প্রেম-ভালোবাসা, যিনা-ব্যভিচার ও পরকীয়া
১. যিনা কি?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন,
“কোন বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া চোখের যিনা, অশ্লীল
কথাবার্তা বলা জিহ্বার যিনা, অবৈধভাবে কাউকে স্পর্শ করা
হাতের যিনা, ব্যাভিচারের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাওয়া পায়ের যিনা,
খারাপ কথা শোনা কানের যিনা আর যিনার কল্পণা করা ও আকাংখা করা মনের
যিনা। অতঃপর লজ্জাস্থান একে পূর্ণতা দেয় অথবা অসম্পূর্ণ রেখে দেয়”। [সহীহ
আল-বুখারী, সহীহ আল-মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ,
সুনানে আন-নাসায়ী]
২. যিনা হারাম ও অত্যন্ত মন্দ কাজ
আল্লাহ তাআ’লা যিনাকে হারাম
ঘোষণা করে বলেছেন,
“তোমরা যিনার কাছেও যাবে না। কেননা তা অত্যন্ত নির্লজ্জ
এবং খারাপ কাজ।” [সুরা বনী-ইসরাঈলঃ ৩২]
৩. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহর দৃষ্টিতে শিরকের পর সবচাইতে বড় গুনাহ হচ্ছে এমন
কোন জরায়ুতে একফোটা বীর্য ফেলা, যা আল্লাহ তার জন্য হালাল করেন নি।” [সহীহ
বুখারী]
৪. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন,
“যিনাকারী যখন যিনা করে, সে তা ঈমানদার
অবস্থায় করে না।” [বুখারি ও মুসলিম]
৫. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন,
“জিনাকারী যখন যিনায় লিপ্ত থাকে, তখন
তার থেকে ঈমান উঠিয়ে নেওয়া হয় যা আকাশে মেঘের মতো ভাসতে থাকে।”
আবু দাউদ, হাদীস সহীহ, শায়খ আলবানি।
সে যখন যিনা থেকে ফিরে আসে তখন তার ঈমান ফেরত দেওয়া হয়।
৬. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন,
“কেয়ামতের লক্ষণ হচ্ছে মুসলমান সমাজের মধ্যেই
যিনা-ব্যভিচার ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে, এমনকি মানুষ পশুর মতোই
প্রকাশ্যে জিনাতে লিপ্ত হবে”
৭. শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহঃ) বলেন,
“ইশক বা প্রেম একটি মানসিক ব্যাধি। আর যখন তা প্রকট আকার
ধারণ করে তখন তা শরীরকেও প্রভাবিত করে। সে হিসেবে ইশক শরীরের জন্যও একটা ব্যাধি।
মস্তিষ্কের জন্যও তা ব্যাধি। এজন্যই বলা হয়েছে যে, ইশক একটা হৃদয়জাত
ব্যাধি। শরীরের ক্ষেত্রে এ ব্যাধির প্রকাশ ঘটে দুর্বলতা ও শরীর শুকিয়ে যাওয়ার
মাধ্যমে।”
তিনি আরও বলেন, “পরনারীর প্রেমে এমন
সব ফাসাদ রয়েছে যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেও গুনে শেষ করতে পারবে না। এটা এমন
ব্যাধিগুলোর একটি, যা মানুষের দ্বীনকে নষ্ট করে দেয়। মানুষের
বুদ্ধি-বিবেচনাকে নষ্ট করে দেয়, অতঃপর তা শরীরকেও নষ্ট করে।”
[মাজমুউল ফাতওয়াঃ ১০/১২৯-১৩২]