে না।

. অনেক মহিলা আছে, যারা মসজিদে বা বাড়িতে পুরুষদের নামায পড়া না হলে নামায পড়ে না, এটা ভুল। আযান হলে বা নামাযের সময় হলে আওয়াল ওয়াক্তেই নামায পড়া মহিলারদের জন্য কর্তব্য।
মুত্বাসাঃ ১৮৮-১৮৯পৃষ্ঠা।


রচয়িতা/ সঙ্কলকঃ শায়খ আবদুল হামীদ মাদানী ফাইযী।